ঢাকা ০৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

টিকা সংকট কাটছে

  • আপডেট সময় : ০৩:১৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেরাম ইনস্টিটিউটের চালান আসা বন্ধের কারণে যাদের কোভিড টিকা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া আটকে আছে, তাদের জন্য সুখবর এসেছে। বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ‘কোভ্যাক্সের’ আওতায় জাপান থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার টিকা এসেছে।
গতকাল শনিবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের হাতে টিকাগুলো হস্তান্তর করেন বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। টিকা গ্রহণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আজকে আমরা সৌভাগ্যবান। কারণ, যে টিকার জন্য অনেকে অপেক্ষা করছেন, প্রায় ১৫-১৬ লাখ লোক, এই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন, দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষা করছিলেন। “আমরা খুবই আনন্দিত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ জাপান, আজকে ২ লাখ ৪৫ হাজার অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উপহার দিচ্ছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা ‘গ্যাভি’ এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফর্ম হল ‘কোভ্যাক্স’। অনুন্নত ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোও যাতে করোনাভাইরাসের টিকার ন্যায্য হিস্যা পায়, তা নিশ্চিত করতে এই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে। গত ১৩ জুলাই এক ফেইসবুক পোস্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘কোভ্যাক্সের’ আওতায় জাপান ২৯ লাখ টিকা পাঠাবে। এছাড়া চীন ১০ লাখ ডোজ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেবে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়। সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।কিন্তু দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। যারা প্রথম ডোজে কোভিশিল্ড নিয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যায়নি।
সরকার চীনসহ বিভিন্ন উৎস থেকে বিভিন্ন কোম্পানির টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করলেও যারা প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন, তাদের জন্য ওই টিকার বিকল্প নেই। এ পর্যন্ত যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন তাদের সবার দ্বিতীয় ডোজ পূর্ণ করতে হলে আরও ১৫ লাখ ২১ হাজার ৯৪৭ ডোজ টিকা দরকার। জাপান থেকে আসা প্রায় আড়াই লাখ ডোজ দিয়ে সামান্য একটি অংশ পূরণ হচ্ছে।
আগামী শুক্রবার জাপান থেকে দ্বিতীয় চালানে পাঁচ লাখের মতো টিকা আসবে বলে টিকা গ্রহণ করে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। তিনি বলেন, “আগামী শুক্রবার তারা এর থেকে ডাবলের বেশি দেবে। সর্বমোট তারা ৩০ লাখ ৫০ হাজার অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেবে। আগে বলেছিল ২৯ লাখ দেবে, তার পরে আরও দেড় লাখ যোগ হয়েছে।”
এজন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “জাপান আমাদের পুরোনো বন্ধু, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার থেকে জাপান আমাদের সাথে ছিল। আমাদের এই কঠিনতম সময়ে জাপান আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা খুব ভাগ্যবান জাপান আমাদেরকে টিকা দিচ্ছে।”
কোভিড টিকা নিয়ে সমস্যা কেটে যাচ্ছে জানিয়ে মোমেন বলেন, “আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা পাচ্ছি। আমরা টিকা প্রাপ্তির বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে এসেছি। আগামীতে টিকার সমস্যা হবে না। ”তবে আমরা স্থানীয়ভাবে এটা তৈরি করতে হবে, এটার বিকল্প নেই। আমরা সেজন্য প্রস্তাবও পেয়েছি এবং খুব শিগগির যৌথ উৎপাদনে যাব। অন্যান্য দেশ যৌথ উৎপাদনে গেছে, ওরা ভালো করছে। কোভ্যাক্স থেকে ৬ কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এবং মডার্নার তৈরি ৫৫ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে দেশে এসেছে। এর বাইরে চীনের উপহার হিসেবে পাঠানো এবং কেনা টিকা মিলিয়ে মোট ৫১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

টিকা সংকট কাটছে

আপডেট সময় : ০৩:১৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেরাম ইনস্টিটিউটের চালান আসা বন্ধের কারণে যাদের কোভিড টিকা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া আটকে আছে, তাদের জন্য সুখবর এসেছে। বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ‘কোভ্যাক্সের’ আওতায় জাপান থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার টিকা এসেছে।
গতকাল শনিবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের হাতে টিকাগুলো হস্তান্তর করেন বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। টিকা গ্রহণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আজকে আমরা সৌভাগ্যবান। কারণ, যে টিকার জন্য অনেকে অপেক্ষা করছেন, প্রায় ১৫-১৬ লাখ লোক, এই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন, দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষা করছিলেন। “আমরা খুবই আনন্দিত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ জাপান, আজকে ২ লাখ ৪৫ হাজার অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উপহার দিচ্ছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা ‘গ্যাভি’ এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফর্ম হল ‘কোভ্যাক্স’। অনুন্নত ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোও যাতে করোনাভাইরাসের টিকার ন্যায্য হিস্যা পায়, তা নিশ্চিত করতে এই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে। গত ১৩ জুলাই এক ফেইসবুক পোস্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘কোভ্যাক্সের’ আওতায় জাপান ২৯ লাখ টিকা পাঠাবে। এছাড়া চীন ১০ লাখ ডোজ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেবে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়। সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।কিন্তু দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। যারা প্রথম ডোজে কোভিশিল্ড নিয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যায়নি।
সরকার চীনসহ বিভিন্ন উৎস থেকে বিভিন্ন কোম্পানির টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করলেও যারা প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন, তাদের জন্য ওই টিকার বিকল্প নেই। এ পর্যন্ত যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন তাদের সবার দ্বিতীয় ডোজ পূর্ণ করতে হলে আরও ১৫ লাখ ২১ হাজার ৯৪৭ ডোজ টিকা দরকার। জাপান থেকে আসা প্রায় আড়াই লাখ ডোজ দিয়ে সামান্য একটি অংশ পূরণ হচ্ছে।
আগামী শুক্রবার জাপান থেকে দ্বিতীয় চালানে পাঁচ লাখের মতো টিকা আসবে বলে টিকা গ্রহণ করে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। তিনি বলেন, “আগামী শুক্রবার তারা এর থেকে ডাবলের বেশি দেবে। সর্বমোট তারা ৩০ লাখ ৫০ হাজার অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেবে। আগে বলেছিল ২৯ লাখ দেবে, তার পরে আরও দেড় লাখ যোগ হয়েছে।”
এজন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “জাপান আমাদের পুরোনো বন্ধু, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার থেকে জাপান আমাদের সাথে ছিল। আমাদের এই কঠিনতম সময়ে জাপান আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা খুব ভাগ্যবান জাপান আমাদেরকে টিকা দিচ্ছে।”
কোভিড টিকা নিয়ে সমস্যা কেটে যাচ্ছে জানিয়ে মোমেন বলেন, “আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা পাচ্ছি। আমরা টিকা প্রাপ্তির বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে এসেছি। আগামীতে টিকার সমস্যা হবে না। ”তবে আমরা স্থানীয়ভাবে এটা তৈরি করতে হবে, এটার বিকল্প নেই। আমরা সেজন্য প্রস্তাবও পেয়েছি এবং খুব শিগগির যৌথ উৎপাদনে যাব। অন্যান্য দেশ যৌথ উৎপাদনে গেছে, ওরা ভালো করছে। কোভ্যাক্স থেকে ৬ কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এবং মডার্নার তৈরি ৫৫ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে দেশে এসেছে। এর বাইরে চীনের উপহার হিসেবে পাঠানো এবং কেনা টিকা মিলিয়ে মোট ৫১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে।