ঢাকা ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ, উৎপাদন অর্ধেকে

  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩
  • ১৬৩ বার পড়া হয়েছে

নীলফামারী সংবাদদাতা: অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ থাকায় দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা ও দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা(কেলোকা) উৎপান নেমে এসেছে অর্ধেকে। এতে করে রেলওয়ে খাতে অস্বাভাবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের আশংকা। রেলওয়ে সূত্র জানায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মিটার গেজ ও ব্রডগেজ লাইনের রেলওয়ের ক্যারেজ ও ওয়াগন মেরামত হয়ে থাকে। এছাড়াও ১২ হাজার ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি হয় ওই কারখানায়। যা ব্যবহার হয় রেলওয়ে লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) যাত্রবাহী ক্যারেজ ও মালবাহী ওয়াগনে। কারখানাটি লোকবল কাঠামো হচ্ছে ২ হাজার ৮৫৯ জন। কিন্ত বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৭১৬ জন। রেলওয়ে কারখানাটি ২৯টি শপে (উপ-কারখানা) রয়েছে ছোট-বড় ৭৪০টি মেশিন। প্রতিটি মেশিন পরিচালনায় গড়ে ৪ জন জনবল প্রয়োজন। কিন্তু কোন কোন মেশিন পরিচালনায় একজনও শ্রমিক নেই। ফলে অনেক মেশিন অলস পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। অপরদিকে পার্বতীপুরের কেলোকায় লোকবল কাঠামো হচ্ছে ৫৫৯ জন। কিন্ত কর্মরত আছেন মাত্র ১৬৩ জন। ওই কারখানায় প্রতিমাসে দুইটি রেলের ইঞ্জিন মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত জুলাই মাসে তা একটিতে নেমে এসেছে। কেলোকার প্রধান নির্বাহী (সিইএক্স) রফিকুল ইসলাম জানান, গত ১ জুলাই থেকে টেমম্পরারি লেবার রিক্রুটমেন্ট (টিএলআর) অর্থাৎ অস্থায়ী শ্রমিকদের বসিয়ে দেওয়ার কারণে উৎপাদন কিছুটা কমেছে। এ কারখানায় ৯৩ জন অস্থায়ী শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। যারা নিয়মিত ১৬৩ জন শ্রমিককে সহযোগিতা দিয়ে আসছিলেন। এসব অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১৮ সালে। তখন থেকে প্রতিবছর তাদের নিয়োগ নবায়ন করা হতো। দীর্ঘদিন তাঁরা রেলওয়ে কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকায় দক্ষ হয়ে উঠেছেন। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান জানান, রেলওয়ে কারখানায় বর্তমানে ৭১৬ জন শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত আছেন। এনিয়ে কারখানার বিশাল কর্মযজ্ঞ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। কারখানাটি ৫০০ জন অস্থায়ী কর্মচারী ছিলো। উপরের নির্দেশে তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকবল না থাকলে অবশ্যই উৎপাদন ব্যাহত হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুত সংকটে কেটে যাবে। একটি সূত্র জানায়, অস্থায়ী শ্রমিক বসিয়ে দেওয়ায় ওই শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ট্রেন অবরোধের মতো শক্ত কর্মসূচি পালন করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন টিএলআর শ্রমিক বলেন, কাজ নেই মজুরি নেই এর ভিত্তিতে প্রতিদিন ৫০০ টাকা মজুরিতে আমরা কাজ করেছি। ২০১৮ সাল থেকে আমরা রেলের উন্নয়নে শ্রম দিয়ে আসছি। অথচ আমাদের নিয়মিত না করে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের পাঁয়তারা করছে কর্তৃপক্ষ। সারাদেশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৬ হাজার আউটসোর্সিং লেবার নেওয়া হবে। ওই শ্রমিকদের বেতন খাতে ২৬ কোটি টাকা অতিরিক্ত গচ্চা দিতে হবে। আর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি পাবে ৫ শতাংশ হারে কমিশন। ওই বিশাল অংকের টাকা গচ্চা না দিয়ে অস্থায়ী শ্রমিকদের নিয়মিত করা হলে অর্থের সাশ্রয় হবে এবং রেলওয়ে পাবে দক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ, উৎপাদন অর্ধেকে

আপডেট সময় : ০২:৫৪:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩

নীলফামারী সংবাদদাতা: অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ থাকায় দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা ও দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা(কেলোকা) উৎপান নেমে এসেছে অর্ধেকে। এতে করে রেলওয়ে খাতে অস্বাভাবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের আশংকা। রেলওয়ে সূত্র জানায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মিটার গেজ ও ব্রডগেজ লাইনের রেলওয়ের ক্যারেজ ও ওয়াগন মেরামত হয়ে থাকে। এছাড়াও ১২ হাজার ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি হয় ওই কারখানায়। যা ব্যবহার হয় রেলওয়ে লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) যাত্রবাহী ক্যারেজ ও মালবাহী ওয়াগনে। কারখানাটি লোকবল কাঠামো হচ্ছে ২ হাজার ৮৫৯ জন। কিন্ত বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৭১৬ জন। রেলওয়ে কারখানাটি ২৯টি শপে (উপ-কারখানা) রয়েছে ছোট-বড় ৭৪০টি মেশিন। প্রতিটি মেশিন পরিচালনায় গড়ে ৪ জন জনবল প্রয়োজন। কিন্তু কোন কোন মেশিন পরিচালনায় একজনও শ্রমিক নেই। ফলে অনেক মেশিন অলস পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। অপরদিকে পার্বতীপুরের কেলোকায় লোকবল কাঠামো হচ্ছে ৫৫৯ জন। কিন্ত কর্মরত আছেন মাত্র ১৬৩ জন। ওই কারখানায় প্রতিমাসে দুইটি রেলের ইঞ্জিন মেরামতের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত জুলাই মাসে তা একটিতে নেমে এসেছে। কেলোকার প্রধান নির্বাহী (সিইএক্স) রফিকুল ইসলাম জানান, গত ১ জুলাই থেকে টেমম্পরারি লেবার রিক্রুটমেন্ট (টিএলআর) অর্থাৎ অস্থায়ী শ্রমিকদের বসিয়ে দেওয়ার কারণে উৎপাদন কিছুটা কমেছে। এ কারখানায় ৯৩ জন অস্থায়ী শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। যারা নিয়মিত ১৬৩ জন শ্রমিককে সহযোগিতা দিয়ে আসছিলেন। এসব অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১৮ সালে। তখন থেকে প্রতিবছর তাদের নিয়োগ নবায়ন করা হতো। দীর্ঘদিন তাঁরা রেলওয়ে কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকায় দক্ষ হয়ে উঠেছেন। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান জানান, রেলওয়ে কারখানায় বর্তমানে ৭১৬ জন শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত আছেন। এনিয়ে কারখানার বিশাল কর্মযজ্ঞ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। কারখানাটি ৫০০ জন অস্থায়ী কর্মচারী ছিলো। উপরের নির্দেশে তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকবল না থাকলে অবশ্যই উৎপাদন ব্যাহত হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুত সংকটে কেটে যাবে। একটি সূত্র জানায়, অস্থায়ী শ্রমিক বসিয়ে দেওয়ায় ওই শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে ট্রেন অবরোধের মতো শক্ত কর্মসূচি পালন করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন টিএলআর শ্রমিক বলেন, কাজ নেই মজুরি নেই এর ভিত্তিতে প্রতিদিন ৫০০ টাকা মজুরিতে আমরা কাজ করেছি। ২০১৮ সাল থেকে আমরা রেলের উন্নয়নে শ্রম দিয়ে আসছি। অথচ আমাদের নিয়মিত না করে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের পাঁয়তারা করছে কর্তৃপক্ষ। সারাদেশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৬ হাজার আউটসোর্সিং লেবার নেওয়া হবে। ওই শ্রমিকদের বেতন খাতে ২৬ কোটি টাকা অতিরিক্ত গচ্চা দিতে হবে। আর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি পাবে ৫ শতাংশ হারে কমিশন। ওই বিশাল অংকের টাকা গচ্চা না দিয়ে অস্থায়ী শ্রমিকদের নিয়মিত করা হলে অর্থের সাশ্রয় হবে এবং রেলওয়ে পাবে দক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী।