ঢাকা ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশের অনুরোধ কতটা রাখে ফেসবুক ইউটিউব টিকটক?

  • আপডেট সময় : ০৯:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরাসরি আপত্তিকর লিংক সরানো, কনটেন্ট ব্লক করার মতো সক্ষমতা নেই দেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র। সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষ বরাবর অনুরোধ পাঠিয়ে থাকে। সংশ্লিষ্টরা তাদের গাইডলাইন ও কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে যায়, এমন সব লিংক বা কনটেন্ট অপসারণ করে বাংলাদেশের অনুরোধ রাখার চেষ্টা করে। তবে বাংলাদেশ থেকে যেসব অনুরোধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কাছে যায় তার তিন ভাগের এক ভাগেরও কম অনুরোধে তারা সাড়া দেয়।

বিটিআরসি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর কনটেন্ট অপসারণ বা প্রদর্শিত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মাধ্যমগুলোর (ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, বিগো, লাইকি, ইমো ও টুইটার) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক যোগাযোগ করে। জানা গেছে, এরকম অনুরোধের মধ্যে এক তৃতীয়াংশের কম আপত্তিকর কনটেন্ট অপসারণ বা প্রদর্শীত না হওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব আগে আমাদের অনুরোধে যে পরিমাণ সাড়া দিতো বর্তমানে তা বেড়েছে। এটা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের কারণেই সম্ভব হয়েছে।

২০১৮ সালে স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে মন্ত্রীর সঙ্গে ফেসবুকের বৈঠকের পর থেকে অনুরোধে সাড়া দেওয়ার এই হার বেড়েছে বলে তিনি জানান। বর্তমানে ফেসবুক, ইউটিউসব-সহ অন্যান্য মাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মন্ত্রীর নিয়মিত বৈঠক, যোগাযোগ হচ্ছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অনুরোধে সাড়া দেওয়ার হার আরও বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।

বিটিআরটির এক কমিশন বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, সরকার ২০২০ সালে ফেসবুকের কাছে অপসারণের জন্য লিংক পাঠায় ১৫ হাজার ৮২৬টি, ফেসবুক লিংক অপরাসণ করে চার হাজার ১১৯টি। অপসারণের শতকরা হার ২৬ দশমিক শূন্য ৩। ২০২১ সালে ২৬ হাজার ৫৫৭টি লিংক অপরসারণের জন্য অনুরোধ করা হলে ফেসবুক আট হাজার ৯১৬টি লিংক অপসারণ করে। লিংক অপসারণের শতকরা হার ৩৩ দশমিক ৫৭। ২০২২ সালে ৩৭ হাজার ৩৪৫টি লিংক অপসারণের জন্য ফেসবুককে পাঠালে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ১২ হাজার ৫১৯টি লিংক অপসারণ করে। লিংক অপসারণের হার ৩৩ দশমিক ৫২।

২০২০ সালে ১৬১টি ভিডিও লিংক অপসারণের জন্য বাংলাদেশ থেকে অনুরোধ পাঠানো হলে ৩১টি লিংক অপসারণ করে ইউটিউব। লিংক অপসারণের শতকরা হার ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২০২১ সালে দুই হাজার ৪৩টি লিংক অপসারণের জন্য অনুরোধের বিপরীতে এক হাজার ১৩টি লিংক অপসারণ করা হয়। লিংক অপসারণের শতকরা হার ৪৯ দশমিক ৫৮। ২০২২ সালে তিন হাজার ৮৩২টি লিংক অপসারণের জন্য ইউটিউবকে বাংলাদেশ থেকে অনুরোধ পাঠানো হলে মাত্র ৩৯১টি লিংক অপসারণ করে। লিংক অপসারণের শতকরা হার ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০২১ সালে টিকটকের ৯টি লিংক অপসারণের জন্য বাংলাদেশ অনুরোধ জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পাঁচটি লিংক অপসারণ করে। ২০২২ সালে ছয় হাজার ৮৭টি লিংক অপসারণের অনুরোধ জানালে দুই হাজার ১৯টি লিংক অপসারণ করা হয়। ২০২২ সালে বিগো, লাইকি ও ইমোর ৭০টি লিংক অপসারণের জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুরোধ জানালে সবকটি লিংকই অপসারণ করে সংশ্লিষ্টরা। ২০২২ সালে টুইটারের দুই হাজার ৪১৩টি লিংক অপসারণের অনুরোধ জানানো হলে মাত্র ১৫২টি লিংক সরানো হয়। দেখা গেছে, ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, বিগো, লাইকি, ইমো ও টুইটারের কাছে ৯৪ হাজার ৩৫৩টি লিংক অপসারণের জন্য অনুরোধ জানানো হলে সংশ্লিষ্টরা ২৯ হাজার ২৩৫টি লিংক অপসারণ করে। বাংলাদেশের অনুরোধের পর লিংক অপসারণের হার শতকরা ৩৩ দশমিক ৯৮ ভাগ। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আপক্তিকর বা ক্ষতিকর কনটেন্ট শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলো নিয়ে আমাদের দেশের অনুরোধের পরেও আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইনের শর্ত ভঙ্গ হয়নি বলে তা অপসারণ বা বন্ধ করছে না। অনলাইন জুয়ার কথা উল্লেখ করে তাতে বলা হয়, অনলাইন জুয়া বিশ্বের অনেক দেশে বৈধ হলেও সব ধরনের জুয়া খেলা প্রকাশ্য জুয়া আইন-১৮৬৭-এর মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু গৃহীত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইনের শর্ত ভঙ্গ হয়নি । প্রায়ই এ ধরনের কনটেন্ট শনাক্ত করার পরে বন্ধ বা অপসারণের অনুরোধ করা হলে তা বন্ধের হার শতভাগ নয়।

 

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক নারীকে দুই ভাই বিয়ে করে বললেন- আমরা গর্বিত

বাংলাদেশের অনুরোধ কতটা রাখে ফেসবুক ইউটিউব টিকটক?

আপডেট সময় : ০৯:১৮:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

প্রযুক্তি ডেস্ক : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরাসরি আপত্তিকর লিংক সরানো, কনটেন্ট ব্লক করার মতো সক্ষমতা নেই দেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র। সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষ বরাবর অনুরোধ পাঠিয়ে থাকে। সংশ্লিষ্টরা তাদের গাইডলাইন ও কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে যায়, এমন সব লিংক বা কনটেন্ট অপসারণ করে বাংলাদেশের অনুরোধ রাখার চেষ্টা করে। তবে বাংলাদেশ থেকে যেসব অনুরোধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কাছে যায় তার তিন ভাগের এক ভাগেরও কম অনুরোধে তারা সাড়া দেয়।

বিটিআরসি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর কনটেন্ট অপসারণ বা প্রদর্শিত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মাধ্যমগুলোর (ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, বিগো, লাইকি, ইমো ও টুইটার) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক যোগাযোগ করে। জানা গেছে, এরকম অনুরোধের মধ্যে এক তৃতীয়াংশের কম আপত্তিকর কনটেন্ট অপসারণ বা প্রদর্শীত না হওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব আগে আমাদের অনুরোধে যে পরিমাণ সাড়া দিতো বর্তমানে তা বেড়েছে। এটা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের কারণেই সম্ভব হয়েছে।

২০১৮ সালে স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে মন্ত্রীর সঙ্গে ফেসবুকের বৈঠকের পর থেকে অনুরোধে সাড়া দেওয়ার এই হার বেড়েছে বলে তিনি জানান। বর্তমানে ফেসবুক, ইউটিউসব-সহ অন্যান্য মাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মন্ত্রীর নিয়মিত বৈঠক, যোগাযোগ হচ্ছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অনুরোধে সাড়া দেওয়ার হার আরও বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।

বিটিআরটির এক কমিশন বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, সরকার ২০২০ সালে ফেসবুকের কাছে অপসারণের জন্য লিংক পাঠায় ১৫ হাজার ৮২৬টি, ফেসবুক লিংক অপরাসণ করে চার হাজার ১১৯টি। অপসারণের শতকরা হার ২৬ দশমিক শূন্য ৩। ২০২১ সালে ২৬ হাজার ৫৫৭টি লিংক অপরসারণের জন্য অনুরোধ করা হলে ফেসবুক আট হাজার ৯১৬টি লিংক অপসারণ করে। লিংক অপসারণের শতকরা হার ৩৩ দশমিক ৫৭। ২০২২ সালে ৩৭ হাজার ৩৪৫টি লিংক অপসারণের জন্য ফেসবুককে পাঠালে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ১২ হাজার ৫১৯টি লিংক অপসারণ করে। লিংক অপসারণের হার ৩৩ দশমিক ৫২।

২০২০ সালে ১৬১টি ভিডিও লিংক অপসারণের জন্য বাংলাদেশ থেকে অনুরোধ পাঠানো হলে ৩১টি লিংক অপসারণ করে ইউটিউব। লিংক অপসারণের শতকরা হার ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২০২১ সালে দুই হাজার ৪৩টি লিংক অপসারণের জন্য অনুরোধের বিপরীতে এক হাজার ১৩টি লিংক অপসারণ করা হয়। লিংক অপসারণের শতকরা হার ৪৯ দশমিক ৫৮। ২০২২ সালে তিন হাজার ৮৩২টি লিংক অপসারণের জন্য ইউটিউবকে বাংলাদেশ থেকে অনুরোধ পাঠানো হলে মাত্র ৩৯১টি লিংক অপসারণ করে। লিংক অপসারণের শতকরা হার ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০২১ সালে টিকটকের ৯টি লিংক অপসারণের জন্য বাংলাদেশ অনুরোধ জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পাঁচটি লিংক অপসারণ করে। ২০২২ সালে ছয় হাজার ৮৭টি লিংক অপসারণের অনুরোধ জানালে দুই হাজার ১৯টি লিংক অপসারণ করা হয়। ২০২২ সালে বিগো, লাইকি ও ইমোর ৭০টি লিংক অপসারণের জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুরোধ জানালে সবকটি লিংকই অপসারণ করে সংশ্লিষ্টরা। ২০২২ সালে টুইটারের দুই হাজার ৪১৩টি লিংক অপসারণের অনুরোধ জানানো হলে মাত্র ১৫২টি লিংক সরানো হয়। দেখা গেছে, ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, বিগো, লাইকি, ইমো ও টুইটারের কাছে ৯৪ হাজার ৩৫৩টি লিংক অপসারণের জন্য অনুরোধ জানানো হলে সংশ্লিষ্টরা ২৯ হাজার ২৩৫টি লিংক অপসারণ করে। বাংলাদেশের অনুরোধের পর লিংক অপসারণের হার শতকরা ৩৩ দশমিক ৯৮ ভাগ। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আপক্তিকর বা ক্ষতিকর কনটেন্ট শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলো নিয়ে আমাদের দেশের অনুরোধের পরেও আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইনের শর্ত ভঙ্গ হয়নি বলে তা অপসারণ বা বন্ধ করছে না। অনলাইন জুয়ার কথা উল্লেখ করে তাতে বলা হয়, অনলাইন জুয়া বিশ্বের অনেক দেশে বৈধ হলেও সব ধরনের জুয়া খেলা প্রকাশ্য জুয়া আইন-১৮৬৭-এর মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু গৃহীত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইনের শর্ত ভঙ্গ হয়নি । প্রায়ই এ ধরনের কনটেন্ট শনাক্ত করার পরে বন্ধ বা অপসারণের অনুরোধ করা হলে তা বন্ধের হার শতভাগ নয়।