নিজস্ব প্রতিবেদক : পোড়া আবর্জনা সরিয়ে বালি ছড়িয়ে সমান করা হচ্ছে মাটি; তার ওপর ইট বিছিয়ে চৌকি পেতে ঈদের আগে বিকিকিনির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে বঙ্গবাজার। আজ বুধবার থেকে অস্থায়ী দোকান পেতে ঈদের বাজারে বেচাকেনার সুযোগ পাবেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
এক সপ্তাহ আগে ভয়াবহ আগুনে ভষ্মীভূত হয় দেশে পোশাকের সবচেয়ে বড় এই পাইকারি বাজার। ঈদের বাকি আর দুসপ্তাহেরও কম। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের কিছুটা হলেও ব্যবসার সুযোগ করে দিতে এ উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
সিটি করপোরেশরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের জানান, বঙ্গবাজারের ১ দশমিক ৭৯ একর জায়গা জুড়ে বালি ও ইট বিছানোর কাজ চলছে। দুদিন আগে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছ থেকে ঘোষণা এসেছিল, পোড়া বর্জ্য সরিয়ে দ্রুত জায়গা সমতল করা হবে, যাতে ঈদের আগে ব্যবসায়ীরা চৌকি বিছিয়ে কাপড় নিয়ে বসতে পারেন।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদের তত্ত্বাবধানে, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে এই জায়গা প্রস্তুত করা হচ্ছে। করপোরেশন গঠিত তদন্ত কমিটিও এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছে। আবু নাছের বলেন, পুরো এলাকায় ১৫০ গাড়ি বালি ফেলে প্রায় আড়াই লাখ ইট বিছানো হবে। ইতোমধ্যে ৪০ গাড়ি বালি ফেলে প্রায় ৯০ হাজার ইট বিছানোর কাজ শেষ হয়েছে।
“আজকের মধ্যে পুরো এলাকায় বালি ফেলা ও ইট বিছাতে করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন।“
সিটি করপোরেশনের এই কর্মকর্তা জানান, সোমবার সকাল থেকে মার্কেটের জায়গা থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজ চলছে। করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. হায়দর আলীর নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল ভোর ৬টার দিকে আগুন লাগে বঙ্গবাজারে। বেলার বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে আগুনের তীব্রতা। ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, গুলিস্তান ইউনিট, মহানগরী ইউনিট, আদর্শ ইউনিট, মহানগর কমপ্লেক্স সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এনেক্সকো টাওয়ার, ইসলামিয়া মার্কেট ও বঙ্গ হোমিও মার্কেট। এ অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পাঁচ হাজারের মত দোকানি-ব্যবসায়ী, যারা ঈদ সামনে রেখে লাখ লাখ টাকার কাপড় তুলেছিলেন দোকানে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের একটি অংশ ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় গত রোববার থেকে বঙ্গবাজারের দক্ষিণ পাশের সড়কে চৌকি বসিয়ে পণ্য বিক্রি শুরু করেছেন। ধ্বাংসাবশেষ এলাকায় পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনীর পাশেই তারা বসিয়েছেন চৌকি।
রোববার বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর দক্ষিণের মেয়র তাপস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “মঙ্গলবারে না হলেও বুধবার নাগাদ যেন তারা (ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা) সেখানে চৌকি বিছিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারে, এজন্য পরিষ্কার করার পরে সেই জায়গাটা সমতল করব। পুরো ব্যবস্থাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন করে দেবে। তারপর চৌকি বিছিয়ে তারা সেখানে ব্যবসা শুরু করতে পারবে।” তাপস জানিয়েছিলেন পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ সরানো হলে সেখানে ইট বিছানো হবে। তার উপর ৫ ফিট বাই সাড়ে ৩ ফিট আকারের সাড়ে ১৭ বর্গফুটের চৌকি বসানো হবে। “একাধিক দোকানের মালিকও একটি করে চৌকি বসাতে পারবে। যাতে তারা অন্তত ঈদের সময়টুকু ব্যবসা করতে পারেন।”য়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
চৌকি পেতে অস্থায়ী দোকানের জন্য প্রস্তুত পোড়া বঙ্গবাজার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ