বিশেষ সংবাদদাতা: আওয়ামী লীগ সরকার দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা চায় জানিয়ে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য গণতন্ত্র ও স্থিতিশীল পরিবেশ প্রয়োজন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজায় নবনির্মিত কার্যালয় উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, এটাই আমরা চাই, সবাই আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন বাংলাদেশে যেন গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকে।
তিনি বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজ আমরা বাংলাদেশকে উন্নত করতে পেরেছি। এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাও পেয়েছি। যদি একটা স্থিতিশীল ধারাবাহিকতা না থাকতো তাহলে এটা কখনও অর্জন করা সম্ভব হতো না। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এ গণতান্ত্রিক ধারাটা কিন্তু দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। এটা একদিনে আসেনি। তিনি বলেন, বার বারই আমাদের দেশে নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেই ২০০৯ এ সরকার গঠনের পর থেকে আমরা যে একটানা সরকারে থাকতে পেরেছি, পাশাপাশি আমাদের গণতান্ত্রিক ধারাটা মজবুত করতে পেরেছি বলেই কিন্তু আজ পার্লামেন্ট ভবন না সারাদেশটাই কিন্তু বদলে গেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংসদের বিভিন্ন উন্নয়নকাজ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, একটানা আমরা সরকারে থাকার ফলে, একটা দীর্ঘ সময় পেয়ে পার্লামেন্টটাকে সুন্দর করে গোছানো গেছে, সাজানো গেছে। জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজার নিচতলা সংস্কার করে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের নতুন কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে। অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে ফিতা কেটে নতুন এ কার্যালয় উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি অফিসের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরীসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইফ, হুইফরা। এ সময় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংসদের নতুন অফিসের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা ঘোষণা দিয়েছি, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট অফিস দরকার। সংসদের এ অফিসটা স্মার্ট অফিস হিসেবে তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, কাজ করার জন্য একটা সুন্দর পরিবেশ দরকার। সুন্দর পরিবেশে সবাই কাজ করলে কাজের গতিও বাড়ে, কাজের উৎকর্ষ সাধন হয়। ভালো পরিবেশে ভালো চিন্তা হয়।
নভেম্বরে বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
আগামী ৩০ নভেম্বর থাইল্যান্ডে বসবে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন। ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র-সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান। ঢাকায় সফররত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) সৌরভ কুমারের সঙ্গে বিমসটেক ইস্যুতে আলোচনা করেন পররাষ্ট্র-সচিব। বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে সচিব জানান, বিমসটেক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এবার ভারত থেকে বিমসটেকের নতুন সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হবেন। ফলে নতুন চেয়ার বাংলাদেশ এবং ভারতের নতুন সেক্রেটারি জেনারেল একইসঙ্গে যেন কাজ করতে পারেন, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বিমসটেককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভারতের আগ্রহ রয়েছে এবং কীভাবে জোটের অগ্রগতি করা যায়, সেটি নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করবে। আগামী ১৭ জুলাই থাইল্যান্ডে বিমসটেকের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হবে এবং সেখানে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বিমসটেকের সড়ক ও রেলের বাইরে বিদ্যুতের গ্রিড কানেকটিভটি বাড়াতে চাই। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। বিমসটেকে বাংলাদেশের চাওয়া বাণিজ্য বাড়ানো। আর ভারত চায় নিরাপত্তা বাড়াতে। এক্ষেত্রে বিমসটেকের দেশগুলোর মধ্যে মানি লন্ডারিং, ড্রাগ ট্রাফিকিং প্রতিরোধে সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।