ঢাকা ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

পাঁচশর বেশি শিশু অপহরণকারী চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৩

  • আপডেট সময় : ০২:২৭:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্কুল, মার্কেট, কোচিং কিংবা মাদরাসার সামনে ওত পেতে থাকতো অপহরণকারীরা। কোনো শিশুকে একা পেলেই তার সঙ্গে ভাব জমাতো মা-বাবার আত্মীয়-বন্ধু পরিচয় দিতো তারা। এভাবে কৌশলে অপহরণ করা হতো শিশুদের। এ পর্যন্ত চক্রটি প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ শিশু অপহরণ করেছে। এই চক্রের মূলহোতাসহ ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
পুলিশ বলছে, অপহৃত শিশুর মা-বাবাকে ফোন করে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো শিশুদের। বিশেষ করে যে শিশুরা বাবা-মার ফোন নাম্বার মুখস্থ বলতে পারতো তাদেরকেই টার্গেট করতো তারা।
গ্রেফতার হওয়া এই তিনজনের নাম হলো, চক্রের মূলহোতা মো. মিল্টন মাসুদ (৪৫), মো. শাহীনুর রহমান (৩৮) ও সুফিয়া বেগম (৪৮)। গতকাল শনিবার (৬ মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া আ্যন্ড পাবলিক রিলেসন্স সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম।
তিনি বলেন, গত ২৪ মার্চ রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের হলি ল্যাবের সামনে থেকে ৬ বছরের শিশু শাহিন শেখ হারিয়ে গেলে এ সংক্রান্ত একটি জিডি করা হয় উত্তরা পূর্ব থানায়। তদন্তের সূত্র ধরে প্রথমে অপহরণকারী চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। উত্তরা এয়ারপোর্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে উত্তরা পূর্ব থানার একটি টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্তের পর অভিযান পরিচালনা করে এবং ৩ জনকে গ্রেফতার করে। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে স্কুল, বাজার, রেস্টুরেন্টসহ নানা জায়গায় একা থাকা ও বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে থাকা শিশুদের টার্গেট করে কৌশলে অপহরণ করতো। তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করে। মোর্শেদ আলম আরও বলেন, চক্রের মূলহোতা মো. মিল্টন মাসুদ ও তার সহযোগী মো. শাহীনুর রহমান ৬ থেকে ৭ বছর ধরে ৫০০ থেকে ৬০০ শিশু অপহরণ করে এবং তাদের আত্মীয়দের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ নেয়। ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, টার্গেটকৃত শিশুকে তার বাবা-মায়ের বন্ধু কিংবা ব্যবসায়িক পার্টনার বলে পরিচয় দিতো। তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে এবং কথা বলার এক পর্যায়ে মা-বাবার আর্থিক অবস্থা জেনে নিতো। এরপর কৌশলে নাম্বার নিয়ে শিশুটির মা-বাবাকে ফোন দিয়ে অপহরণ হয়েছে জানিয়ে টাকা দাবি করতো।
উত্তরা এয়ারপোর্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সাধারণত ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে তারা। বাবা-মা ভয়ে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দেয় অপহরণকারীদের কাছে। টাকা দেওয়ার কিছু সময় পরে দেখা যায় অপহৃত শিশুটি বাসায় ফিরে এসেছে। কোনো বাবা-মা যদি টাকা নাও দিতে পারেন তবুও তাদের সন্তান ফিলে চলে এসেছে কয়েকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে জানা গেছে এসব তথ্য। এডিসি তৌহিদুল ইসলাম আরও বলেন, তাদের কাছ থেকে ২টি মোবাইল ফোন ও অপহরণে ব্যাবহৃত ৫টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতার মিল্টন মাসুদের বিরুদ্ধে ৫টি এবং শাহীনুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩টি করে ঢাকা ও গাজীপুরে মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাঁচশর বেশি শিশু অপহরণকারী চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৩

আপডেট সময় : ০২:২৭:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্কুল, মার্কেট, কোচিং কিংবা মাদরাসার সামনে ওত পেতে থাকতো অপহরণকারীরা। কোনো শিশুকে একা পেলেই তার সঙ্গে ভাব জমাতো মা-বাবার আত্মীয়-বন্ধু পরিচয় দিতো তারা। এভাবে কৌশলে অপহরণ করা হতো শিশুদের। এ পর্যন্ত চক্রটি প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ শিশু অপহরণ করেছে। এই চক্রের মূলহোতাসহ ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
পুলিশ বলছে, অপহৃত শিশুর মা-বাবাকে ফোন করে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো শিশুদের। বিশেষ করে যে শিশুরা বাবা-মার ফোন নাম্বার মুখস্থ বলতে পারতো তাদেরকেই টার্গেট করতো তারা।
গ্রেফতার হওয়া এই তিনজনের নাম হলো, চক্রের মূলহোতা মো. মিল্টন মাসুদ (৪৫), মো. শাহীনুর রহমান (৩৮) ও সুফিয়া বেগম (৪৮)। গতকাল শনিবার (৬ মে) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া আ্যন্ড পাবলিক রিলেসন্স সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম।
তিনি বলেন, গত ২৪ মার্চ রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের হলি ল্যাবের সামনে থেকে ৬ বছরের শিশু শাহিন শেখ হারিয়ে গেলে এ সংক্রান্ত একটি জিডি করা হয় উত্তরা পূর্ব থানায়। তদন্তের সূত্র ধরে প্রথমে অপহরণকারী চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। উত্তরা এয়ারপোর্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে উত্তরা পূর্ব থানার একটি টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্তের পর অভিযান পরিচালনা করে এবং ৩ জনকে গ্রেফতার করে। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে স্কুল, বাজার, রেস্টুরেন্টসহ নানা জায়গায় একা থাকা ও বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুরতে থাকা শিশুদের টার্গেট করে কৌশলে অপহরণ করতো। তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করে। মোর্শেদ আলম আরও বলেন, চক্রের মূলহোতা মো. মিল্টন মাসুদ ও তার সহযোগী মো. শাহীনুর রহমান ৬ থেকে ৭ বছর ধরে ৫০০ থেকে ৬০০ শিশু অপহরণ করে এবং তাদের আত্মীয়দের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ নেয়। ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, টার্গেটকৃত শিশুকে তার বাবা-মায়ের বন্ধু কিংবা ব্যবসায়িক পার্টনার বলে পরিচয় দিতো। তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে এবং কথা বলার এক পর্যায়ে মা-বাবার আর্থিক অবস্থা জেনে নিতো। এরপর কৌশলে নাম্বার নিয়ে শিশুটির মা-বাবাকে ফোন দিয়ে অপহরণ হয়েছে জানিয়ে টাকা দাবি করতো।
উত্তরা এয়ারপোর্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সাধারণত ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে তারা। বাবা-মা ভয়ে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দেয় অপহরণকারীদের কাছে। টাকা দেওয়ার কিছু সময় পরে দেখা যায় অপহৃত শিশুটি বাসায় ফিরে এসেছে। কোনো বাবা-মা যদি টাকা নাও দিতে পারেন তবুও তাদের সন্তান ফিলে চলে এসেছে কয়েকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে জানা গেছে এসব তথ্য। এডিসি তৌহিদুল ইসলাম আরও বলেন, তাদের কাছ থেকে ২টি মোবাইল ফোন ও অপহরণে ব্যাবহৃত ৫টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতার মিল্টন মাসুদের বিরুদ্ধে ৫টি এবং শাহীনুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩টি করে ঢাকা ও গাজীপুরে মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।