ঢাকা ০৪:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে রাজনীতিতে নতুন মোড়

  • আপডেট সময় : ০২:৫০:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর নতুন মোড় নিয়েছে দেশের রাজনীতি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে লাভ-ক্ষতির সমীকরণ। মার্কিন ভিসা নীতির প্রভাবে পাল্টে যাচ্ছে এতদিনের হিসাব-নিকাশ। রাজনৈতিক শিবিরগুলোতে এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
এই নতুন ভিসা নীতিতে কে লাভবান হবে- আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপি, নাকি তৃতীয় কোনো পক্ষ- তা নিয়ে ভেতরে যাই থাক, প্রকাশ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই জানাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে বামদলের নেতারা দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানোকে ইতিবাচক হিসেবে নেননি। স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে এ হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে কঠোর সমালোচনা করেন তারা।
নতুন ভিসানীতির ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের মার্কিন ভিসা দেওয়া হবে না। এমনকি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের পরিবারের অন্য সদস্যদেরও ভিসা দেওয়া হবে না। এ ঘোষণা শুধু রাজনৈতিক দলগুলোকেই প্রভাবিত করেনি, তোলপাড় সৃষ্টি করেছে দেশজুড়ে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, মার্কিন নতুন ভিসানীতিতে বিএনপি ধরশায়ী হবে। আর বিএনপি বলছে, পাতানো নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফের আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার চেষ্টার প্রতিফলনই এই নতুন ভিসানীতি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান যে প্রশ্নবিদ্ধ, মার্কিন ভিসানীতির ঘোষণা সেই বার্তাই দেয়। অন্যদিকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর পরাজয়ও ক্ষমতাসীন দলের জন্য আরেকটি বার্তা। গত এক বছর ধরে বিএনপির আন্দোলনের প্রধান দফা ছিল, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ। দলটির ভাষ্য, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ছিল বিএনপির। কিন্তু সর্বশেষ গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় এবং এ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতায় নতুন করে হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে বিএনপিকে। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত সবার জন্যই ‘সতর্কবার্তা’। শুধু রাজনীতিবিদ নয়- সরকারি কর্মকর্তা, বিচারক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল হতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত ২৪ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ দেশের ভিসানীতি প্রকাশ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তার গুলশানের বাসভবনে ব্রিফ করতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অবশ্য সেখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা কিছুটা বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েন।
এদিকে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিলের ঘোষণার পরদিন গাজীপুর সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। অবশ্য বিরোধী দলের নেতারা দাবি করেছেন, সরকার চাপে পড়ে কারচুপি করেনি। তবে গতকাল বিএনপির কয়েকটি সমাবেশে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটলেও পুলিশ অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নতুন মার্কিন ভিসা নীতির বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্তুষ্ট’ বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক প্রশ্নের জবাবে তার দেশের এ অবস্থানের কথা জানান। অন্যদিকে ভিসা নীতি নিয়ে সরকার মোটেই বিব্রত নয় উল্লেখ করে গত শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘যদি এই আইনের (ভিসা নীতি) কারণে জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ হয়, তা হবে আশীর্বাদ। সুতরাং জ্বালাও-পোড়াও কারা করে? আপনারা জানেন। যারা করে, তাদের সতর্ক হওয়া দরকার। তাদের নেতৃত্বের সতর্ক হওয়া দরকার।’
মার্কিন নতুন ভিসা নীতির কারণে টাকা পাচার কমবে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভিসা নীতি প্রসঙ্গে শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আগেই আমেরিকা র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে আবারও ভিসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিয়েছে। এই ঘোষণা বাংলাদেশের মানুষের জন্য লজ্জাজনক। আমরা অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাছাড়া সংকটের সমাধান হবে না।’
নতুন ভিসানীতি প্রসঙ্গে গত শনিবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। এটি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়। একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে নির্বাচন হোক আমরা সেটা চাই, যুক্তরাষ্ট্রও আগামী নির্বাচনে সেটাই দেখতে চায়। এক্ষেত্রে বিএনপিই মূল বাধা।’
এছাড়া, মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যেই বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের ভিডিওসহ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি পাঠিয়েছেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত। তিনি চিঠিতে দাবি করেছেন, বিএনপির কিছুসংখ্যক শীর্ষস্থানীয় নেতা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন। এমন বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিএনপির নেতাদের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রযোজ্য হবে বলে চিঠিতে আশা প্রকাশ করেছেন মোহাম্মদ এ আরাফাত। গত শুক্রবার রাতে মোহাম্মদ এ আরাফাত তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই চিঠি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। সেখানে তিনি চিঠিতে কী আছে, সেটাও তুলে ধরেছেন। চিঠিতে মোহাম্মদ এ আরাফাত আরও লিখেছেন, ‘এখানে আমি কিছু ভিডিও ফুটেজ সংযুক্ত করেছি, যেখানে আপনি দেখতে পাবেন যে বিএনপির কিছু শীর্ষ নেতা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন। আমি আশা করি, আপনার ভিসা নীতি বিএনপির এই নেতাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।’

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে রাজনীতিতে নতুন মোড়

আপডেট সময় : ০২:৫০:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর নতুন মোড় নিয়েছে দেশের রাজনীতি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে লাভ-ক্ষতির সমীকরণ। মার্কিন ভিসা নীতির প্রভাবে পাল্টে যাচ্ছে এতদিনের হিসাব-নিকাশ। রাজনৈতিক শিবিরগুলোতে এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
এই নতুন ভিসা নীতিতে কে লাভবান হবে- আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপি, নাকি তৃতীয় কোনো পক্ষ- তা নিয়ে ভেতরে যাই থাক, প্রকাশ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই জানাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে বামদলের নেতারা দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাক গলানোকে ইতিবাচক হিসেবে নেননি। স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে এ হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে কঠোর সমালোচনা করেন তারা।
নতুন ভিসানীতির ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের মার্কিন ভিসা দেওয়া হবে না। এমনকি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের পরিবারের অন্য সদস্যদেরও ভিসা দেওয়া হবে না। এ ঘোষণা শুধু রাজনৈতিক দলগুলোকেই প্রভাবিত করেনি, তোলপাড় সৃষ্টি করেছে দেশজুড়ে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, মার্কিন নতুন ভিসানীতিতে বিএনপি ধরশায়ী হবে। আর বিএনপি বলছে, পাতানো নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফের আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার চেষ্টার প্রতিফলনই এই নতুন ভিসানীতি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান যে প্রশ্নবিদ্ধ, মার্কিন ভিসানীতির ঘোষণা সেই বার্তাই দেয়। অন্যদিকে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর পরাজয়ও ক্ষমতাসীন দলের জন্য আরেকটি বার্তা। গত এক বছর ধরে বিএনপির আন্দোলনের প্রধান দফা ছিল, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ। দলটির ভাষ্য, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন ছিল বিএনপির। কিন্তু সর্বশেষ গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় এবং এ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতায় নতুন করে হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে বিএনপিকে। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত সবার জন্যই ‘সতর্কবার্তা’। শুধু রাজনীতিবিদ নয়- সরকারি কর্মকর্তা, বিচারক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল হতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত ২৪ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ দেশের ভিসানীতি প্রকাশ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তার গুলশানের বাসভবনে ব্রিফ করতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অবশ্য সেখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা কিছুটা বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েন।
এদিকে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিলের ঘোষণার পরদিন গাজীপুর সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। অবশ্য বিরোধী দলের নেতারা দাবি করেছেন, সরকার চাপে পড়ে কারচুপি করেনি। তবে গতকাল বিএনপির কয়েকটি সমাবেশে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটলেও পুলিশ অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে নতুন মার্কিন ভিসা নীতির বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্তুষ্ট’ বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক প্রশ্নের জবাবে তার দেশের এ অবস্থানের কথা জানান। অন্যদিকে ভিসা নীতি নিয়ে সরকার মোটেই বিব্রত নয় উল্লেখ করে গত শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘যদি এই আইনের (ভিসা নীতি) কারণে জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ হয়, তা হবে আশীর্বাদ। সুতরাং জ্বালাও-পোড়াও কারা করে? আপনারা জানেন। যারা করে, তাদের সতর্ক হওয়া দরকার। তাদের নেতৃত্বের সতর্ক হওয়া দরকার।’
মার্কিন নতুন ভিসা নীতির কারণে টাকা পাচার কমবে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভিসা নীতি প্রসঙ্গে শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আগেই আমেরিকা র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে আবারও ভিসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিয়েছে। এই ঘোষণা বাংলাদেশের মানুষের জন্য লজ্জাজনক। আমরা অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাছাড়া সংকটের সমাধান হবে না।’
নতুন ভিসানীতি প্রসঙ্গে গত শনিবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। এটি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়। একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে নির্বাচন হোক আমরা সেটা চাই, যুক্তরাষ্ট্রও আগামী নির্বাচনে সেটাই দেখতে চায়। এক্ষেত্রে বিএনপিই মূল বাধা।’
এছাড়া, মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যেই বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের ভিডিওসহ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি পাঠিয়েছেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত। তিনি চিঠিতে দাবি করেছেন, বিএনপির কিছুসংখ্যক শীর্ষস্থানীয় নেতা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন। এমন বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিএনপির নেতাদের ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রযোজ্য হবে বলে চিঠিতে আশা প্রকাশ করেছেন মোহাম্মদ এ আরাফাত। গত শুক্রবার রাতে মোহাম্মদ এ আরাফাত তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই চিঠি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। সেখানে তিনি চিঠিতে কী আছে, সেটাও তুলে ধরেছেন। চিঠিতে মোহাম্মদ এ আরাফাত আরও লিখেছেন, ‘এখানে আমি কিছু ভিডিও ফুটেজ সংযুক্ত করেছি, যেখানে আপনি দেখতে পাবেন যে বিএনপির কিছু শীর্ষ নেতা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছেন। আমি আশা করি, আপনার ভিসা নীতি বিএনপির এই নেতাদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।’