ঢাকা ০৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

জাগ দেওয়ার পানি নেই, খেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাট

  • আপডেট সময় : ১১:৫০:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩
  • ১৫৬ বার পড়া হয়েছে

রাজবাড়ী প্রতিনিধি: পাট নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক। ভরা বর্ষা মৌসুমেও পানি সংকটে ভুগছে নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর। পানির জন্য হাহাকার করছে এ অঞ্চলের পাট চাষিরা। এখনো জমিতেই রয়ে গেছে প্রায় ৮০ ভাগ পাট। অথচ এ সময়ে মাঠে কোন পাট থাকারই কথা নয় বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় কৃষক জমি থেকে পাট কাটছে না। যারা কেটেছেন তারা কেউ কেউ ব্যক্তিগত সেচের মাধ্যমে জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আবার কেউ কেউ বাড়ির আঙিনায় কিংবা পানি শূন্য পুকুরের মধ্যে ফেলে রেখেছেন। এদিকে সময় মতো পাট কেটে জাগ দিতে না পারলে বালিয়াকান্দিতে প্রায় ২২ কোটি টাকার পাট ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস। কৃষক সময় মতো যাতে পাট জাগ দিতে পারে সেজন্য সরকারি জলাশয় ব্যবহার ও পানি দিয়ে ভরাটের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পৃথক দুটি চিঠি প্রদান করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে। কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দির সাতটি ইউনিয়ন নারুয়া, বহরপুর, জামালপুর, নবাবপুর, জঙ্গল, ইসলামপুর ও সদরে মোট ১৬ হাজার ৩৭২ হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে। এবার পাটের সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭২ বেল (প্রতি বেল ১৮২ কেজি)। চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমি পাট চাষের আওতায় এসেছে। আর ৩৩ হাজার কৃষি পরিবারের মধ্যে সরাসরি ২০ হাজার কৃষি পরিবার রয়েছে পাট চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাটের গুণগত মান নষ্ট হলে বাজার মূল্য কমে যাবে এবং সময়মতো রোপা আমন ধানের চাষ ব্যাহত হবে। তাতে প্রায় ২২ কোটি টাকার সমতূল্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে কৃষক। পাট রোপণ করা হয় মার্চ মাসে। রোপণের ১২০ দিন পর নিয়ম অনুযায়ী পাট কেটে জাগ দেওয়ার কথা। পাট চাষিদের বাঁচানোর জন্য আর্থিক বরাদ্দ ও সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে কৃষি কর্মকর্তার দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জুলাই-আগস্ট মাস পাট কাটার উপযুক্ত সময়। কিন্তু বৈশ্বিক আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় অনাবৃষ্টির কারণে বালিয়াকান্দির জলাশয়গুলোতে পর্যাপ্ত পানির অভাব রয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও সময়মতো পাট কাটা ব্যাহত হলে কৃষক চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পাট শুকিয়ে যাবে। পাটের গুণগত মান নষ্ট হবে।
সেক্ষেত্রে সমস্যা উত্তরণের জন্য কৃত্রিম সেচ পদ্ধতি, এলএলপি, ফিতা পাইপ ব্যবহার করে পুকুর, নালা, ডোবা পানি দিয়ে ভরাট করা প্রয়োজন। তাই পাট জাগ দেওয়ার জন্য সেচ প্রদানের মাধ্যমে জলাশয় ভরাটের জন্য আর্থিক বরাদ্দ প্রদান ও উপজেলার সরকারি জলমহল ব্যবহার করে কৃষক বাঁচানোর জন্য সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে জানান, জুলাই-আগস্ট মাসের মধ্যেই কৃষক পাট কেটে ঘরে তোলে। কিন্তু জুলাই মাস শেষ হয়ে গেলেও পানির জন্য হাহাকার করছে কৃষক। এখনো কৃষকের ৮০ ভাগ পাট জমিতেই রয়েছে। এভাবে আর কয়েক দিন জমিতে থাকলে পাট শুকিয়ে যাবে। কৃষক যাতে সোনালী আঁশ পাট ঘরে তুলতে পারে সেজন্য কৃষি বিভাগ অগ্রিম ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারি জলাশয় ব্যবহার ও ভরাটের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা পজিটিভ। কৃষকের স্বার্থ সবার আগে। সরকারি জলাশয় ব্যবহারের ফলে যদি কৃষক লাভবান হয় তাহলে আমরা সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, এ বিষয়ে তার পরিষদ খুব দ্রুতই উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জাগ দেওয়ার পানি নেই, খেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাট

আপডেট সময় : ১১:৫০:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩

রাজবাড়ী প্রতিনিধি: পাট নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক। ভরা বর্ষা মৌসুমেও পানি সংকটে ভুগছে নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর। পানির জন্য হাহাকার করছে এ অঞ্চলের পাট চাষিরা। এখনো জমিতেই রয়ে গেছে প্রায় ৮০ ভাগ পাট। অথচ এ সময়ে মাঠে কোন পাট থাকারই কথা নয় বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় কৃষক জমি থেকে পাট কাটছে না। যারা কেটেছেন তারা কেউ কেউ ব্যক্তিগত সেচের মাধ্যমে জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আবার কেউ কেউ বাড়ির আঙিনায় কিংবা পানি শূন্য পুকুরের মধ্যে ফেলে রেখেছেন। এদিকে সময় মতো পাট কেটে জাগ দিতে না পারলে বালিয়াকান্দিতে প্রায় ২২ কোটি টাকার পাট ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস। কৃষক সময় মতো যাতে পাট জাগ দিতে পারে সেজন্য সরকারি জলাশয় ব্যবহার ও পানি দিয়ে ভরাটের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পৃথক দুটি চিঠি প্রদান করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে। কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দির সাতটি ইউনিয়ন নারুয়া, বহরপুর, জামালপুর, নবাবপুর, জঙ্গল, ইসলামপুর ও সদরে মোট ১৬ হাজার ৩৭২ হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে। এবার পাটের সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭২ বেল (প্রতি বেল ১৮২ কেজি)। চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমি পাট চাষের আওতায় এসেছে। আর ৩৩ হাজার কৃষি পরিবারের মধ্যে সরাসরি ২০ হাজার কৃষি পরিবার রয়েছে পাট চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাটের গুণগত মান নষ্ট হলে বাজার মূল্য কমে যাবে এবং সময়মতো রোপা আমন ধানের চাষ ব্যাহত হবে। তাতে প্রায় ২২ কোটি টাকার সমতূল্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে কৃষক। পাট রোপণ করা হয় মার্চ মাসে। রোপণের ১২০ দিন পর নিয়ম অনুযায়ী পাট কেটে জাগ দেওয়ার কথা। পাট চাষিদের বাঁচানোর জন্য আর্থিক বরাদ্দ ও সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে কৃষি কর্মকর্তার দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জুলাই-আগস্ট মাস পাট কাটার উপযুক্ত সময়। কিন্তু বৈশ্বিক আবহাওয়ার বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় অনাবৃষ্টির কারণে বালিয়াকান্দির জলাশয়গুলোতে পর্যাপ্ত পানির অভাব রয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও সময়মতো পাট কাটা ব্যাহত হলে কৃষক চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পাট শুকিয়ে যাবে। পাটের গুণগত মান নষ্ট হবে।
সেক্ষেত্রে সমস্যা উত্তরণের জন্য কৃত্রিম সেচ পদ্ধতি, এলএলপি, ফিতা পাইপ ব্যবহার করে পুকুর, নালা, ডোবা পানি দিয়ে ভরাট করা প্রয়োজন। তাই পাট জাগ দেওয়ার জন্য সেচ প্রদানের মাধ্যমে জলাশয় ভরাটের জন্য আর্থিক বরাদ্দ প্রদান ও উপজেলার সরকারি জলমহল ব্যবহার করে কৃষক বাঁচানোর জন্য সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে জানান, জুলাই-আগস্ট মাসের মধ্যেই কৃষক পাট কেটে ঘরে তোলে। কিন্তু জুলাই মাস শেষ হয়ে গেলেও পানির জন্য হাহাকার করছে কৃষক। এখনো কৃষকের ৮০ ভাগ পাট জমিতেই রয়েছে। এভাবে আর কয়েক দিন জমিতে থাকলে পাট শুকিয়ে যাবে। কৃষক যাতে সোনালী আঁশ পাট ঘরে তুলতে পারে সেজন্য কৃষি বিভাগ অগ্রিম ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারি জলাশয় ব্যবহার ও ভরাটের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা পজিটিভ। কৃষকের স্বার্থ সবার আগে। সরকারি জলাশয় ব্যবহারের ফলে যদি কৃষক লাভবান হয় তাহলে আমরা সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, এ বিষয়ে তার পরিষদ খুব দ্রুতই উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।