স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: একেক মসলার রয়েছে একেক গুণ। কোনোটা দেহে তাপ বাড়ায়, আবার কোনোটা ব্যাক্টেরিয়া প্রতিরোধে কাজ করে। কিছু মসলা আবার শুধুই খাবারের স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়ায়। তবে লবঙ্গ এমন একটা মসলা যা খাবারে স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়ানোর পাশাপাশি নানান স্বাস্থ্যোপকারিতাও দেয়।
আঁশ সমৃদ্ধ: হজমক্রিয়া উন্নত ও নিয়মিত করতে পর্যাপ্ত আঁশ গ্রহণ করা জরুরি। ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মার্কিন পুষ্টিবিদ এমি গোরিন বলেন, “মসলা হিসেবে এতে আছে চমৎকার আঁশ। এক চা-চামচ লবঙ্গ প্রায় এক গ্রাম আঁশ সরবারহ করে।”
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: গোরিন জানান, লবঙ্গতে আছে খনিজ যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি বলেন, “লবঙ্গ ম্যাঙ্গানিজ নামক খনিজ সরবারহ করে যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।” রান্নায় এক চিমটি বা দুইটা লবঙ্গ যোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
ব্যাক্টেরিয়-রোধী উপাদান সমৃদ্ধ: মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী মাউথ ওয়াশ ব্যবহার বা খাবার খাওয়া জরুরি। লবঙ্গ খাওয়াও এক্ষেত্রে সমান কার্যকর। গোরিন বলেন, “লবঙ্গ তেলে আছে ব্যাকটেরিয়া-রোধী উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে লবঙ্গ, তুলসি ও টি ট্রি সমৃদ্ধ মাউথ ওয়াশ মুখের প্লাক ও ব্যাক্টেরিয়া দূর করে।”
দাঁতের ব্যথা কমাতে পারে: লবঙ্গে আছে ব্যথানাশক উপাদান ‘ইউজেনল’ যা প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক আর দাঁতের ব্যথা কমাতে চমৎকার কাজ করে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে- তীব্র ব্যথা, প্রদাহ, ক্ষত সারানো ও সংক্রমণরোধে লবঙ্গ উপকারী।
প্রদাহরোধী উপাদান: লবঙ্গের আরেকটি প্রধান গুণ হল এর প্রদাহরোধী উপাদান। লবঙ্গের তেল লোশন হিসেবে ব্যবহার করা বা চায়ে এর ব্যবহার প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
বয়সের ছাপ ধীর করে: লবঙ্গে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক রন্ধনশিল্পী, পুষ্টিবিদ সেরেনা পুন ব্যাখ্যা করেন, “এর প্রদাহরোধী উপাদান ‘এপিজেনেটিক কিউস’ এবং ‘মাইটোকন্ড্রিয়াল’ কার্যকলাপ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারে পাওয়া যায় যা দীর্ঘায়ু ও সুস্থ থাকতে প্রয়োজন।” তিনি স্মুদি, ভাত বা মিষ্টান্ন খাওয়ার আগে এক চিমটি লবঙ্গের গুঁড়া ছিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণের সহজ উপায়।
কফ দূর করতে: পুন বলেন, “আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র অনুযায়ী লবঙ্গ কফ দূর করে গলার পেশিতে আরাম প্রদান করে।” তাই তিনি লবঙ্গ না গিলে, চিবানোর কথা বলেন। এছাড়াও চায়ের সাথে লবঙ্গ ও মধু পানের পরামর্শ দেন তিনি।
ত্বকের সুস্থতা: পুনের মতে, ত্বকে সরাসরি লবঙ্গ ব্যবহার উপকারী। তিনি বলেন, “লবঙ্গ তেলের প্রদাহরোধী উপাদান ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। এত আছে ব্যাক্টেরিয়া-রোধী হওয়াতে দূর করে।”
হজম কাজে সহায়ক: হজমের সমস্যা দূর করতে লবঙ্গ উপকারী। পুন বলেন, “লবঙ্গ পেটে স্বস্তি দেয় এবং বমিভাব, গ্যাস ও বমি দূর করতে সহায়তা করে।” নিয়মিত এর সুবিধা পেতে, লবঙ্গ ও আদার তৈরি চা পান করা যেতে পারে।