ঢাকা ০৪:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

গরমে কিশমিশের পানি পানের উপকারিতা

  • আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: গরমে সুস্থ থাকতে আর্দ্রতার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে কিশমিশের পানি শরীরকে পুষ্টি ও আর্দ্রতা যোগাতে পারে। হেল্থশটস ডটকম’ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের পুষ্টিবিদ এবং লেখক কবিতা দেবগণের মতে, গরমকালে কিশমিশের পানীয় পানের রয়েছে নানান উপকারিতা।
ডেটক্সিফিকেইশন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর করা
প্রতিদিনকার জীবনযাত্রায় দূষণ, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং মানসিকচাপের কারণে ‘টক্সিন’ বা দেহে বিষাক্ত পদার্থ সৃষ্টি হয়। দেবগন বলেন, “কিশমিশের পানীয় দেহে প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে। দেহ পরিষ্কার রাখে এবং ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয়।” কিশমিশে থাকা আন্টিঅক্সিডেন্ট যেমন- পলিফেনল, ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে। বিষাক্ত পদার্থ দূর করে সার্বিকভাবে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
রক্তশূন্যতা দূর করে: আয়রন বা লৌহের স্বল্পতার কারণে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, যা নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। কিশমিশ লৌহের ভালো উৎস যা রক্তের লোহিত রক্ত কণিকা তৈরিতে সহায়তা করে। কিশমিশের পানীয় পান লৌহের ঘাটতি মিটিয়ে এর ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। গরমকালে অনেক বেশি ঘাম হয় ফলে এই ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, তাই সচেতন হতে হবে।
ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা: কিশমিশে আছে অত্যাবশ্যকীয় ইলেক্ট্রোলাইট যেমন- পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা দেহের তরলের ভারসাম্য বজায় রাখে। ইলেক্ট্রোলাইট স্নায়ুর কার্যক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালিত করে, পেশির সংকোচন ও আর্দ্রতার মাত্রা বজায় রাখে। কিশমিশের পানীয় পান ঘামের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি মেটাতে পারে।
শক্তি বাড়ায়: তাপমাত্রা বেশি হলে ক্লান্ত ও দুর্বল অনুভূত হয়। কিশমিশ প্রাকৃতিক শর্করা- গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ যা শক্তি যোগায়। দেবগান ব্যাখ্যা করেন, “কিশমিশের পানীয় পান শরীরকে উজ্জীবিত করে, কর্মচঞ্চল রাখে এবং সারাদিন শক্তি যোগায়। ফলে গরমে নিস্তেজভাব কমে আসে।”
অন্ত্রের সুস্থতা: অন্ত্রের সুস্থতা সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যকর রাখতে সহায়তা করে। কিশমিশের পানীয়র মাধ্যমে খাদ্যআঁশ গ্রহণ করা যায়, যা হজমে সহায়তা করে আর অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম সুস্থ রাখে। এটা নিয়মিত পেট পরিষ্কারে সহায়তা করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। গরমকালে নিয়মিত কিশমিশের পানীয় পান পরিপাক তন্ত্রকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অ্যাসিডিটি কমায়: অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি সমস্যায় অস্বস্তি, বুক জ্বালাপোড়া এবং অ্যাসিড নিঃসরণ সৃষ্টি করে। কিশমিশের তৈরি পানীয়তে আছে অ্যাল্কালাইন উপাদান যা পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি দূর করে ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়। নিয়মিত এই পানীয় পান গরমকালে অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
ওজন কমায়: ওজন কমাতে চাইলে কিশমিশের পানীয়কে একটা মুল্যবান উপায় বলা যায়। এর প্রাকৃতিক শর্করা মিষ্টি খাওয়ার স্বাধ মেটায়, ক্ষুধাভাব কমায় ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আগ্রহ হ্রাস করে। এতে থাকা খাদ্যআঁশ পেট ভরা অনুভূতি দেয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নিয়মিত কিশমিশের পানীয় পান আর্দ্রতা রক্ষা করার পাশাপাশি ওজন কমাতেও সহায়তা করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়: গরমকালে সুস্থ ও চকচকে ত্বকের জন্য কিশমিশের তৈরি পানীয় উপকারী। এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজের ভালো উৎস যা ত্বক সুস্থ সুন্দর রাখতে সহায়তা করে।
এতে থাকা ভিটামিন এ এবং ই ফ্রি রেডিকেল থেকে সুরক্ষিত রাখে, বয়সের ছাপ কমিয়ে তারুণ্য ফুটিয়ে তোলে। নিয়মিত কিশমিশের পানীয় পান গায়ের রংয়ের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং সজীবতা ফুটিয়ে তোলে।
তৈরি পদ্ধতি
কিশমিশের পানীয় তৈরি করা সহজ ও ঝামেলা মুক্ত। প্রয়োজন হবে: ১ কাপ কিশমিশ ও ৪ কাপ পানি।
* প্রথমে কিশমিশ ভালো মতো ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
* কমপক্ষে আট ঘণ্টার জন্য পানিতে কিশমিশ ডুবিয়ে রাখতে হবে।
* এরপর ভালো মতো ব্লেন্ড করে মসৃণ পানীয় তৈরি করে নিতে হবে।
* চাইলে দানাদার অংশ ও বীজ আলাদা করে নেওয়া যায়।
* এভাবে তৈরি করা কিশমিশের পানীয় ঠা-া বা সাধারণ তাপমাত্রায় পান করা আরামদায়ক।
শরীর ও মনের জন্য উপকারী এই পানীয় গরমকালে শরীর আর্দ্র রাখে, পুষ্টি যোগায় এবং সতেজভাব আনে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গরমে কিশমিশের পানি পানের উপকারিতা

আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০২৩

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: গরমে সুস্থ থাকতে আর্দ্রতার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে কিশমিশের পানি শরীরকে পুষ্টি ও আর্দ্রতা যোগাতে পারে। হেল্থশটস ডটকম’ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের পুষ্টিবিদ এবং লেখক কবিতা দেবগণের মতে, গরমকালে কিশমিশের পানীয় পানের রয়েছে নানান উপকারিতা।
ডেটক্সিফিকেইশন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর করা
প্রতিদিনকার জীবনযাত্রায় দূষণ, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং মানসিকচাপের কারণে ‘টক্সিন’ বা দেহে বিষাক্ত পদার্থ সৃষ্টি হয়। দেবগন বলেন, “কিশমিশের পানীয় দেহে প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে। দেহ পরিষ্কার রাখে এবং ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয়।” কিশমিশে থাকা আন্টিঅক্সিডেন্ট যেমন- পলিফেনল, ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে। বিষাক্ত পদার্থ দূর করে সার্বিকভাবে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
রক্তশূন্যতা দূর করে: আয়রন বা লৌহের স্বল্পতার কারণে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, যা নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। কিশমিশ লৌহের ভালো উৎস যা রক্তের লোহিত রক্ত কণিকা তৈরিতে সহায়তা করে। কিশমিশের পানীয় পান লৌহের ঘাটতি মিটিয়ে এর ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। গরমকালে অনেক বেশি ঘাম হয় ফলে এই ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, তাই সচেতন হতে হবে।
ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা: কিশমিশে আছে অত্যাবশ্যকীয় ইলেক্ট্রোলাইট যেমন- পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা দেহের তরলের ভারসাম্য বজায় রাখে। ইলেক্ট্রোলাইট স্নায়ুর কার্যক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালিত করে, পেশির সংকোচন ও আর্দ্রতার মাত্রা বজায় রাখে। কিশমিশের পানীয় পান ঘামের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি মেটাতে পারে।
শক্তি বাড়ায়: তাপমাত্রা বেশি হলে ক্লান্ত ও দুর্বল অনুভূত হয়। কিশমিশ প্রাকৃতিক শর্করা- গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ যা শক্তি যোগায়। দেবগান ব্যাখ্যা করেন, “কিশমিশের পানীয় পান শরীরকে উজ্জীবিত করে, কর্মচঞ্চল রাখে এবং সারাদিন শক্তি যোগায়। ফলে গরমে নিস্তেজভাব কমে আসে।”
অন্ত্রের সুস্থতা: অন্ত্রের সুস্থতা সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যকর রাখতে সহায়তা করে। কিশমিশের পানীয়র মাধ্যমে খাদ্যআঁশ গ্রহণ করা যায়, যা হজমে সহায়তা করে আর অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম সুস্থ রাখে। এটা নিয়মিত পেট পরিষ্কারে সহায়তা করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। গরমকালে নিয়মিত কিশমিশের পানীয় পান পরিপাক তন্ত্রকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অ্যাসিডিটি কমায়: অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি সমস্যায় অস্বস্তি, বুক জ্বালাপোড়া এবং অ্যাসিড নিঃসরণ সৃষ্টি করে। কিশমিশের তৈরি পানীয়তে আছে অ্যাল্কালাইন উপাদান যা পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি দূর করে ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায়। নিয়মিত এই পানীয় পান গরমকালে অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
ওজন কমায়: ওজন কমাতে চাইলে কিশমিশের পানীয়কে একটা মুল্যবান উপায় বলা যায়। এর প্রাকৃতিক শর্করা মিষ্টি খাওয়ার স্বাধ মেটায়, ক্ষুধাভাব কমায় ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আগ্রহ হ্রাস করে। এতে থাকা খাদ্যআঁশ পেট ভরা অনুভূতি দেয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নিয়মিত কিশমিশের পানীয় পান আর্দ্রতা রক্ষা করার পাশাপাশি ওজন কমাতেও সহায়তা করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়: গরমকালে সুস্থ ও চকচকে ত্বকের জন্য কিশমিশের তৈরি পানীয় উপকারী। এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজের ভালো উৎস যা ত্বক সুস্থ সুন্দর রাখতে সহায়তা করে।
এতে থাকা ভিটামিন এ এবং ই ফ্রি রেডিকেল থেকে সুরক্ষিত রাখে, বয়সের ছাপ কমিয়ে তারুণ্য ফুটিয়ে তোলে। নিয়মিত কিশমিশের পানীয় পান গায়ের রংয়ের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং সজীবতা ফুটিয়ে তোলে।
তৈরি পদ্ধতি
কিশমিশের পানীয় তৈরি করা সহজ ও ঝামেলা মুক্ত। প্রয়োজন হবে: ১ কাপ কিশমিশ ও ৪ কাপ পানি।
* প্রথমে কিশমিশ ভালো মতো ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
* কমপক্ষে আট ঘণ্টার জন্য পানিতে কিশমিশ ডুবিয়ে রাখতে হবে।
* এরপর ভালো মতো ব্লেন্ড করে মসৃণ পানীয় তৈরি করে নিতে হবে।
* চাইলে দানাদার অংশ ও বীজ আলাদা করে নেওয়া যায়।
* এভাবে তৈরি করা কিশমিশের পানীয় ঠা-া বা সাধারণ তাপমাত্রায় পান করা আরামদায়ক।
শরীর ও মনের জন্য উপকারী এই পানীয় গরমকালে শরীর আর্দ্র রাখে, পুষ্টি যোগায় এবং সতেজভাব আনে।