ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণ করে যেসব খাবার

  • আপডেট সময় : ১০:০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩
  • ৪৭৩ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : দেহের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে ইলেক্ট্রোলাইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এই বিষয় সম্পর্কে আগে একটু জেনে নেওয়া যায়।
ইলেক্ট্রোলাইট কী?
ইনসাইডার ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ও ‘কেলিজোন্স নিউট্রিশন ডটকম’য়ের প্রতিষ্ঠাতা কেলি জোন্স বলেন, “ইলেক্ট্রোলাইট শরীরে পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যা স্নায়ুর প্রতিক্রিয়া থেকে শুরু করে পেশির সংকোচন প্রসারণ পর্যন্ত সব কিছুতে সহায়তা করে।” দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি দেখা দেওয়া খুব সহজ বিষয়। যেমন- ব্যায়ামের ফলে হওয়া ঘাম, বমি বা ডায়রিয়ার কারণে হওয়া ক্লান্তিভাব ইত্যাদি এর ঘাটতির লক্ষণ।
এই ঘাটতির ফলে পেশিতে টান, ব্যথা, দুর্বলতা, হৃদগতিতে অসঙ্গতি, পক্ষাঘাত এমনকি গুরুতর পর্যায়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কয়েকটা ইলেক্ট্রোলাইটের মধ্যে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম বেশি গুরুত্বপূর্ণ। জোন্স বলেন, “এগুলো দেহের ভেতরে ও বাইরের কোষের তরলের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। দেহকে আর্দ্র রাখে। অন্যান্য ইলেক্ট্রোলাইটের মধ্যে রয়েছে: ক্লোরাইড, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। পরিশ্রমের ফলে শরীর থেকে ঘামের সঙ্গে প্রচুর সোডিয়াম বের হয়ে যায়। একই কারণে যারা বমি করছে বা শ্লেষ্মায় ভোগার ফলে ক্লান্তি অনুভব করছে তাদের ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োজ্য। দেহের ইলেক্ট্রোলাইটের চাহিদা পূরণ করে এই ক্লান্তিভাব কমানো যায়।
ইলেক্ট্রোলাইট পাওয়ার উপায়
খাবারের মাধ্যমে নানানভাবেই ইলেক্ট্রোলাইট পাওয়া যায়। এখানে সহজলভ্য কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জানানো হল।
ডাবের পানি : এক কাপ ডাবের পানিতে রয়েছে ৩৫০ মি.গ্রা. পটাশিয়াম যা দৈনিক চাহিদার ১৩ শতাংশ পূরণ করে। হাতের কাছে পাওয়া যায় বলে বোতলের পানির বিকল্প হিসেবেও এটা পান করা যায়।
কলা : ইলেক্ট্রোলাইটের চমৎকার উৎস। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম। একটা সাধারণ মাপের কলায় ৪২২ মি.গ্রা. পটাসিয়াম থাকে। এতে প্রোটিনের মাত্রা বাড়াতে সঙ্গে বাদামের মাখন ও আঁশের চাহিদা পূরণে ওটমিল খাওয়া যেতে পারে।
দুধের তৈরি খাবার : ক্যালসিয়াম ও সোডিয়ামের ভালো উৎস। ১০০ মি.লি. দুধে ১৯৯ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম ও ২৮১ মি.গ্রা. পটাসিয়াম থাকে। এক আউন্স পনিরে ৩৩৬ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম এবং ২৬.১ মিগ্রা সোডিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়াও সবুজ সবজি, মটর, সয়া পণ্য, কাঠ বাদাম, তাহিনি এবং বকচয় খনিজের ভালো উৎস বলে জানান, জোন্স। সোডিয়াম ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে কাঠ বাদাম স্বাদের রুটির সঙ্গে এক টুকরা পনির খাওয়া যেতে পারে।
সাদা ও পোল্ট্রি মাংস : হাঁস মুরগির মাংস ইলেক্ট্রোলাইট যোগাতে সহায়তা করে। এসব থেকে মিলবে পটাসিয়াম এবং সোডিয়াম। জোন্স বলেন, “জিংক পাওয়ার কয়েকটি উৎস হল- শেল মাছ, মটর ও ডাল, হেম্প বীজ।”
ফলের রস : কমলা, লেমনেইড ও কলা ইলেক্ট্রোলাইট সরবারহ করে। তবে সবচেয়ে ভালো কাজ করে ডালিমের রস। এক কাপ ডালিমের রসে ৫৩৩ মি.গ্রা. পটাসিয়াম থাকে। সকালের নাস্তা অথবা দিনের যে কোনো সময়ে এক গ্লাস ফলের রস পান ইলেক্ট্রোলাইট যোগাতে সহায়তা করে। সুস্থ থাকতে চাইলে বাড়তি চিনি ছাড়া শতভাগ খাঁটি ফলের রস খাওয়া উচিত।
তরমুজ : কেবল ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ নয়, জলীয় পদার্থ বেশি থাকায় শরীর আর্দ্র রাখে।
গরমকালে প্রচুর পরিমাণে তরমুজ খাওয়া যেতে পারে। এটা দেহের আর্দ্রতা রক্ষার পাশাপাশি ইলেক্ট্রোলাইটের যোগান দেয়। মাঝারি মাপের তরমুজে থাকে ৩২০ মি.গ্রা. (১১ শতাংশ) পটাসিয়াম। তরমুজের ৯২ শতাংশ পানি হওয়াতে ব্যায়ামের পরে নাস্তা হিসেবে খাওয়া যায়। ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় পান: বাজারে এরকম বোতলজাত পানি কিনতে পাওয়া যায়। তবে বাড়তি চিনি আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। কেনার আগে অবশ্যই লেবেল দেখে নিতে হবে। সাধারণত খুব বেশি লম্বা সময় ব্যায়াম না করলে ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয়র প্রয়োজন হয় না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণ করে যেসব খাবার

আপডেট সময় : ১০:০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৩

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : দেহের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে ইলেক্ট্রোলাইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এই বিষয় সম্পর্কে আগে একটু জেনে নেওয়া যায়।
ইলেক্ট্রোলাইট কী?
ইনসাইডার ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ও ‘কেলিজোন্স নিউট্রিশন ডটকম’য়ের প্রতিষ্ঠাতা কেলি জোন্স বলেন, “ইলেক্ট্রোলাইট শরীরে পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যা স্নায়ুর প্রতিক্রিয়া থেকে শুরু করে পেশির সংকোচন প্রসারণ পর্যন্ত সব কিছুতে সহায়তা করে।” দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি দেখা দেওয়া খুব সহজ বিষয়। যেমন- ব্যায়ামের ফলে হওয়া ঘাম, বমি বা ডায়রিয়ার কারণে হওয়া ক্লান্তিভাব ইত্যাদি এর ঘাটতির লক্ষণ।
এই ঘাটতির ফলে পেশিতে টান, ব্যথা, দুর্বলতা, হৃদগতিতে অসঙ্গতি, পক্ষাঘাত এমনকি গুরুতর পর্যায়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কয়েকটা ইলেক্ট্রোলাইটের মধ্যে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম বেশি গুরুত্বপূর্ণ। জোন্স বলেন, “এগুলো দেহের ভেতরে ও বাইরের কোষের তরলের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। দেহকে আর্দ্র রাখে। অন্যান্য ইলেক্ট্রোলাইটের মধ্যে রয়েছে: ক্লোরাইড, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। পরিশ্রমের ফলে শরীর থেকে ঘামের সঙ্গে প্রচুর সোডিয়াম বের হয়ে যায়। একই কারণে যারা বমি করছে বা শ্লেষ্মায় ভোগার ফলে ক্লান্তি অনুভব করছে তাদের ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োজ্য। দেহের ইলেক্ট্রোলাইটের চাহিদা পূরণ করে এই ক্লান্তিভাব কমানো যায়।
ইলেক্ট্রোলাইট পাওয়ার উপায়
খাবারের মাধ্যমে নানানভাবেই ইলেক্ট্রোলাইট পাওয়া যায়। এখানে সহজলভ্য কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জানানো হল।
ডাবের পানি : এক কাপ ডাবের পানিতে রয়েছে ৩৫০ মি.গ্রা. পটাশিয়াম যা দৈনিক চাহিদার ১৩ শতাংশ পূরণ করে। হাতের কাছে পাওয়া যায় বলে বোতলের পানির বিকল্প হিসেবেও এটা পান করা যায়।
কলা : ইলেক্ট্রোলাইটের চমৎকার উৎস। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম। একটা সাধারণ মাপের কলায় ৪২২ মি.গ্রা. পটাসিয়াম থাকে। এতে প্রোটিনের মাত্রা বাড়াতে সঙ্গে বাদামের মাখন ও আঁশের চাহিদা পূরণে ওটমিল খাওয়া যেতে পারে।
দুধের তৈরি খাবার : ক্যালসিয়াম ও সোডিয়ামের ভালো উৎস। ১০০ মি.লি. দুধে ১৯৯ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম ও ২৮১ মি.গ্রা. পটাসিয়াম থাকে। এক আউন্স পনিরে ৩৩৬ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম এবং ২৬.১ মিগ্রা সোডিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়াও সবুজ সবজি, মটর, সয়া পণ্য, কাঠ বাদাম, তাহিনি এবং বকচয় খনিজের ভালো উৎস বলে জানান, জোন্স। সোডিয়াম ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে কাঠ বাদাম স্বাদের রুটির সঙ্গে এক টুকরা পনির খাওয়া যেতে পারে।
সাদা ও পোল্ট্রি মাংস : হাঁস মুরগির মাংস ইলেক্ট্রোলাইট যোগাতে সহায়তা করে। এসব থেকে মিলবে পটাসিয়াম এবং সোডিয়াম। জোন্স বলেন, “জিংক পাওয়ার কয়েকটি উৎস হল- শেল মাছ, মটর ও ডাল, হেম্প বীজ।”
ফলের রস : কমলা, লেমনেইড ও কলা ইলেক্ট্রোলাইট সরবারহ করে। তবে সবচেয়ে ভালো কাজ করে ডালিমের রস। এক কাপ ডালিমের রসে ৫৩৩ মি.গ্রা. পটাসিয়াম থাকে। সকালের নাস্তা অথবা দিনের যে কোনো সময়ে এক গ্লাস ফলের রস পান ইলেক্ট্রোলাইট যোগাতে সহায়তা করে। সুস্থ থাকতে চাইলে বাড়তি চিনি ছাড়া শতভাগ খাঁটি ফলের রস খাওয়া উচিত।
তরমুজ : কেবল ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ নয়, জলীয় পদার্থ বেশি থাকায় শরীর আর্দ্র রাখে।
গরমকালে প্রচুর পরিমাণে তরমুজ খাওয়া যেতে পারে। এটা দেহের আর্দ্রতা রক্ষার পাশাপাশি ইলেক্ট্রোলাইটের যোগান দেয়। মাঝারি মাপের তরমুজে থাকে ৩২০ মি.গ্রা. (১১ শতাংশ) পটাসিয়াম। তরমুজের ৯২ শতাংশ পানি হওয়াতে ব্যায়ামের পরে নাস্তা হিসেবে খাওয়া যায়। ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় পান: বাজারে এরকম বোতলজাত পানি কিনতে পাওয়া যায়। তবে বাড়তি চিনি আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। কেনার আগে অবশ্যই লেবেল দেখে নিতে হবে। সাধারণত খুব বেশি লম্বা সময় ব্যায়াম না করলে ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয়র প্রয়োজন হয় না।