রয়টার্স : সম্প্রতি বিশ্ব মিডিয়ায় বেশ তোলপাড় তুলেছে মার্কিন গোপন নথি ফাঁসের খবর। ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা গেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। এবার ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা গেল ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতে রাজি হয়েছে সার্বিয়া। ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিমা জোট একে একে রাশিয়ার ওপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা চাপালেও এই পথ অনুসরণ করেনি সার্বিয়া। ইউরোপের একমাত্র দেশ হিসেবে তারাই রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দিতে অস্বীকার করেছে। কিন্তু দেশটি কিয়েভকে অস্ত্র সরবরাহ করতে রাজি হয়েছে বা ইতিমধ্যেই পাঠিয়েছে বলে পেন্টাগনের নথি থেকে জানা গেছে।
নথিটি সামরিক প্রশিক্ষণ এবং ‘মারাত্মক সাহায্য’ বা অস্ত্রের জন্য ইউক্রেনের অনুরোধে ইউরোপীয় সরকারের প্রতিক্রিয়াগুলির একটি সারসংক্ষেপ। সম্প্রতি এটি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। চার্ট দেখায় যে সার্বিয়া ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে অস্বীকার করেছে, কিন্তু প্রাণঘাতী সাহায্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বা ইতিমধ্যেই সরবরাহ করেছে। এটি আরও বলেছে, সার্বিয়ার রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করার সামরিক সক্ষমতা রয়েছে। নথিটিকে গোপন এবং নোফরন (নো ফরেইন ন্যাশনাল) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, এটি বিদেশি গোয়েন্দা পরিষেবা এবং সামরিক বাহিনীতে বিতরণ নিষিদ্ধ। নথিটি ২ মার্চ তারিখে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের অফিসের সিল দিয়ে এমবস করা হয়েছে। তবে রয়টার্স স্বাধীনভাবে নথিটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুসিকের অফিস এবং ইউক্রেনীয় দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি। পেন্টাগনও সার্বিয়ার নথির উল্লেখ সম্পর্কে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেয়নি এবং এর আগে ফাঁস হওয়া নথিগুলির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির গভীর ঐতিহাসিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও ভুসিকের সরকার ইউক্রেন যুদ্ধে নিরপেক্ষতা স্বীকার করেছে। পররাষ্ট্র নীতি ইনস্টিটিউট জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের পূর্ব ইউরোপীয় বিশেষজ্ঞ জানুস বুগাজস্কি বলেছেন, ‘যদি এই নথিটি সঠিক হয় তবে এটি রাশিয়ার সঙ্গে ভুসিকের সদৃশতা দেখায় বা ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য তিনি ওয়াশিংটনের প্রচ- চাপের মধ্যে রয়েছেন।’ ফাঁসের তদন্ত করছে বিচার বিভাগ। পেন্টাগন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতির মূল্যায়ন করছে।
পেন্টাগন চার্ট ইউক্রেনের সাহায্যের জন্য অনুরোধের প্রতিক্রিয়াগুলিকে চারটি বিভাগে বিভক্ত করেছে। যেসব দেশ প্রশিক্ষণ এবং প্রাণঘাতী সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল; যেগুলো ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ, প্রাণঘাতী সহায়তা বা উভয়ই প্রদান করেছে এবং যে দেশ সামরিক সক্ষমতা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছাসহ ‘ভবিষ্যতে প্রাণঘাতী সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’