ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

শুরু হচ্ছে ‘পদাতিক’ যাত্রা

  • আপডেট সময় : ০১:১৪:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩
  • ১২৭ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন ডেস্ক: ভারতীয় বাংলা সিনেমার প্রয়াত চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন রূপে বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর ‘মুন্সিয়ানা’ দেখার অপেক্ষা ফুরোতে চলেছে। প্রেক্ষাগৃহে আসার আগে মৃণালের বায়োপিক ‘পদাতিক’ এর প্রিমিয়ার শো হচ্ছে ‘লন্ডন ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভালে’। এ খবর ফেইসবুকে জানিয়েছেন মৃণালের চরিত্রে অভিনয় করা চঞ্চল। দুটি ছবি পোস্ট করে চঞ্চল লিখেছেন, “শুরু হচ্ছে ‘পদাতিক’ যাত্রা। উপমহাদেশের স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেনের জীবনীভিত্তিক সিনেমায় “মৃণাল সেন” চরিত্রে অভিনয় করা ছিল আমার জন্য যেমন দুঃসাহসের, তেমনি গর্বের।“ সিনেমার নির্মাতা কলকাতার চলচ্চিত্রকার সৃজিত মুখার্জী এবং প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসানের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন চঞ্চল। সোশাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করেছেন সৃজিতও।
২৫ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের চারটি শহর লন্ডন, বার্মিংহাম, ম্যানচেস্টার ও লিডসে এই সিনে উৎসব চলবে। নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি জানিয়েছেন, উৎসবের শেষ দিন, অর্থাৎ ৪ নভেম্বর লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে ‘রিজেন্ট স্ট্রিট সিনেমা’য় ‘পদাতিক’ এর প্রদর্শনী হবে। এ বছর মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকী। তাকে (মৃণাল) শ্রদ্ধা জানাতেই প্রয়াত পরিচালকের জীবন, কর্ম ও সময়ের গল্প নিয়ে সৃজিত তৈরি করেছেন ‘পদাতিক’। আর মৃণাল হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন চঞ্চলকে। কেন চঞ্চল? এর উত্তরে সৃজিতের ভাষ্য, “প্রথমত দু’জনের মুখের মিল আছে। সেটা কাকতালীয়। কিন্তু মৃণাল সেনের মতই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো এবং সজাগ। তা ছাড়াও তার রাজনীতি চেতনা, যাপন এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের প্রচুর মিল পাওয়া যায়। সেটা কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু মিলটা আছে।’’ বায়োপিকে মৃণালের স্ত্রী গীতা সেনের চরিত্রে দেখা যাবে পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী মনামী ঘোষকে। সৃজিত এর আগে এ বায়োপিক ওয়েব সিরিজ আকারে আনতে চেয়েছিলেন। পরে সিদ্ধান্ত বদলে সিনেমা করেন। জানুয়ারিতে শুরু হয় ‘পদাতিক’ এর শুটিং। এই কাজে কয়েক মাস ধরে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা নিয়মিত যাতায়াত করেছেন চঞ্চল।
মাঝেমধ্যে শুটিংয়ের টুকরো টুকরো খবর সোশাল মিডিয়ায় শেয়ারও করেছেন। কখনও আবার ‘মৃণাল লুক’ প্রকাশ করে চমকে দিয়েছেন, বাড়িয়েছেন দর্শকের কৌতুহল আর আগ্রহ। চঞ্চল এও বলেছেন, মৃণাল লুকে নিজেকে দেখে নিজেই ধন্দে পড়েছেন তিনি। মৃণাল সেন একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক। ১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরের ঝিলটুলিতে তার জন্ম। ফরিদপুই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা। এরপর তিনি থিতু হন কলকাতায়। রুপালি জগতে নির্মাতা হিসেবে মৃণালের অভিষেক ঘটে ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ সিনেমায়। এরপরের দুই চলচ্চিত্র ‘নীল আকাশের নীচে’ ও ‘বাইশে শ্রাবণ’ তাকে এনে দেয় আন্তর্জাতিক পরিচিতি। ১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত ‘ভুবন সোম’। সেই সিনেমায় উৎপল দত্ত অভিনয় করেছিলেন। অনেকের মতে, এটাই মৃণাল সেনের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র। মৃণাল সেনের অন্যতম কাজ বলা হয় কলকাতা ট্রিলজি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৩ সালের মধ্যে মুক্তি পাওয়া ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘ক্যালকাটা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩)-ওই তিন সিনেমায় কলকাতার তখনকার ‘অস্থির’ সময়কে তুলে ধরেছিলেন তিনি। মধ্যবিত্ত শ্রেণির নীতিবোধকে তুলে ধরা মৃণালের প্রশংসিত দুটি সিনেমা ‘এক দিন প্রতিদিন’ (১৯৭৯) এবং ‘খারিজ’ (১৯৮২)। এছাড়া তার ‘মৃগয়া’, ‘আকালের সন্ধানে’ এবং ‘খ-হর’ সিনেমাটিও প্রশংসিত। ১৮টি সিনেমার জন্য তিনি পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তার ঝুলিতে গেছে ১২টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও। ২০০৫ সালে ভারতের চলচ্চিত্র বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার পান মৃণাল। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রয়াত হন এই নির্মাতা।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শুরু হচ্ছে ‘পদাতিক’ যাত্রা

আপডেট সময় : ০১:১৪:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩

বিনোদন ডেস্ক: ভারতীয় বাংলা সিনেমার প্রয়াত চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন রূপে বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর ‘মুন্সিয়ানা’ দেখার অপেক্ষা ফুরোতে চলেছে। প্রেক্ষাগৃহে আসার আগে মৃণালের বায়োপিক ‘পদাতিক’ এর প্রিমিয়ার শো হচ্ছে ‘লন্ডন ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভালে’। এ খবর ফেইসবুকে জানিয়েছেন মৃণালের চরিত্রে অভিনয় করা চঞ্চল। দুটি ছবি পোস্ট করে চঞ্চল লিখেছেন, “শুরু হচ্ছে ‘পদাতিক’ যাত্রা। উপমহাদেশের স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃণাল সেনের জীবনীভিত্তিক সিনেমায় “মৃণাল সেন” চরিত্রে অভিনয় করা ছিল আমার জন্য যেমন দুঃসাহসের, তেমনি গর্বের।“ সিনেমার নির্মাতা কলকাতার চলচ্চিত্রকার সৃজিত মুখার্জী এবং প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসানের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন চঞ্চল। সোশাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করেছেন সৃজিতও।
২৫ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের চারটি শহর লন্ডন, বার্মিংহাম, ম্যানচেস্টার ও লিডসে এই সিনে উৎসব চলবে। নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি জানিয়েছেন, উৎসবের শেষ দিন, অর্থাৎ ৪ নভেম্বর লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে ‘রিজেন্ট স্ট্রিট সিনেমা’য় ‘পদাতিক’ এর প্রদর্শনী হবে। এ বছর মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকী। তাকে (মৃণাল) শ্রদ্ধা জানাতেই প্রয়াত পরিচালকের জীবন, কর্ম ও সময়ের গল্প নিয়ে সৃজিত তৈরি করেছেন ‘পদাতিক’। আর মৃণাল হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন চঞ্চলকে। কেন চঞ্চল? এর উত্তরে সৃজিতের ভাষ্য, “প্রথমত দু’জনের মুখের মিল আছে। সেটা কাকতালীয়। কিন্তু মৃণাল সেনের মতই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো এবং সজাগ। তা ছাড়াও তার রাজনীতি চেতনা, যাপন এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের প্রচুর মিল পাওয়া যায়। সেটা কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু মিলটা আছে।’’ বায়োপিকে মৃণালের স্ত্রী গীতা সেনের চরিত্রে দেখা যাবে পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী মনামী ঘোষকে। সৃজিত এর আগে এ বায়োপিক ওয়েব সিরিজ আকারে আনতে চেয়েছিলেন। পরে সিদ্ধান্ত বদলে সিনেমা করেন। জানুয়ারিতে শুরু হয় ‘পদাতিক’ এর শুটিং। এই কাজে কয়েক মাস ধরে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা নিয়মিত যাতায়াত করেছেন চঞ্চল।
মাঝেমধ্যে শুটিংয়ের টুকরো টুকরো খবর সোশাল মিডিয়ায় শেয়ারও করেছেন। কখনও আবার ‘মৃণাল লুক’ প্রকাশ করে চমকে দিয়েছেন, বাড়িয়েছেন দর্শকের কৌতুহল আর আগ্রহ। চঞ্চল এও বলেছেন, মৃণাল লুকে নিজেকে দেখে নিজেই ধন্দে পড়েছেন তিনি। মৃণাল সেন একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক। ১৯২৩ সালের ১৪ মে বাংলাদেশের ফরিদপুরের ঝিলটুলিতে তার জন্ম। ফরিদপুই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা। এরপর তিনি থিতু হন কলকাতায়। রুপালি জগতে নির্মাতা হিসেবে মৃণালের অভিষেক ঘটে ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ সিনেমায়। এরপরের দুই চলচ্চিত্র ‘নীল আকাশের নীচে’ ও ‘বাইশে শ্রাবণ’ তাকে এনে দেয় আন্তর্জাতিক পরিচিতি। ১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত ‘ভুবন সোম’। সেই সিনেমায় উৎপল দত্ত অভিনয় করেছিলেন। অনেকের মতে, এটাই মৃণাল সেনের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র। মৃণাল সেনের অন্যতম কাজ বলা হয় কলকাতা ট্রিলজি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৩ সালের মধ্যে মুক্তি পাওয়া ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘ক্যালকাটা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩)-ওই তিন সিনেমায় কলকাতার তখনকার ‘অস্থির’ সময়কে তুলে ধরেছিলেন তিনি। মধ্যবিত্ত শ্রেণির নীতিবোধকে তুলে ধরা মৃণালের প্রশংসিত দুটি সিনেমা ‘এক দিন প্রতিদিন’ (১৯৭৯) এবং ‘খারিজ’ (১৯৮২)। এছাড়া তার ‘মৃগয়া’, ‘আকালের সন্ধানে’ এবং ‘খ-হর’ সিনেমাটিও প্রশংসিত। ১৮টি সিনেমার জন্য তিনি পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তার ঝুলিতে গেছে ১২টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও। ২০০৫ সালে ভারতের চলচ্চিত্র বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার পান মৃণাল। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রয়াত হন এই নির্মাতা।