নিজস্ব প্রতিবেদক: গণঅধিকার পরিষদের একাংশের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেছেন, যে লক্ষ্য এবং নীতি নিয়ে গণঅধিকার পরিষদ গঠিত হয়েছিল। তা থেকে গণঅধিকার পরিষদ সরে গেছে। সংগঠনটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে রেজা কিবরিয়া গ্রুপ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসান এ দাবি করেন। গণঅধিকার পরিষদ বিভক্ত হয়েছে। এক গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন ড. রেজা কিবরিয়া। অপর গ্রুপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের (রেজা কিবরিয়া গ্রুপ) কেন্দ্রীয় নেতা ফারুক হাসান, কর্নেল মিয়া মশিউজ্জামান, মালেক ফরাজী, মো. আতাউল্লাহ, সাদ্দাম হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, জাকারিয়া পলাশ, মো. শামসুদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের অভ্যন্তরে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও ন্যায় বিচারের চর্চা ব্যহত হয়েছে, যা এ দলের প্রতি মানুষের অপরিসীম প্রত্যাশাকে ক্ষুণ্ন করেছে। রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, অধিকার ও জাতীয়স্বার্থ রক্ষায় কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে। একইসঙ্গে তিন দফা সুনির্দিষ্ট দাবি পেশ করেন তারা।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
(১) অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না।
২) অবিলম্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
৩) বাংলাদেশ পাসপোর্টে মাগের তো ‘এক্সেপ্ট ইসরাইল (ঊীপবঢ়ঃ ওংৎধবষ)’ লেখাটি পুনর্বহাল করতে হবে। ইসরায়েলের সঙ্গে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের গোপন কোনও সম্পর্ক থাকলে তা তদন্ত করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তানী রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলা হয়, ইসরাইলি নাগরিক ও কথিত মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে নুরুল হক নুরের বৈঠক এবং অর্থ গ্রহণ রাষ্ট্রবিরোধীতার শামিল। এ জন্য নুরকে দেশের গোয়েন্দা সংস্তার সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। আমরা নুরের গ্রেফতার ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নুরের সঙ্গে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যের আলোচিত বৈঠকের সত্যতা সংক্রান্ত কিছু তথ্য, আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে দলীয় তহবিল নিজে গ্রহণ, হিসাব না দেওয়া এবং শিপন বসুসহ বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহভাজন লোকদের সঙ্গে গোপন বৈঠকের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
নুরুল হক নুর কাতারে ইসরাইলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নুর স্বীকার করেছেন তবে কোনো রকম আর্থিক সুবিধা গ্রহণের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেননি। এমনকি ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও ওই বৈঠকের আলোচ্যসূচি কী ছিল, তা তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদেরকে অবগত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এসব বিষয় জানতে চাওয়ায় গণঅধিকার পরিষদের সভায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। এরপরই তিনি ড. রেজা কিবরিয়াকে তার পদ থেকে অব্যহতি দেন। এ ক্ষেত্রেও গঠনতন্ত্র মানা হয়নি।
উপস্থিত সদস্যরা গোপন ব্যালটে ভোট গ্রহণের আহ্বান জানালে তা না করে প্রকাশ্যে হাত তুলে সমর্থন জানাতে বলা হয়। ফলে অনেকেই ভোটদানে বিরত থাকেন। তার এ কর্মকা- সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক এবং প্রতারণামূলক বলে মন্তব্য করা হয় লিখিত বক্তব্যে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গত ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে নুরুল হক নুরের সব তৎপরতা দলীয় গঠনতন্ত্রের এবং মূলনীতির পরিপন্থি।