প্রত্যাশা ডেস্ক :কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে প্রবাহিত ঢল বা বানের পানি নেমে বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশে পূর্বাঞ্চলের তিন পার্বত্য জেলাসহ চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তত ৫ জেলা। চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটি, কক্সবাজার জেলার বিভিন্নস্থানে প্রচুরসংখ্যক ঘরবাড়ি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী। কার্যত জীবন যাপনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
বান্দরবান সংবাদদাতা জানান, কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বান্দরবান শহর প্লাবিত হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। রোববার রাত থেকে বিদ্যুতের পাশাপাশি নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলার সার্বিক দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তর জেলা প্রশাসক কার্যালয়, সদর উপজেলা কার্যালয়, ফায়ার সার্ভিস, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, চিফ জুডিসিয়াল কার্যালয়, নির্বাচন কমিশন অফিস, পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিসে হাঁটু পানিতে তলিয়ে আছে। সড়কে পানি ওঠায় রোববার সকাল থেকে বান্দরবান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ির পথে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া জেলা শহর থেকে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে বান্দরবান শহরের ৬০ ভাগ প্লাবিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সদর উপজেলায় ১৯২ দশমিক ৫ মিলিমিটার এবং লামায় ২২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মাতামুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ২২০ সেন্টিমিটার এবং সাঙ্গু নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৮১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার আট হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে পাহাড় ধসে প্রায় ৪৫০টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সাড়ে ৯ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। পাহাড় ধস নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাহাড় ধসে একজন রোহিঙ্গার প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন আরও ছয়জন। আহতদের মধ্যে দুজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে তারা আশঙ্কামুক্ত। এদিকে পাহাড়ি ঢলে ভেসে যাওয়া আলীকদম উপজেলা নয়াপাড়া ইউনিয়নের মো. মুছা (২২) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার রিংও পাড়ার বাসিন্দা মেমপই ম্রো (৩০) ঢলে ভেসে নিখোঁজ রয়েছেন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ফায়ার সার্ভিসসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে এরই মধ্যে ২-৩ ফুট পানি উঠেছে। এ ছাড়া পুলিশ সুপারের বাসভবন ও কোর্ট ভবন এলাকায় ২-৩ ফুট পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে। জেলার বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র প্লাবিত হওয়ায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ছাড়াও বাকি ছয়টি উপজেলা বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২০৭টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় এরই মধ্যে ৮৫ টন খাদ্য এবং ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা উপজেলাভিত্তিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরও ত্রাণ বরাদ্দ চেয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল রেসপন্স টিম এবং প্রত্যেক উপজেলায় কুইক রেসপন্স টিম গঠনের কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় মঙ্গলবার দুপুরে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা শেষে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “বান্দরবানে সপ্তম দিনের মত বৃষ্টি হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এরইমধ্যে সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। বাহিনীটি সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। “তারা আমাদের কাছে যেসব রিকোয়ারমেন্ট চেয়েছে আমরা সেগুলো দিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। সেটা যাতে না হয় আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেসব আশ্রয়কেন্দ্র মানুষ রয়েছে সেখানে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লামা উপজেলায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্লাবিত হয়েছে। খাদ্যগুদামেও পানি উঠেছে। এ ছাড়া মোবাইল এবং ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। যেসব এলাকায় ত্রাণ সামগ্রীসহ অন্যান্য সহযোগিতা এখনও পৌঁছায়নি সেখানে যত দ্রুত সম্ভব সহায়তা পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
রাঙামাটিতে ছোটবড় ২৩৫ পাহাড় ধস, পানিবন্দি ৩০ হাজার মানুষ: টানা সাতদিনের বৃষ্টিতে রাঙামাটিতে বড় কোনো পাহাড়ধসের ঘটনা না ঘটলেও প্রায় দুই শতাধিক স্থানে ছোটবড় ধস ও ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত জেলার ২৩৫টি স্থানে এসব ভাঙন বা ধসের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, এসব ধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৮১টি বসতঘর। যার মধ্যে রয়েছে আশ্রয়ন প্রকল্পের ১০টি ঘরও। এসব ঘটনায় কোনো প্রাণহানী না হলেও আহতের সংখ্যা ১০। সকালেও শহরের রিজার্ভমুখসহ কয়েকটি স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পাহাড়ের মাটি বসতঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে কোতয়ালি থানার একটি দল দ্রুত সেখানে পৌঁছে ১৭টি পরিবারের ৬০ জনকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যায়। জেলার ২৪২ টি আশ্রয়কেন্দ্রে এ মুহূর্তে অবস্থান করছেন সাড়ে তিন হাজার মানুষ। এছাড়া ভারি বৃষ্টির কারণে জেলার বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল এবং কাপ্তাইয়ের বেশ কয়েকটি নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। যেখানে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। তীব্র স্রোতের কারণে কর্ণফুলি নদীতে বন্ধ হয়ে গেছে ফেরি চলাচল। সড়কে পাহাড় ধসে পড়ায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার সঙ্গে দীঘিনালা উপজেলা হয়ে খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ। রাঙামাটি আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে ৪৬ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, যা আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কম। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা বেড়েছে। পানির প্রবাহ ভালো থাকায় কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন।
কক্সবাজারে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি, বৃষ্টি থাকবে আরও তিন দিন: ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় জেলার ৭ উপজেলা এখন প্লাবিত। এসব উপজেলার অন্তত ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানির কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী কুতুবদিয়ায় ৭০০ পরিবার, পেকুয়াতে ১০ হাজার পরিবার, মহেশখালীতে ৫০০ পরিবার, চকরিয়ায় ৫০ হাজার পরিবার, কক্সবাজার সদরে ১ হাজার পরিবার, ঈদগাঁও উপজেলায় ১৫০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া রামু উপজেলার ৪ ইউনিয়ন নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। মিঠাছড়ি, খুনিয়াপালং, রশিদনগর ও জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের বাঁকখালী নদী সংলগ্ন গ্রামের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও, জালালাবাদ, পোকখালী, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন, কক্সবাজার সদরের পিএমখালী, খুরুশকুল, পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড, কুতুবদিয়ার ৬টি ইউনিয়ন, মহেশখালীর ৩ ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ৭ উপজেলাসহ বেশ কিছু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।
আবহাওয়া অফিসের কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা দুলাল চন্দ্র দাশ জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১৭ মিলিমিটার। আগামী আরও ৩ দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এতে পাহাড় ধসের শঙ্কাও রয়েছে। চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী জানান, পাবর্ত্য জেলা ও চকরিয়ার পাহাড়ি ঢল নেমে আসার মাধ্যম মাতামুহুরি নদী। পাহাড়ি ঢল, বৃষ্টি এবং জোয়ারের ঢেউতে বাঁধ ভেঙে বিভিন্ন ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। চকরিয়ার একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে পৌরসভাসহ ১২ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে কাকড়া, লক্ষ্যরচর, বুমুবিল ছড়ি, সুরেজপুর-মানিকপুর, কৈয়ারবিল, কোনাখালী ইউনিয়ন। অনেক এলাকায় পানি বেশি হাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সরানো হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান জানান, টানা চারদিনের বৃষ্টিতে ১২ ইউনিয়নের ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তাদের শুকনা খাবার দেওয়া হচ্ছে। পানি বেশি হওয়ায় তলিয়ে গেছে মৌসুমী সবজিসহ আউশ ধানের খেত। পানিতে ভেসে গেছে সহস্রাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ। রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে আন্তঃসড়ক যোগাযোগ। যেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে সেখানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
সারাদেশে সাড়ে ৩ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি: গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩ হাজার ৪৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে ২৬৮ মিলিমিটার। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবিরের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানা গেছে। পূর্বাভাসে জানানো হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। আগামী তিনদিনের মধ্যে বৃৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। সমুদ্রবন্দরের সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর সমতল পানি বাড়ছে। যা আগামী তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। বাপাউবো জানায়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে উক্ত সময়ে এ অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর (সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, সারিগোয়াইন, ঝালুখালি, ভোগাই-কংশ, সোমেশ্বরী, যাদুকাটা) পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। সংস্থাটি জানায়, আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য অববাহিকা ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসায় এই সময় এ অঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর (মুহুরী, ফেনী, হালদা, কর্ণফুলী, সাঙ্গু এবং মাতামুহুরী) পানি সমতল ধীর গতিতে হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার নি¤œাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।