ঢাকা ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ কখনো তত্ত্বাবধায়কের কথা বলেনি: কাদের

  • আপডেট সময় : ০২:০২:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩
  • ১১৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেনি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শনিবার ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে তেজগাঁওয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের বলে দিয়েছি নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অবাধ হবে। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমরা যতগুলো বৈঠক করেছি কখনো তারা বলেনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনতে হবে, তারা কখনো বলেনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে, তারা বলেনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী একটা সুন্দর ক্রেডিবল নির্বাচন হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা একটা স্বচ্ছ নির্বাচন করবো এটা তাদের আমরা জানিয়ে দিয়েছি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও জানিয়ে দিয়েছেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ হবে।
মার্কিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশে আগমন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দল আসছে নির্বাচন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে নয়। তারা রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি জানতে আসছেন। আর ইইউ প্রতিনিধি দল আসছে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল কীভাবে পর্যবেক্ষণ করবে তা দেখতে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, রাজধানীর চারপাশে আউটার সার্কুলার নিয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারই দেশে প্রথম চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে করছে। পরবর্তী নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে তাহলে আউটার সার্কুলারসহ অন্যান্য পরিকল্পনা সময় মতো বাস্তবায়ন হবে। এসময় বিএনপিসহ ৩২ দলের এক দফা আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৩২ দলের এই জগাখিচুড়ির ঐক্যে এক দফার আন্দোলনের পতন অনিবার্য। যে লক্ষ্য নিয়ে জগাখিচুড়ির এই ঐক্য তাতে ফল আসবে অসহনীয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার যেমন আছে তেমনই থাকবে। একটা ঢেউও তো জাগাতে পারেনি। তাদের আন্দোলনের নেতা কে? ক্যাপ্টেন ছাড়া কি জাহাজ চলবে? এই জগাখিচুড়ি ঐক্যে দফায় দফায় পরিবর্তন। এই ৩২ দল টিকবে কি না তার গ্যারান্টি নেই। আগে তো ছিল ৫৪ দল। এই জগাখিচুড়ি ঐক্যের পতন অনিবার্য। নুরু ও রেজা কিবরিয়ারা এক সঙ্গে নেই ভাঙন ধরেছে। সামনে কি হয় সেটা দেখেন।

হ বেশি। এদিকে আমাদের যে সমস্যা তা আমরা সমাধান করতে পারছি না। বরং আরও বড় করে ফেলছি। আলাপ-আলোচনার কথা উঠলে প্রধান দুই পক্ষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে আলাপ-আলোচনা থেকে। তাদের উচিত বাস্তবতার প্রেক্ষিতে আলোচনায় আসা। তা না হলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে।
বাংলাদেশ ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে জানিয়ে ইতিহাসবিদ, গবেষক অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, এত দিন বাংলাদেশের প্রতি কারও আগ্রহ ছিল না। এখন একটা ইস্যু হয়েছে। ইস্যুটা আমরাই এনেছি। এই ইস্যু না হলে অন্য ইস্যু আসতো। দেশে দুটি পক্ষ আছে-স্বাধীনতার শক্তি আর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। যেখানে ভেতরের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক, সেখানে কীভাবে স্বাভাবিক ব্যবস্থা আশা করা যায়?
দৈনিক আমাদের অর্থনীতির এডিটর ইনচার্জ মাসুদা ভাট্টি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্র কম হয়নি। কোনও বিদেশি শক্তি সেই ক্ষেত্র সমাধান করেনি। আমরাই করেছি। তাহলে গণতন্ত্রের কথা বলে বিদেশিদের অ্যাডভোকেসি ভয়াবহ হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের প্রধান সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ চায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। এদিকে ক্ষমতাসীন দল ও যারা ক্ষমতাপ্রত্যাশী, তারা পরস্পর নির্বাচন নিয়ে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। দেশের স্বার্থে আলাপ-আলোচনা করে একটা সমঝোতায় আসতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহফুজা খানম বলেন, আজ বাংলাদেশের বিদেশি তৎপরতার টপে আছে যুক্তরাষ্ট্র, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল না এবং বাংলাদেশ হওয়ার পর থেকেই তাদের অপতৎপরতা চলছে। যদিও আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বলছে-সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়। অতীত থেকেই আমরা বিদেশি রাষ্ট্রকে বারবার হস্তক্ষেপের সুযোগ দিয়েছি মন্তব্য করে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ দেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের প্রভাব নতুন নয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ অনেকেই আসছেন। এ ছাড়া আমাদের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সম্পর্ক আমেরিকার সঙ্গে গড়ে উঠেছে। এই অবস্থায় আমরা কী করে এর থেকে বেরিয়ে আসবো? গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ কখনো তত্ত্বাবধায়কের কথা বলেনি: কাদের

আপডেট সময় : ০২:০২:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেনি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল শনিবার ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে তেজগাঁওয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের বলে দিয়েছি নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অবাধ হবে। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমরা যতগুলো বৈঠক করেছি কখনো তারা বলেনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনতে হবে, তারা কখনো বলেনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে, তারা বলেনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী একটা সুন্দর ক্রেডিবল নির্বাচন হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা একটা স্বচ্ছ নির্বাচন করবো এটা তাদের আমরা জানিয়ে দিয়েছি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও জানিয়ে দিয়েছেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ হবে।
মার্কিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশে আগমন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দল আসছে নির্বাচন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে নয়। তারা রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি জানতে আসছেন। আর ইইউ প্রতিনিধি দল আসছে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক দল কীভাবে পর্যবেক্ষণ করবে তা দেখতে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, রাজধানীর চারপাশে আউটার সার্কুলার নিয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারই দেশে প্রথম চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে করছে। পরবর্তী নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে তাহলে আউটার সার্কুলারসহ অন্যান্য পরিকল্পনা সময় মতো বাস্তবায়ন হবে। এসময় বিএনপিসহ ৩২ দলের এক দফা আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৩২ দলের এই জগাখিচুড়ির ঐক্যে এক দফার আন্দোলনের পতন অনিবার্য। যে লক্ষ্য নিয়ে জগাখিচুড়ির এই ঐক্য তাতে ফল আসবে অসহনীয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার যেমন আছে তেমনই থাকবে। একটা ঢেউও তো জাগাতে পারেনি। তাদের আন্দোলনের নেতা কে? ক্যাপ্টেন ছাড়া কি জাহাজ চলবে? এই জগাখিচুড়ি ঐক্যে দফায় দফায় পরিবর্তন। এই ৩২ দল টিকবে কি না তার গ্যারান্টি নেই। আগে তো ছিল ৫৪ দল। এই জগাখিচুড়ি ঐক্যের পতন অনিবার্য। নুরু ও রেজা কিবরিয়ারা এক সঙ্গে নেই ভাঙন ধরেছে। সামনে কি হয় সেটা দেখেন।

হ বেশি। এদিকে আমাদের যে সমস্যা তা আমরা সমাধান করতে পারছি না। বরং আরও বড় করে ফেলছি। আলাপ-আলোচনার কথা উঠলে প্রধান দুই পক্ষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে আলাপ-আলোচনা থেকে। তাদের উচিত বাস্তবতার প্রেক্ষিতে আলোচনায় আসা। তা না হলে দেশ সংঘাতের দিকে যাবে।
বাংলাদেশ ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে জানিয়ে ইতিহাসবিদ, গবেষক অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, এত দিন বাংলাদেশের প্রতি কারও আগ্রহ ছিল না। এখন একটা ইস্যু হয়েছে। ইস্যুটা আমরাই এনেছি। এই ইস্যু না হলে অন্য ইস্যু আসতো। দেশে দুটি পক্ষ আছে-স্বাধীনতার শক্তি আর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। যেখানে ভেতরের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক, সেখানে কীভাবে স্বাভাবিক ব্যবস্থা আশা করা যায়?
দৈনিক আমাদের অর্থনীতির এডিটর ইনচার্জ মাসুদা ভাট্টি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্র কম হয়নি। কোনও বিদেশি শক্তি সেই ক্ষেত্র সমাধান করেনি। আমরাই করেছি। তাহলে গণতন্ত্রের কথা বলে বিদেশিদের অ্যাডভোকেসি ভয়াবহ হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের প্রধান সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ চায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। এদিকে ক্ষমতাসীন দল ও যারা ক্ষমতাপ্রত্যাশী, তারা পরস্পর নির্বাচন নিয়ে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে অবশ্যই আলোচনার টেবিলে বসতে হবে। দেশের স্বার্থে আলাপ-আলোচনা করে একটা সমঝোতায় আসতে হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহফুজা খানম বলেন, আজ বাংলাদেশের বিদেশি তৎপরতার টপে আছে যুক্তরাষ্ট্র, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল না এবং বাংলাদেশ হওয়ার পর থেকেই তাদের অপতৎপরতা চলছে। যদিও আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বলছে-সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়। অতীত থেকেই আমরা বিদেশি রাষ্ট্রকে বারবার হস্তক্ষেপের সুযোগ দিয়েছি মন্তব্য করে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ দেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের প্রভাব নতুন নয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ অনেকেই আসছেন। এ ছাড়া আমাদের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সম্পর্ক আমেরিকার সঙ্গে গড়ে উঠেছে। এই অবস্থায় আমরা কী করে এর থেকে বেরিয়ে আসবো? গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী।