ঢাকা ০২:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা কমছে যেসব কারণে

  • আপডেট সময় : ১০:৩৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩
  • ১০৬ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক:দেশে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর হার ক্রমান্বয়ে কমছে। গত দুই দশকের জনশুমারির তথ্য বলছে, ২০১১ সালের তুলনায় ২০২২ সালের জনশুমারিতে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ২৯ লাখের মতো কমেছে। অর্থাৎ প্রায় ৬ শতাংশ কমেছে। আর ২০০১ সালের জনশুমারির তুলনায় কমেছে ৪ শতাংশ।
জনশুমারিতে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু জনসংখ্যাকে ০ (জন্মের প্রথম দিন থেকে) থেকে ৪ বছর, ৫ থেকে ৯ এবং ১০ থেকে ১৪ বছর—তিনটি বয়স শ্রেণিতে ভাগ করা আছে। গত দুই দশকে আলাদাভাবে তিনটি বয়স শ্রেণিতেই শিশুর হার কমতে দেখা গেছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ দেশে দম্পতিদের সন্তান নেওয়ার হার আগের চেয়ে কমে যাওয়ায় ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর হার কমে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনা জরিপ ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে ০ থেকে (জন্মের প্রথম দিন থেকে) ১৪ বছর বয়সী, অর্থাৎ ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৯ শতাংশ। মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯০৯ জন। এর মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪ কোটি ৮৯ লাখের বেশি।
২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ। ২০০১ সালে তা ৩৯ শতাংশ ছিল। ২০১১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৭ লাখের বেশি এবং ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১৮ লাখের বেশি। আর ২০০১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৩ কোটির বেশি এবং ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৯ লাখের বেশি।
২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ। ২০০১ সালে তা ৩৯ শতাংশ ছিল। ২০১১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৭ লাখের বেশি এবং ১৫ বছর কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১৮ লাখের বেশি। আর ২০০১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৩ কোটির বেশি এবং ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৯ লাখের বেশি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন: জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি দেশের জনগোষ্ঠীতে শিশুমৃত্যুর হার কমলে দম্পতিরা সন্তান কম নেন। আর্থসামাজিক উন্নয়ন না হলে এটা হয় না। দেশ এখন বয়সভিত্তিক জনসংখ্যার সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। এখন নির্ভরশীল জনসংখ্যা, অর্থাৎ ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা কম এবং কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, একটা সময়ে দম্পতিরা অনেক বেশি সন্তান নিতেন। ওই সময় শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি থাকায় দম্পতিরা আশঙ্কায় ভুগতেন। তাঁরা সন্তান সংখ্যা বেশি নিতেন এই ভেবে যে, যে কটি টিকে থাকে! এখন সরকারের অনেক উন্নয়ন কর্মসূচি, সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণের নানা পদক্ষেপের কারণে শিশুমৃত্যু হার আগের চেয়ে কমেছে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, দেশ এখন জনমিতিক পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে। উচ্চ জন্মহার ও উচ্চ মৃত্যুহারের পরিবর্তে কম জন্মহার ও কম মৃত্যুহারের দিকে এখন দেশ। আর্থসামাজিক উন্নয়ন হলে একটি দেশে এ ধরনের প্রক্রিয়া দেখা যায়। এটা সর্বজনীন। শিক্ষা ও কর্মে অংশগ্রহণ বাড়লে একটি দম্পতি কম সন্তান নেওয়ার জন্য সচেতন হন।
১৯৭৫ সালে দেশে মোট প্রজনন হার (টিএফআর) ছিল ৬ দশমিক ৩। অর্থাৎ এক দম্পতি ৬টির বেশি সন্তান নিতেন। জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২ (বিডিএইচএস) প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে এখন টিএফআর ২ দশমিক ৩। চার বছর আগের জরিপের তুলনায় শিশুমৃত্যুর হার কমেছে।
প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ থেকে ৩১-এ নেমে এসেছে। প্রতি হাজার জীবিত জন্মে একদম ছোট শিশু (এক বছরের নিচে) মৃত্যুর সংখ্যা ৩৬ থেকে কমে ২৫ এবং নবজাতকের (জন্ম থেকে ২৮ দিন) মৃত্যু ২৭ থেকে কমে ২০-এ দাঁড়িয়েছে। সরকারের চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাতের কর্মসূচির (৪র্থ এইচপিএনএসপি) লক্ষ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যু কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে এবং নবজাতক মৃত্যু কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাছাকাছি গেছে।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) বাংলাদেশ কার্যালয়ের জনসংখ্যাবিষয়ক পরিকল্পনা ও গবেষণা বিভাগের প্রধান এম শহীদুল ইসলাম বলেন, দেশে টিএফআর কমে প্রতিস্থাপনযোগ্য প্রজনন হারের পর্যায়ে যাচ্ছে। টিএফআর কমার কারণেই শিশুর হার কমছে। তবে এভাবে শিশুর হার কমার পেছনে বিভিন্ন বিষয়ের প্রভাব থাকে। যেমন মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও শিক্ষার প্রসার হলে, নারীশিক্ষা বাড়লে, নারীরা কর্মক্ষেত্রে বেশি অংশ নিলে সন্তান নেওয়ার হার কমে।
এই কমে যাওয়াটা ইতিবাচক কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনমিতিক লভ্যাংশের (কর্মক্ষম জনসংখ্যা নির্ভরশীল জনসংখ্যার চেয়ে বেশি) দিক দিয়ে এটা ইতিবাচক। তবে যে-সংখ্যক শিশু রয়েছে, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে জরুরি। বিশেষ করে মেয়েশিশুরা যেন শিক্ষা থেকে ঝরে না পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে নদীভাঙন ও দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার মানুষ নিজ এলাকা ছেড়ে শহরমুখী হন। সেই সময় তাঁরা বেশির ভাগ সময় পরিবারের মেয়ে সদস্যটিকে বিয়ে দিয়ে এলাকা ছাড়েন। এতে বাল্যবিবাহ বাড়ে।
সচেতনতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে: পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য, শিক্ষা ও উদ্বুদ্ধকরণ (আইইএম) বিভাগের পরিচালক আবদুল লতিফ মোল্লা বলেন, আধুনিক এই সময়ে কে কয়টি সন্তান নেবে, সেটা চাপিয়ে দেওয়া যায় না বলে সরকার লোকজনকে সচেতন করার ওপর জোর দিচ্ছে। যাতে দম্পতিরা সচেতন হয়ে কম সন্তান নিয়ে শিশুর স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পুষ্টিতে নজর দেন। পাশাপাশি সরকার ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের প্রজনন স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন অধিকার বিষয়ে সচেতন করার ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফর: গুরুত্ব পাবে দক্ষ কর্মী পাঠানো ও বিনিয়োগ

১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা কমছে যেসব কারণে

আপডেট সময় : ১০:৩৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩

নারী ও শিশু ডেস্ক:দেশে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর হার ক্রমান্বয়ে কমছে। গত দুই দশকের জনশুমারির তথ্য বলছে, ২০১১ সালের তুলনায় ২০২২ সালের জনশুমারিতে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ২৯ লাখের মতো কমেছে। অর্থাৎ প্রায় ৬ শতাংশ কমেছে। আর ২০০১ সালের জনশুমারির তুলনায় কমেছে ৪ শতাংশ।
জনশুমারিতে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু জনসংখ্যাকে ০ (জন্মের প্রথম দিন থেকে) থেকে ৪ বছর, ৫ থেকে ৯ এবং ১০ থেকে ১৪ বছর—তিনটি বয়স শ্রেণিতে ভাগ করা আছে। গত দুই দশকে আলাদাভাবে তিনটি বয়স শ্রেণিতেই শিশুর হার কমতে দেখা গেছে।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ দেশে দম্পতিদের সন্তান নেওয়ার হার আগের চেয়ে কমে যাওয়ায় ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর হার কমে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারি ও গৃহগণনা জরিপ ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে ০ থেকে (জন্মের প্রথম দিন থেকে) ১৪ বছর বয়সী, অর্থাৎ ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৯ শতাংশ। মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯০৯ জন। এর মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪ কোটি ৮৯ লাখের বেশি।
২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ। ২০০১ সালে তা ৩৯ শতাংশ ছিল। ২০১১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৭ লাখের বেশি এবং ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১৮ লাখের বেশি। আর ২০০১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৩ কোটির বেশি এবং ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৯ লাখের বেশি।
২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ। ২০০১ সালে তা ৩৯ শতাংশ ছিল। ২০১১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৭ লাখের বেশি এবং ১৫ বছর কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১৮ লাখের বেশি। আর ২০০১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৩ কোটির বেশি এবং ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৯ লাখের বেশি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন: জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি দেশের জনগোষ্ঠীতে শিশুমৃত্যুর হার কমলে দম্পতিরা সন্তান কম নেন। আর্থসামাজিক উন্নয়ন না হলে এটা হয় না। দেশ এখন বয়সভিত্তিক জনসংখ্যার সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। এখন নির্ভরশীল জনসংখ্যা, অর্থাৎ ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা কম এবং কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, একটা সময়ে দম্পতিরা অনেক বেশি সন্তান নিতেন। ওই সময় শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি থাকায় দম্পতিরা আশঙ্কায় ভুগতেন। তাঁরা সন্তান সংখ্যা বেশি নিতেন এই ভেবে যে, যে কটি টিকে থাকে! এখন সরকারের অনেক উন্নয়ন কর্মসূচি, সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণের নানা পদক্ষেপের কারণে শিশুমৃত্যু হার আগের চেয়ে কমেছে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, দেশ এখন জনমিতিক পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে। উচ্চ জন্মহার ও উচ্চ মৃত্যুহারের পরিবর্তে কম জন্মহার ও কম মৃত্যুহারের দিকে এখন দেশ। আর্থসামাজিক উন্নয়ন হলে একটি দেশে এ ধরনের প্রক্রিয়া দেখা যায়। এটা সর্বজনীন। শিক্ষা ও কর্মে অংশগ্রহণ বাড়লে একটি দম্পতি কম সন্তান নেওয়ার জন্য সচেতন হন।
১৯৭৫ সালে দেশে মোট প্রজনন হার (টিএফআর) ছিল ৬ দশমিক ৩। অর্থাৎ এক দম্পতি ৬টির বেশি সন্তান নিতেন। জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২ (বিডিএইচএস) প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে এখন টিএফআর ২ দশমিক ৩। চার বছর আগের জরিপের তুলনায় শিশুমৃত্যুর হার কমেছে।
প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ৪৩ থেকে ৩১-এ নেমে এসেছে। প্রতি হাজার জীবিত জন্মে একদম ছোট শিশু (এক বছরের নিচে) মৃত্যুর সংখ্যা ৩৬ থেকে কমে ২৫ এবং নবজাতকের (জন্ম থেকে ২৮ দিন) মৃত্যু ২৭ থেকে কমে ২০-এ দাঁড়িয়েছে। সরকারের চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাতের কর্মসূচির (৪র্থ এইচপিএনএসপি) লক্ষ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যু কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে এবং নবজাতক মৃত্যু কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাছাকাছি গেছে।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) বাংলাদেশ কার্যালয়ের জনসংখ্যাবিষয়ক পরিকল্পনা ও গবেষণা বিভাগের প্রধান এম শহীদুল ইসলাম বলেন, দেশে টিএফআর কমে প্রতিস্থাপনযোগ্য প্রজনন হারের পর্যায়ে যাচ্ছে। টিএফআর কমার কারণেই শিশুর হার কমছে। তবে এভাবে শিশুর হার কমার পেছনে বিভিন্ন বিষয়ের প্রভাব থাকে। যেমন মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও শিক্ষার প্রসার হলে, নারীশিক্ষা বাড়লে, নারীরা কর্মক্ষেত্রে বেশি অংশ নিলে সন্তান নেওয়ার হার কমে।
এই কমে যাওয়াটা ইতিবাচক কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনমিতিক লভ্যাংশের (কর্মক্ষম জনসংখ্যা নির্ভরশীল জনসংখ্যার চেয়ে বেশি) দিক দিয়ে এটা ইতিবাচক। তবে যে-সংখ্যক শিশু রয়েছে, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে জরুরি। বিশেষ করে মেয়েশিশুরা যেন শিক্ষা থেকে ঝরে না পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে নদীভাঙন ও দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার মানুষ নিজ এলাকা ছেড়ে শহরমুখী হন। সেই সময় তাঁরা বেশির ভাগ সময় পরিবারের মেয়ে সদস্যটিকে বিয়ে দিয়ে এলাকা ছাড়েন। এতে বাল্যবিবাহ বাড়ে।
সচেতনতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে: পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তথ্য, শিক্ষা ও উদ্বুদ্ধকরণ (আইইএম) বিভাগের পরিচালক আবদুল লতিফ মোল্লা বলেন, আধুনিক এই সময়ে কে কয়টি সন্তান নেবে, সেটা চাপিয়ে দেওয়া যায় না বলে সরকার লোকজনকে সচেতন করার ওপর জোর দিচ্ছে। যাতে দম্পতিরা সচেতন হয়ে কম সন্তান নিয়ে শিশুর স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পুষ্টিতে নজর দেন। পাশাপাশি সরকার ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের প্রজনন স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন অধিকার বিষয়ে সচেতন করার ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।