নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে ম্যাগনেটিক কয়েন প্রতারক চক্রের দুই সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল। এ সময় কথিত চারটি ম্যাগনেটিক কয়েন, চারটি মোবাইল সেট, একটি পিতলের বোতল (প্রতারকরা যা ম্যাগনেট হিসেবে পরিচয় দেয়) সহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সিআইডির সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার সার্বিক তত্ত্বাবধানে সিরিয়াস ক্রাইমের একটি চৌকস দল বুধবার দুপুরে দুপুরে রাজধানীর গুলশান এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযানে মো. আব্দুল কাদের ওরফে কবির এবং মহিউদ্দিন শিকদার নামের কথিত ম্যাগনেটিক কয়েনের মাধ্যমে প্রতারনা করে টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় কাছ থেকে কথিত চারটি ম্যাগনেটিক কয়েন, চারটি মোবাইল সেট, একটি পিতলের বোতল (প্রতারকরা যা ম্যাগনেট হিসেবে পরিচয় দেয়) সহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সিআইডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা অন্যান্য প্রতারকদের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ম্যাগনেটিক কয়েন বিক্রির নামে প্রতারনা করে আসছিল। আলোচ্য ভুক্তভোগী একজন ব্যবসায়ী। তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে আটককৃতরা ফোনে জানায় যে, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তারা তার সঙ্গে দেখা করতে চান। ভুক্তভোগী পরবর্তীতে গুলশানের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে তার পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে প্রতারকদের সঙ্গে দেখা করলে আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে তাকে ম্যাগনেটিক কয়েন সম্বন্ধে ধারণা দিয়ে বলেন এই কয়েন বিমান তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর দেশে বা বিদেশে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। ভুক্তভোগী প্রতারকদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করেন যে, এ সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। আর তিনি এ ব্যবসায় জড়াতেও চান না। তবে আটককৃতদের অনুরোধে বিশাল লাভের প্রলোভনে পরে বাদী রাজি হন। পরেরদিন প্রতারক মঞ্জুল ওরফে মঞ্জু এবং মাহফুজ সরকার তাকে গুলশান-২ এর একটি হোটেলে নিয়ে যান। আর সেখানে অন্য আসামি দেবাশীষ, ওমর ফারুক ওরফে জাহিদ খান, লাকি বেগম রোকেয়া, আব্দুল হক, ড. এ.কে. খানদের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন ও আসামিদের হেফাজতে থাকা কথিত ম্যাগনেটিক কয়েনটি দেখান। তখন ভুক্তভোগীকে গ্রেপ্তারকৃতরা ম্যাগনেট সম্পর্কে ধারণা দেন। আর ম্যাগনেট ব্যবসায়ে প্রচুর লাভের প্রলোভন দেখান। কথা বার্তার একপর্যায়ে আসামিরা জানান তিন কোটি টাকা পেলে ম্যাগনেটটি ভুক্তভোগীকে দিয়ে দেবেন। বাদী আসামিদের প্রলোভনে পরে নগদ ত্রিশ লাখ টাকা ও দশ লাখ টাকার একটি চেক দিলে আসামিরা ওই ম্যাগনেটটি একটি প্যাকেটে করে তাকে গাড়িতে তুলে দেন। বাদী বাড়িতে এসে প্যাকেটটি খুলে দেখে সেখানে কিছু নাই। তখন তার সন্দেহ হলে আসামিদের ফোন করেন। তখন আসামিরা জানান, এই ম্যাগনেটটি পেতে হলে আরো আট লাখ টাকা দিতে হবে। পরবর্তীতে তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে সিআইডিতে অভিযোগ করেন। গুলশান থানার মামলা নম্বর- ৩৪ (০৩) ২২ ধারা ৪২০/৪০৬ পেনাল কোড। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা আরও অনেকের কাছ থেকে প্রতারণা করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন বলে স্বীকার করেন। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের তথ্যসংগ্রহ করে গ্রেপ্তারের জন্য আসামিদের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গুলশানে ম্যাগনেটিক কয়েন প্রতারক চক্রের দুই সদস্য গ্রপ্তার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ