ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

পুরোপুরি এআইয়ের তৈরি ওষুধ প্রথমবারের মতো মানবদেহে

  • আপডেট সময় : ১২:২৩:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : সম্পূর্ণভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে তৈরি কোনো ওষুধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রথমবারের মতো মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদী ‘আইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিস’ (আইপিএফ) রোগের চিকিৎসার লক্ষ্যে ‘আইএনএস০১৮থ০৫৫’ নামে নতুন এই ওষুধটি তৈরি করেছে হংকংভিত্তিক বায়োটেক স্টার্টআপ ‘ইনসিলিকো মেডিসিন’।
ফুসফুসে ক্ষত তৈরি করা এই রোগের প্রদুর্ভাব গত কয়েক দশকে বেড়েছে, কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই এতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। চিকিৎসাহীনতায় পাঁচ বছরের মধ্যে এরা মৃত্যুমুখে পড়বেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিউট অফ হেলথ। “এটি জেনারেটিভ এআই আবিষ্কৃত প্রথম ওষুধ মানব শরীরে যার পরীক্ষা চালানো হল, বিশেষ করে ‘ফেইজ টু ট্রায়াল’ বা ২য় ধাপের পরীক্ষা।” – সিএনবিসিকে বলেছেন ইনসিলকো মেডিসিনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও অ্যালেক্স ঝাভোরনকভ। “এআই দিয়ে সৃষ্ট অন্যান্য বেশ কিছু ওষুধ পরীক্ষাধীন থাকলেও আমাদের ওষুধটিই প্রথম যার লক্ষ্য নির্ধারণ এবং নকশা -এই দুটি পর্যায়ই করা হয়েছে ‘নোভেল এআই’ ব্যবহার করে। এই রোগের চিকিৎসায় প্রচলিত ওষুধগুলো সাধারণত রোগ বিস্তারের গতি কমিয়ে আনার চেষ্টা করে, তবে কষ্টকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সেগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্য। সে অবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ২০২০ সালে এই নতুন ওষুধটি আবিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে জানিয়েছেন ঝাভোরনকভ। তার কোম্পানি এরইমধ্যে ৪০ কোটি ডলারের বিনিয়োগও পেয়েছে। ঝাভোরনকভ বলেন, বিশেষ এই রোগের কারণে রোগীর শরীরে তৈরি হওয়া বার্ধক্যজনিত জটিলতা ছিল এই ওষুধটি তৈরিতে মনোযোগ দেওয়ার অন্যতম কারণ। কোম্পানিটির আরও দুটি ওষুধও পরীক্ষাধীন, যেগুলোও আংশিকভাবে এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি কোভিড-১৯-এর ওষুধ যা প্রথম ধাপের পরীক্ষায় রয়েছে। অন্যটি ক্যান্সারের ওষুধ যা “ইউএসপি১ ইনহিবিটর” এবং এর প্রয়োগ হবে শক্ত টিউমার চিকিৎসায়।
সম্প্রতি এগুলোকেও মানবদেহে পরীক্ষা চালানোর জন্য অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন ওষুধ প্রাশাসন- এফডিএ।
“আমরা যখন কোম্পানিটি শুরু করি তখন আমাদের মনযোগ ছিলো অ্যালগরিদমের ওপর, এমন প্রযুক্তি তৈরি করা যার সাহায্যে নতুন অণু আবিষ্কার করা সম্ভব হবে।”
“সেই সময়ে আমরা কল্পনাও করিনি আমাদের নিজদের আবিষ্কৃত ওষুধ রোগীদের শরীরে একদিন পরীক্ষা চালানোর পর্যায়ে এসে পৌঁছাতে পারব।” – ঝাভোরনকভ বলেন। বর্তমানে চীনে ১২ সপ্তাহ মেয়াদে চালানো ওষুধটির পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মোট ৪০টি স্থানে ৬০ জন রোগীর ওপরে করার পরিকল্পনা রয়েছে ইনসিলিকোর – বলেছে সিএনবিসি। দ্বিতীয় ধাপটি সফল হলে তৃতীয় ধাপে বড় আকারে আনুমানিক কয়েকশো রোগীর ওপর পরীক্ষা চালানো হবে। “আশা করছি বর্তমান ২য় ধাপটির ফলাফল আমরা আগামী বছর নাগাদ জানতে পারবো।” ঝাভোরনকভ যোগ করেন, পরবর্তী ধাপগুলোর সময় অনুমান করা কঠিন, বিশেষ করে যখন রোগটি বিরল এবং বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রোগী খুঁজে বের করতে হয়। তিনি বলেন “আমরা আশা করছি কয়েক বছরের মধ্যে ওষুধটি বাজারে আসবে এবং এর থেকে রোগীরা উপকৃত হবেন।”

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইউনূস-রুবিও ফোনালাপ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা বাড়াতে জোর

পুরোপুরি এআইয়ের তৈরি ওষুধ প্রথমবারের মতো মানবদেহে

আপডেট সময় : ১২:২৩:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩

প্রযুক্তি ডেস্ক : সম্পূর্ণভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে তৈরি কোনো ওষুধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রথমবারের মতো মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদী ‘আইডিওপ্যাথিক পালমোনারি ফাইব্রোসিস’ (আইপিএফ) রোগের চিকিৎসার লক্ষ্যে ‘আইএনএস০১৮থ০৫৫’ নামে নতুন এই ওষুধটি তৈরি করেছে হংকংভিত্তিক বায়োটেক স্টার্টআপ ‘ইনসিলিকো মেডিসিন’।
ফুসফুসে ক্ষত তৈরি করা এই রোগের প্রদুর্ভাব গত কয়েক দশকে বেড়েছে, কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই এতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। চিকিৎসাহীনতায় পাঁচ বছরের মধ্যে এরা মৃত্যুমুখে পড়বেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিউট অফ হেলথ। “এটি জেনারেটিভ এআই আবিষ্কৃত প্রথম ওষুধ মানব শরীরে যার পরীক্ষা চালানো হল, বিশেষ করে ‘ফেইজ টু ট্রায়াল’ বা ২য় ধাপের পরীক্ষা।” – সিএনবিসিকে বলেছেন ইনসিলকো মেডিসিনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও অ্যালেক্স ঝাভোরনকভ। “এআই দিয়ে সৃষ্ট অন্যান্য বেশ কিছু ওষুধ পরীক্ষাধীন থাকলেও আমাদের ওষুধটিই প্রথম যার লক্ষ্য নির্ধারণ এবং নকশা -এই দুটি পর্যায়ই করা হয়েছে ‘নোভেল এআই’ ব্যবহার করে। এই রোগের চিকিৎসায় প্রচলিত ওষুধগুলো সাধারণত রোগ বিস্তারের গতি কমিয়ে আনার চেষ্টা করে, তবে কষ্টকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সেগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্য। সে অবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ২০২০ সালে এই নতুন ওষুধটি আবিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে জানিয়েছেন ঝাভোরনকভ। তার কোম্পানি এরইমধ্যে ৪০ কোটি ডলারের বিনিয়োগও পেয়েছে। ঝাভোরনকভ বলেন, বিশেষ এই রোগের কারণে রোগীর শরীরে তৈরি হওয়া বার্ধক্যজনিত জটিলতা ছিল এই ওষুধটি তৈরিতে মনোযোগ দেওয়ার অন্যতম কারণ। কোম্পানিটির আরও দুটি ওষুধও পরীক্ষাধীন, যেগুলোও আংশিকভাবে এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি কোভিড-১৯-এর ওষুধ যা প্রথম ধাপের পরীক্ষায় রয়েছে। অন্যটি ক্যান্সারের ওষুধ যা “ইউএসপি১ ইনহিবিটর” এবং এর প্রয়োগ হবে শক্ত টিউমার চিকিৎসায়।
সম্প্রতি এগুলোকেও মানবদেহে পরীক্ষা চালানোর জন্য অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন ওষুধ প্রাশাসন- এফডিএ।
“আমরা যখন কোম্পানিটি শুরু করি তখন আমাদের মনযোগ ছিলো অ্যালগরিদমের ওপর, এমন প্রযুক্তি তৈরি করা যার সাহায্যে নতুন অণু আবিষ্কার করা সম্ভব হবে।”
“সেই সময়ে আমরা কল্পনাও করিনি আমাদের নিজদের আবিষ্কৃত ওষুধ রোগীদের শরীরে একদিন পরীক্ষা চালানোর পর্যায়ে এসে পৌঁছাতে পারব।” – ঝাভোরনকভ বলেন। বর্তমানে চীনে ১২ সপ্তাহ মেয়াদে চালানো ওষুধটির পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মোট ৪০টি স্থানে ৬০ জন রোগীর ওপরে করার পরিকল্পনা রয়েছে ইনসিলিকোর – বলেছে সিএনবিসি। দ্বিতীয় ধাপটি সফল হলে তৃতীয় ধাপে বড় আকারে আনুমানিক কয়েকশো রোগীর ওপর পরীক্ষা চালানো হবে। “আশা করছি বর্তমান ২য় ধাপটির ফলাফল আমরা আগামী বছর নাগাদ জানতে পারবো।” ঝাভোরনকভ যোগ করেন, পরবর্তী ধাপগুলোর সময় অনুমান করা কঠিন, বিশেষ করে যখন রোগটি বিরল এবং বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রোগী খুঁজে বের করতে হয়। তিনি বলেন “আমরা আশা করছি কয়েক বছরের মধ্যে ওষুধটি বাজারে আসবে এবং এর থেকে রোগীরা উপকৃত হবেন।”