ঢাকা ০৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে সরকার আইনের ক্ষমতাটি ব্যবহার করছে না: কায়সার কামাল

  • আপডেট সময় : ০২:১৭:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার সুযোগ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর ব্যাখ্যাকে রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর (খালেদা) অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল। তিনি বলেছেন, আইনের যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সেটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা। রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে সরকার আইনে দেওয়া ক্ষমতাটি ব্যবহার করছে না।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে নিজ কার্যালয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে কায়সার কামাল এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। এর আগে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনি সুযোগ নিয়ে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘আইনি বিষয়টি এখন অতীত ও পুরোপুরি বন্ধ। এখন একমাত্র পথ হচ্ছে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া। তিনি যদি দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান, সেটা তাঁর (খালেদা জিয়া) বিষয়; আমার নয়।’
আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই ব্রিফিংয়ে কথা বলেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল। আইনমন্ত্রী ব্যাখ্যাকে রাজনৈতিক ব্যাখ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় সুস্পষ্টভাবে আছে একজন বন্দী, যিনি দ-িতÑতাঁর সাজা মওকুফ, কমানো ও সাময়িকভাবে সাজা স্থগিত করা যায়। সেটি শর্তযুক্ত বা শর্তহীনও হতে পারে। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ওনারা শর্ত যুক্ত করে দিয়েছেন। ৪০১(৬) ধারায় সুস্পষ্ট বলা আছে যে, সরকার চাইলে যেকোনো সময় নির্দেশনা দিয়ে যেকোনো বন্দীর ক্ষেত্রে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সে জন্যই বলছি, এটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা হচ্ছে, আইনের ব্যাখ্যা হচ্ছে না।’
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) এবং ৪০১(৬) সুস্পষ্টভাবে সরকারকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্ষমতা দেওয়া আছে, উল্লেখ করে কায়সার কামাল বলেন, ‘এই ক্ষমতাটা ওনারা রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যবহার করছেন না। এখানেই হচ্ছে আমাদের আপত্তি।’
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কি নাÑএমন প্রশ্নে আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির আদেশে বের হননি। এখনো কিন্তু খালেদা জিয়া নির্বাহীর অধীনে আছেন। কেন নির্বাহীর অধীনে আছেন? কারণ শর্তযুক্ত মুক্তি, অর্থাৎ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও ব্যক্তিগত বিষয় বলেনÑসবকিছু কিন্তু সরকারের নিয়ন্ত্রণে। উনি চাইলেই কিন্তু একটা কিছু করতে পারেন না। অতএব নির্বাহী আদেশে আছে এবং ওনার সব দায়দায়িত্ব কিন্তু নির্বাহীকেই বহন করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য শর্ত দেওয়া হয় যে দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এই শর্তটা তুলে নিলেই হলো। অন্য কোনো বিষয় আমরা অ্যাড্রেস করতে চাচ্ছি না। আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ; খালেদা জিয়া দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী। ৃউনি যদি বিদেশে চিকিৎসার জন্য যান ও সুস্থ হন, উনি কি বিদেশে থাকবেন? জরুরি অবস্থার সময় যখন অন্য একজন বিদেশে চলে গেলেন। তখন খালেদা জিয়া কিন্তু দেশ ছাড়েন নাই। অতএব খালেদা জিয়ার রাজনীতির অভিধানে আপস, অনৈতিক ও অন্যায়ের কোনো শব্দ নেই। উনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সব সময়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকাÑএই টাকা এখনো ব্যাংকে গচ্ছিত আছে। তারপরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতে গেছেন। আদালত তাঁর সাজা ৫ বছর থেকে ১০ বছর করেছেন। উনি সর্বদাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে সরকার আইনের ক্ষমতাটি ব্যবহার করছে না: কায়সার কামাল

আপডেট সময় : ০২:১৭:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার সুযোগ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর ব্যাখ্যাকে রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর (খালেদা) অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল। তিনি বলেছেন, আইনের যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সেটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা। রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে সরকার আইনে দেওয়া ক্ষমতাটি ব্যবহার করছে না।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে নিজ কার্যালয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে কায়সার কামাল এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। এর আগে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনি সুযোগ নিয়ে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘আইনি বিষয়টি এখন অতীত ও পুরোপুরি বন্ধ। এখন একমাত্র পথ হচ্ছে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া। তিনি যদি দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান, সেটা তাঁর (খালেদা জিয়া) বিষয়; আমার নয়।’
আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই ব্রিফিংয়ে কথা বলেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল। আইনমন্ত্রী ব্যাখ্যাকে রাজনৈতিক ব্যাখ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় সুস্পষ্টভাবে আছে একজন বন্দী, যিনি দ-িতÑতাঁর সাজা মওকুফ, কমানো ও সাময়িকভাবে সাজা স্থগিত করা যায়। সেটি শর্তযুক্ত বা শর্তহীনও হতে পারে। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ওনারা শর্ত যুক্ত করে দিয়েছেন। ৪০১(৬) ধারায় সুস্পষ্ট বলা আছে যে, সরকার চাইলে যেকোনো সময় নির্দেশনা দিয়ে যেকোনো বন্দীর ক্ষেত্রে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সে জন্যই বলছি, এটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা হচ্ছে, আইনের ব্যাখ্যা হচ্ছে না।’
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) এবং ৪০১(৬) সুস্পষ্টভাবে সরকারকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্ষমতা দেওয়া আছে, উল্লেখ করে কায়সার কামাল বলেন, ‘এই ক্ষমতাটা ওনারা রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যবহার করছেন না। এখানেই হচ্ছে আমাদের আপত্তি।’
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কি নাÑএমন প্রশ্নে আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির আদেশে বের হননি। এখনো কিন্তু খালেদা জিয়া নির্বাহীর অধীনে আছেন। কেন নির্বাহীর অধীনে আছেন? কারণ শর্তযুক্ত মুক্তি, অর্থাৎ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও ব্যক্তিগত বিষয় বলেনÑসবকিছু কিন্তু সরকারের নিয়ন্ত্রণে। উনি চাইলেই কিন্তু একটা কিছু করতে পারেন না। অতএব নির্বাহী আদেশে আছে এবং ওনার সব দায়দায়িত্ব কিন্তু নির্বাহীকেই বহন করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য শর্ত দেওয়া হয় যে দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এই শর্তটা তুলে নিলেই হলো। অন্য কোনো বিষয় আমরা অ্যাড্রেস করতে চাচ্ছি না। আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ; খালেদা জিয়া দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী। ৃউনি যদি বিদেশে চিকিৎসার জন্য যান ও সুস্থ হন, উনি কি বিদেশে থাকবেন? জরুরি অবস্থার সময় যখন অন্য একজন বিদেশে চলে গেলেন। তখন খালেদা জিয়া কিন্তু দেশ ছাড়েন নাই। অতএব খালেদা জিয়ার রাজনীতির অভিধানে আপস, অনৈতিক ও অন্যায়ের কোনো শব্দ নেই। উনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সব সময়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকাÑএই টাকা এখনো ব্যাংকে গচ্ছিত আছে। তারপরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতে গেছেন। আদালত তাঁর সাজা ৫ বছর থেকে ১০ বছর করেছেন। উনি সর্বদাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’