ঢাকা ০২:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

যানবাহনে সুরক্ষিত আসন ব্যবহারে শিশু মৃত্যুহার কমে

  • আপডেট সময় : ০৩:৩৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩
  • ১০৯ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু প্রতিবেদন : যানবাহনে শিশুদের জন্য সুরক্ষিত আসন ব্যবহার করলে ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ শতাংশ এবং বড় শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায় ৫৪-৮০ শতাংশ শিশু মৃত্যুর হার কমে।
গত রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর শ্যামলীস্থ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত ‘নিরাপদ সড়ক জোরদারকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন তথ্য উঠে আসে। সভায় প্রতিষ্ঠানটির রোড সেফটি প্রকল্পের সমন্বয়কারী শারমিন রহমান বলেন, ৫-২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু ৮ম বৃহত্তম কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অব রোড সেফটি ২০১৮ এর তথ্য অনুসারে সারাবিশ্বে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১০ লাখ ৩০ হাজার মানুষ সড়কে মারা যাচ্ছে এবং আহত হচ্ছে গড়ে প্রায় ৫ কোটি মানুষ। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর দেশে রোড ক্র্যাশে আনুমানিক ২৪ হাজার ৯৫৪ জনের মৃত্যু হয়। আর এসব মৃত্যুর ৯০ শতাংশই নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশে হয়। রোড ক্র্যাশের ফলে দেশে শতকরা ৫ ভাগ জিডিপি কমে যাচ্ছে।
ইউএনবি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দ্বিতীয় ভাগে (এপ্রিল-জুন) সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুহার ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে গেছে। দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত গত ২৮ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৬৭৪ শিশুর মৃত্যু হয়। সড়কে শিশুমৃত্যু ঠেকাতে গাড়িতে সিট বেল্ট বাঁধা, যানবাহনে শিশুদের উপযোগী সিটের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৭১৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ মাস থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ১ হাজার ১৪৩। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে তিনের বেশি শিশু সড়কে প্রাণ হারিয়েছে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর তথ্য অনুসারে, যানবাহনে শিশুবান্ধব আসনের ব্যবহার শিশুদের সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ থেকে ৮২ শতাংশ হ্রাস করে।
সভায় জানানো হয়, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বরে গেজেট আকারে প্রকাশিত বিধিমালায় শিশুযাত্রীর জন্য সিটবেল্ট বাঁধা সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিধান কর্তৃপক্ষ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জারির কথা বললেও শিশু আসনের বিষয়ে কোনো বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। উচ্চগতির যুগে এবং গাড়িতে আটকে থাকা রাস্তা, চালকদের বেপরোয়াতায় ভ্রমণের সময় শিশুর ঝুঁঁকি বেড়ে যায়। অতএব, শিশুদের নিরাপদ পরিবহনের জন্য তাদের উপযোগী সুরক্ষিত আসন অত্যন্ত জরুরি। শিশুদের সুরক্ষিত আসনের অভাব। বাংলাদেশের সড়ক ও সড়ক পরিবহন শিশুবান্ধব নয়। শিশুদের জন্য উপযোগী যানবাহন নেই। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’তে শিশুদের সুরক্ষিত আসন নিয়ে কিছু বলা নেই। কিন্তু আমাদের দেশের যানবাহনে শিশুআসন খুবই জরুরি। তাই বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে যানবাহনে (বিশেষ করে ছোট গাড়িতে) শিশুদের জন্য শুরক্ষিত আসন প্রচলনে আইন আবশ্যক। পাশাপাশি সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের ঘোষিত ‘সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ’ অনুযায়ী একটি আলাদা আইন প্রণয়নের দাবি ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের। কারণ বর্তমান আইনটি সম্পূর্ণ মোটরযান সংক্রান্ত আইন, যেখানে সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি অনুপস্থিত।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যানবাহনে সুরক্ষিত আসন ব্যবহারে শিশু মৃত্যুহার কমে

আপডেট সময় : ০৩:৩৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩

নারী ও শিশু প্রতিবেদন : যানবাহনে শিশুদের জন্য সুরক্ষিত আসন ব্যবহার করলে ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ শতাংশ এবং বড় শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায় ৫৪-৮০ শতাংশ শিশু মৃত্যুর হার কমে।
গত রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর শ্যামলীস্থ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত ‘নিরাপদ সড়ক জোরদারকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন তথ্য উঠে আসে। সভায় প্রতিষ্ঠানটির রোড সেফটি প্রকল্পের সমন্বয়কারী শারমিন রহমান বলেন, ৫-২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু ৮ম বৃহত্তম কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অব রোড সেফটি ২০১৮ এর তথ্য অনুসারে সারাবিশ্বে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১০ লাখ ৩০ হাজার মানুষ সড়কে মারা যাচ্ছে এবং আহত হচ্ছে গড়ে প্রায় ৫ কোটি মানুষ। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর দেশে রোড ক্র্যাশে আনুমানিক ২৪ হাজার ৯৫৪ জনের মৃত্যু হয়। আর এসব মৃত্যুর ৯০ শতাংশই নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশে হয়। রোড ক্র্যাশের ফলে দেশে শতকরা ৫ ভাগ জিডিপি কমে যাচ্ছে।
ইউএনবি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দ্বিতীয় ভাগে (এপ্রিল-জুন) সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুহার ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে গেছে। দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত গত ২৮ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৬৭৪ শিশুর মৃত্যু হয়। সড়কে শিশুমৃত্যু ঠেকাতে গাড়িতে সিট বেল্ট বাঁধা, যানবাহনে শিশুদের উপযোগী সিটের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ২০২২ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৭১৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩ মাস থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ১ হাজার ১৪৩। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে তিনের বেশি শিশু সড়কে প্রাণ হারিয়েছে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর তথ্য অনুসারে, যানবাহনে শিশুবান্ধব আসনের ব্যবহার শিশুদের সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাতের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ থেকে ৮২ শতাংশ হ্রাস করে।
সভায় জানানো হয়, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বরে গেজেট আকারে প্রকাশিত বিধিমালায় শিশুযাত্রীর জন্য সিটবেল্ট বাঁধা সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিধান কর্তৃপক্ষ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জারির কথা বললেও শিশু আসনের বিষয়ে কোনো বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। উচ্চগতির যুগে এবং গাড়িতে আটকে থাকা রাস্তা, চালকদের বেপরোয়াতায় ভ্রমণের সময় শিশুর ঝুঁঁকি বেড়ে যায়। অতএব, শিশুদের নিরাপদ পরিবহনের জন্য তাদের উপযোগী সুরক্ষিত আসন অত্যন্ত জরুরি। শিশুদের সুরক্ষিত আসনের অভাব। বাংলাদেশের সড়ক ও সড়ক পরিবহন শিশুবান্ধব নয়। শিশুদের জন্য উপযোগী যানবাহন নেই। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’তে শিশুদের সুরক্ষিত আসন নিয়ে কিছু বলা নেই। কিন্তু আমাদের দেশের যানবাহনে শিশুআসন খুবই জরুরি। তাই বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে যানবাহনে (বিশেষ করে ছোট গাড়িতে) শিশুদের জন্য শুরক্ষিত আসন প্রচলনে আইন আবশ্যক। পাশাপাশি সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের ঘোষিত ‘সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ’ অনুযায়ী একটি আলাদা আইন প্রণয়নের দাবি ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের। কারণ বর্তমান আইনটি সম্পূর্ণ মোটরযান সংক্রান্ত আইন, যেখানে সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি অনুপস্থিত।