ঢাকা ০৮:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

এক বছরে পদ্মা সেতুর আয় আটশ কোটি টাকা

  • আপডেট সময় : ১২:২৯:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুন ২০২৩
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক বছরে পদ্মা সেতু থেকে টোল বাবদে আয় হয়েছে প্রায় আটশ কোটি টাকা। অর্থাৎ, দৈনিক গড় আয় প্রায় ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল রোববার সেতু ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ২৫ জুন ২০২২ থেকে এবছর ২৪ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার যানবাহন পদ্মা সেতু পার হয়েছে। তাতে মোট আয় হয়েছে ৭৯৮ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ টাকা। রোববার বিকালের মধ্যেই তা ৮০০ কোটিতে উন্নীত হবে। এই হিসাবে পদ্মা সেতু দিয়ে দৈনিক গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার গাড়ি চলাচল করছে। এ থেকে প্রতিদিন গড়ে আয় হয়েছে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ওবায়দুল কাদের বলেন, “সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। আপনাদের জানা রয়েছে, আমাজানের পর পদ্মাকে বিবেচনা করা হয় মোস্ট আনপ্রেডিক্টেবল রিভার হিসেবে। নির্মাণ কাজের প্রতিটি ধাপেই ছিল নানান চ্যালেঞ্জ। নদীর আচরণ দেখে শেষ দিকে এসে আমাদের ডিজাইনে সামান্য পরিবর্তন আনতে হয়েছিল।
“ডাবল ডেকার পদ্মা সেতু শুধু নিছক একটি পারাপারের সেতু নয়। এর সাথে যেমনি রয়েছে রেললাইন। তেমনি এপার থেকে ওপারে চলে গেছে গ্যাস এবং অপটিক্যাল ফাইবার লাইন। পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে পায়রা ও রামপাল হতে ঢাকাসহ সারাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য আলাদা ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন।”
রাষ্ট্রপতি ছাড়া প্রত্যেক নাগরিকের টোল দেওয়া বাধ্যতামূলক জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীও সেতু পারাপারে টোল প্রদান করেছেন। তিনি উদ্বোধনের দিনই ৫৯ হাজার ৬ শ টাকা টোল প্রদান করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও অন্যান্য সংস্থা তাদের যানবাহনের বিপরীতে ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকা টোল দিয়েছে।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। সরকারের কাছ থেকে সেতু নির্মাণ ব্যয়ের অর্থ বিবিএ ঋণ হিসেবে নিয়েছে। এ ঋণের টাকা ধাপে ধাপে সরকারি কোষাগারে ফেরত দিবে বিবিএ।
এরইমধ্যে বিদায়ী অর্থ বছরে চারটি কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। প্রথম দুটি কিস্তি বাবদ প্রায় ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি বাবদ প্রায় ৩১৬ কোটি ৩ লাখ টাকাসহ মোট প্রায় ৬৩২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে বিবিএ। চুক্তি অনুযায়ী ৩৫ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থ সরকারকে ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে। বহু বাধা বিঘœ পেরিয়ে ২০২২ সালের ২৫ জুন দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন এ সেতু সবার চলাচালের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “উদ্বোধনের পর থেকে আমাদের আর থেমে থাকতে হয়নি। নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে আসছে সেতুটি। আজ আমি একবছর পূর্তিতে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণে সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জানাচ্ছি কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ জানাচ্ছি এ নির্মাণযজ্ঞে বিভিন্ন ধাপে যারা সহযোগিতা করেছেন, নানা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং করে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি।
“আপনারা সবই জানেন এবং দেখছেন, একটি সেতু কীভাবে বদলে দিতে পারে অর্থনৈতিক চালচিত্র। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলার সাথে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সড়ক-সংযোগ। এ সেতুর মাধ্যমে মংলা, পায়রা পোর্ট, বেনাপোল স্থল বন্দরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এখন সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “নদীর ওপারের একসময়ের অবহেলিত জনপদ আজ দ্যুতিময়। গড়ে উঠছে ছোট-বড় শিল্প কারখানা। খুলে গেছে স্বপ্নের দ্বার এবং সম্প্রসারিত হয়েছে সম্ভাবনার দিগন্ত।”
সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক বছরে পদ্মা সেতুর আয় আটশ কোটি টাকা

আপডেট সময় : ১২:২৯:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : এক বছরে পদ্মা সেতু থেকে টোল বাবদে আয় হয়েছে প্রায় আটশ কোটি টাকা। অর্থাৎ, দৈনিক গড় আয় প্রায় ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল রোববার সেতু ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ২৫ জুন ২০২২ থেকে এবছর ২৪ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার যানবাহন পদ্মা সেতু পার হয়েছে। তাতে মোট আয় হয়েছে ৭৯৮ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ টাকা। রোববার বিকালের মধ্যেই তা ৮০০ কোটিতে উন্নীত হবে। এই হিসাবে পদ্মা সেতু দিয়ে দৈনিক গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার গাড়ি চলাচল করছে। এ থেকে প্রতিদিন গড়ে আয় হয়েছে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ওবায়দুল কাদের বলেন, “সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। আপনাদের জানা রয়েছে, আমাজানের পর পদ্মাকে বিবেচনা করা হয় মোস্ট আনপ্রেডিক্টেবল রিভার হিসেবে। নির্মাণ কাজের প্রতিটি ধাপেই ছিল নানান চ্যালেঞ্জ। নদীর আচরণ দেখে শেষ দিকে এসে আমাদের ডিজাইনে সামান্য পরিবর্তন আনতে হয়েছিল।
“ডাবল ডেকার পদ্মা সেতু শুধু নিছক একটি পারাপারের সেতু নয়। এর সাথে যেমনি রয়েছে রেললাইন। তেমনি এপার থেকে ওপারে চলে গেছে গ্যাস এবং অপটিক্যাল ফাইবার লাইন। পাশাপাশি নির্মাণ করা হয়েছে পায়রা ও রামপাল হতে ঢাকাসহ সারাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য আলাদা ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন।”
রাষ্ট্রপতি ছাড়া প্রত্যেক নাগরিকের টোল দেওয়া বাধ্যতামূলক জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীও সেতু পারাপারে টোল প্রদান করেছেন। তিনি উদ্বোধনের দিনই ৫৯ হাজার ৬ শ টাকা টোল প্রদান করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও অন্যান্য সংস্থা তাদের যানবাহনের বিপরীতে ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকা টোল দিয়েছে।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। সরকারের কাছ থেকে সেতু নির্মাণ ব্যয়ের অর্থ বিবিএ ঋণ হিসেবে নিয়েছে। এ ঋণের টাকা ধাপে ধাপে সরকারি কোষাগারে ফেরত দিবে বিবিএ।
এরইমধ্যে বিদায়ী অর্থ বছরে চারটি কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। প্রথম দুটি কিস্তি বাবদ প্রায় ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি বাবদ প্রায় ৩১৬ কোটি ৩ লাখ টাকাসহ মোট প্রায় ৬৩২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে বিবিএ। চুক্তি অনুযায়ী ৩৫ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থ সরকারকে ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে। বহু বাধা বিঘœ পেরিয়ে ২০২২ সালের ২৫ জুন দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন এ সেতু সবার চলাচালের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “উদ্বোধনের পর থেকে আমাদের আর থেমে থাকতে হয়নি। নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে আসছে সেতুটি। আজ আমি একবছর পূর্তিতে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণে সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জানাচ্ছি কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ জানাচ্ছি এ নির্মাণযজ্ঞে বিভিন্ন ধাপে যারা সহযোগিতা করেছেন, নানা ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং করে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি।
“আপনারা সবই জানেন এবং দেখছেন, একটি সেতু কীভাবে বদলে দিতে পারে অর্থনৈতিক চালচিত্র। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলার সাথে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সড়ক-সংযোগ। এ সেতুর মাধ্যমে মংলা, পায়রা পোর্ট, বেনাপোল স্থল বন্দরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন এখন সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “নদীর ওপারের একসময়ের অবহেলিত জনপদ আজ দ্যুতিময়। গড়ে উঠছে ছোট-বড় শিল্প কারখানা। খুলে গেছে স্বপ্নের দ্বার এবং সম্প্রসারিত হয়েছে সম্ভাবনার দিগন্ত।”
সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।