ঢাকা ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

বন্ধু হোক নির্ভরতার প্রতীক

  • আপডেট সময় : ১১:০২:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অগাস্ট ২০২৩
  • ১০৬ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক : ৬ আগস্ট ছিল বিশ^ বন্ধুত্ব দিবস। সারাবিশে^র মানুষ দিবসটি কমবেশি পালন করে। তবে বাংলাদেশে সেই রকম ঘটা করে পালিত হয়না। এ দিবস উপলক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অনেকেই তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তেমনই একটি লেখা এখানে তুলে ধরা হলো।
বন্ধুত্ব শব্দটি এতটা ভারী আর অর্থবহ তা আগে বুঝতে পারিনি। শৈশব কাল থেকে সেরকম বন্ধু কখনো পাইনি যাকে ছাড়া আমার চলবে না বা তার চলবে না। বন্ধু থাকার দরকার তাই হয়তো কিছু বন্ধু হয়ে গেল। স্কুল গেল, কলেজ গেল, তেমন বন্ধু পাইনি যেমন বন্ধু আমি সারাজীবন চেয়ে এসেছি। স্কুল জীবন ও কলেজ জীবনের পর কলেজর কোচিং চলাকালীন হঠাৎ দমকা হাওয়ার মতো আমার জীবনে এলো দু’জন। পানি ছাড়া মাছ যেমন তপড়াতে থাকে, অনার্সে যখন তিনজন তিন জায়গায় হয়ে গেলাম আমিও সেই পানি ছাড়া মাছের মতো তপড়াতে থাকলাম। কখনো ভাবিনি রাঙ্গামাটিতে বাসার বাইরে থেকে পড়াশোনা করবো। সেই আমাদের চিরপরিচিত চকবাজার দেখলে বুক টা হু হু করে উঠতো। তাই আমিও পাড়ি জমালাম রাঙ্গামাটিতে। এখানে এসে পরিচয় হলো আরো দুজনের সঙ্গে।
রাঙ্গামাটিতে অপরিচিত শহরে আমার জীবনটা যতটা সরলভাবে যাবে ভেবেছিলাম ততটা সরলভাবে আসলে যায়নি। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা, বিপদে আমি যেন হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। একটি মেয়ের কাছে সবচেয়ে বড় তার সম্মান আর চরিত্র। আর সেখানে কিছু না করেও অসম্মানিত আর চরিত্রহীন মেয়ের ট্যাগ পেতে হলো। যে মেয়ে কখনো নিজের দুর্বলতা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে দেয়নি, জীবনে প্রথম সেই মেয়ে তার অপরিচিত শহরে হালকা চেনা জানা বন্ধুটিকে ফোন করে ডুকরে কেঁদে ওঠে। জানি না কেন সেইদিন এমন করে প্রকাশ করলাম। সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সবকিছুই প্রকাশ করে ফেলি।
একটা সময় আমার ভেতরের একটা সত্ত্বা বলতো নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করতে নেই। দুর্বলতা জেনে গেলে মানুষ সেই জায়গায় আঘাত করে। আর এই দু’জন মানুষ আমাকে শিখিয়েছে সবাই দুর্বলতায় আঘাত করে না, কেউ কেউ সেই দুর্বলতাগুলো সযতেœ আগলে রাখে। কেন জানি না এখন এই মানুষ দু’টির সামনে আমার ভ্যা ভ্যা করে কাঁদতে ও লজ্জা লাগে না। আমার জীবনের অনেকটা অংশ জুড়ে তারা। তাদেরকে আমি অনেক বেশিই ভালোবাসি। আবার অনেক বেশি কষ্টও তাদেরকেই দেই। যার কারণে আমার বাঁধভাঙ্গা ভালোবাসা হয়তো তারা মাঝে মাঝে বুঝতে পারে না।
মাঝে মাঝে আমার আশেপাশের মানুষগুলোকে অসম্ভব অসহ্য লাগে। জানি, শুনতে হয়তো সবারই খারাপ লাগবে। ঠিক ওই মুহুর্তগুলোতে আমি আস্তে করে সরে আসি তাদের থেকে। আমি চাই না আমার ব্যবহারে তারা কষ্ট পাক। আমি আবেগগুলো প্রকাশ করি না, চেপে রাখি। কারণ আমার ওপর ওদের নির্ভরতা আমাকে খুশির বদলে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। তাদের এই নির্ভরতার মূল্য দিতে পারবো তো! সারাজীবন আমি একই রকমভাবে এমন থাকতে পারবো তো! জীবনের পরিক্রমায় হয় কেউ চুপ হয়ে যাবে বা কেউ ব্যস্ত হয়ে যাবে, তখন তারা অনেক কষ্ট পাবে না তো! সারাদিনের ক্লান্তি, রাগ, অভিমান ভুলে তাদের সঙ্গে যখন প্রাণখুলে কথা হয় তখন মনটা অদ্ভুত প্রশান্তিতে ভরে যায়। ভালোবাসি অনেক বেশি তোদের দুইজনকে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বন্ধু হোক নির্ভরতার প্রতীক

আপডেট সময় : ১১:০২:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ অগাস্ট ২০২৩

লাইফস্টাইল ডেস্ক : ৬ আগস্ট ছিল বিশ^ বন্ধুত্ব দিবস। সারাবিশে^র মানুষ দিবসটি কমবেশি পালন করে। তবে বাংলাদেশে সেই রকম ঘটা করে পালিত হয়না। এ দিবস উপলক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অনেকেই তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তেমনই একটি লেখা এখানে তুলে ধরা হলো।
বন্ধুত্ব শব্দটি এতটা ভারী আর অর্থবহ তা আগে বুঝতে পারিনি। শৈশব কাল থেকে সেরকম বন্ধু কখনো পাইনি যাকে ছাড়া আমার চলবে না বা তার চলবে না। বন্ধু থাকার দরকার তাই হয়তো কিছু বন্ধু হয়ে গেল। স্কুল গেল, কলেজ গেল, তেমন বন্ধু পাইনি যেমন বন্ধু আমি সারাজীবন চেয়ে এসেছি। স্কুল জীবন ও কলেজ জীবনের পর কলেজর কোচিং চলাকালীন হঠাৎ দমকা হাওয়ার মতো আমার জীবনে এলো দু’জন। পানি ছাড়া মাছ যেমন তপড়াতে থাকে, অনার্সে যখন তিনজন তিন জায়গায় হয়ে গেলাম আমিও সেই পানি ছাড়া মাছের মতো তপড়াতে থাকলাম। কখনো ভাবিনি রাঙ্গামাটিতে বাসার বাইরে থেকে পড়াশোনা করবো। সেই আমাদের চিরপরিচিত চকবাজার দেখলে বুক টা হু হু করে উঠতো। তাই আমিও পাড়ি জমালাম রাঙ্গামাটিতে। এখানে এসে পরিচয় হলো আরো দুজনের সঙ্গে।
রাঙ্গামাটিতে অপরিচিত শহরে আমার জীবনটা যতটা সরলভাবে যাবে ভেবেছিলাম ততটা সরলভাবে আসলে যায়নি। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা, বিপদে আমি যেন হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। একটি মেয়ের কাছে সবচেয়ে বড় তার সম্মান আর চরিত্র। আর সেখানে কিছু না করেও অসম্মানিত আর চরিত্রহীন মেয়ের ট্যাগ পেতে হলো। যে মেয়ে কখনো নিজের দুর্বলতা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে দেয়নি, জীবনে প্রথম সেই মেয়ে তার অপরিচিত শহরে হালকা চেনা জানা বন্ধুটিকে ফোন করে ডুকরে কেঁদে ওঠে। জানি না কেন সেইদিন এমন করে প্রকাশ করলাম। সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সবকিছুই প্রকাশ করে ফেলি।
একটা সময় আমার ভেতরের একটা সত্ত্বা বলতো নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করতে নেই। দুর্বলতা জেনে গেলে মানুষ সেই জায়গায় আঘাত করে। আর এই দু’জন মানুষ আমাকে শিখিয়েছে সবাই দুর্বলতায় আঘাত করে না, কেউ কেউ সেই দুর্বলতাগুলো সযতেœ আগলে রাখে। কেন জানি না এখন এই মানুষ দু’টির সামনে আমার ভ্যা ভ্যা করে কাঁদতে ও লজ্জা লাগে না। আমার জীবনের অনেকটা অংশ জুড়ে তারা। তাদেরকে আমি অনেক বেশিই ভালোবাসি। আবার অনেক বেশি কষ্টও তাদেরকেই দেই। যার কারণে আমার বাঁধভাঙ্গা ভালোবাসা হয়তো তারা মাঝে মাঝে বুঝতে পারে না।
মাঝে মাঝে আমার আশেপাশের মানুষগুলোকে অসম্ভব অসহ্য লাগে। জানি, শুনতে হয়তো সবারই খারাপ লাগবে। ঠিক ওই মুহুর্তগুলোতে আমি আস্তে করে সরে আসি তাদের থেকে। আমি চাই না আমার ব্যবহারে তারা কষ্ট পাক। আমি আবেগগুলো প্রকাশ করি না, চেপে রাখি। কারণ আমার ওপর ওদের নির্ভরতা আমাকে খুশির বদলে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। তাদের এই নির্ভরতার মূল্য দিতে পারবো তো! সারাজীবন আমি একই রকমভাবে এমন থাকতে পারবো তো! জীবনের পরিক্রমায় হয় কেউ চুপ হয়ে যাবে বা কেউ ব্যস্ত হয়ে যাবে, তখন তারা অনেক কষ্ট পাবে না তো! সারাদিনের ক্লান্তি, রাগ, অভিমান ভুলে তাদের সঙ্গে যখন প্রাণখুলে কথা হয় তখন মনটা অদ্ভুত প্রশান্তিতে ভরে যায়। ভালোবাসি অনেক বেশি তোদের দুইজনকে।