ঢাকা ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইভ্যালিতে একদিনে ২০০ কোটি টাকার অর্ডার

  • আপডেট সময় : ১০:৫৭:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১
  • ৫৩ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : সম্প্রতি সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ইভ্যালির বিরুদ্ধে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। এসব কিছুকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল। তার দাবি, ইভ্যালিকে একটি লাভজনক ও টেকসই প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন তিনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্টাটাসও দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে টি১০ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তাদের লয়্যাল কাস্টমার বেইজ রয়েছে। ক্যাম্পেইনের মাত্র ৩ ঘণ্টার কম সময়ে ৬০ হাজারের বেশি অর্ডার প্লেস করেছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি। শুক্রবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির এমডি নিজেই এ খবর জানিয়েছেন। জানতে চাইলে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটা ধারণা ছিল যে, সবাই ইভ্যালিতে উচ্চ মূল্যছাড়ের জন্য কেনাকাটা করে। কিন্তু আসল প্রেক্ষাপট যে ভিন্ন, সেটি এখন স্পষ্ট।’
তিনি বলেন, ‘টি১০ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের বড় একটি লয়্যাল কাস্টমার বেইজ রয়েছে। তারা মূল্যছাড় খুব কম হলেও ক্যাম্পেইনের মাত্র তিন ঘণ্টারও কম সময়ে ৬০ হাজারের বেশি অর্ডার প্লেস করেছে। যার আর্থিক মূল্যমান প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি। অবশ্য পরিশোধিত অর্ডারের মূল্যমানের থেকে কম হবে। তবুও এই পরিসংখ্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ইভ্যালির এমডি বলেন, ‘আমরা আরও আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছিলাম যে, একটি লাভজনক ও টেকসই ই-কমার্স ইকো-সিস্টেমের প্রতিষ্ঠান হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইভ্যালি। ক্রেতারা আস্থা রাখছেন, কারণ আমরা শুরু থেকেই গ্রাহকদের তাদের সাধ্যের মধ্যে সঠিক ও গুণগত পণ্য দিয়ে আসছি। গ্রাহকদের ভালোবাসা এবং পছন্দের শীর্ষের জায়গা ইভ্যালি।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময়ই বলে আসছি যে, ইভ্যালি কিন্তু ডিসকাউন্টের ওপর ব্যবসা করবে না। ধীরে ধীরে ডিসকাউন্টের পরিমাণ কমিয়ে আনবে। আমাদের শুরুর দিকে যতো ডিসকাউন্ট দেয়া হতো, সেটি কিন্তু এর কিছু পরে কমিয়ে আনা হয়েছে।’ ‘আবার বর্তমানে এসেও কিন্তু সেরকম ডিসকাউন্ট নেই। আমরা একটি লাভজনক ও টেকসই প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করব। ই-কমার্স দেশীয় অর্থনীতির উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে। আমরা সেই কাজে অবদান রাখতে চাই’ যোগ করেন মোহাম্মদ রাসেল।
অন্যদিকে ইভ্যালির ওপর করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠায় চার প্রতিষ্ঠানে। ওই চার প্রতিষ্ঠান হলো—দুদক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইভ্যালির চলতি সম্পদ দিয়ে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে বা অর্থ ফেরত দিতে পারবে। বাকি গ্রাহক এবং মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধ করা ওই কোম্পানির পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া গ্রাহক এবং মার্চেন্টদের কাছ থেকে নেয়া ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যা আত্মসাৎ কিংবা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, ইভ্যালির মোট দেনার পরিমাণ ৪০৭ কোটি টাকা। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা। মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। তবে তাদের সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইভ্যালিতে একদিনে ২০০ কোটি টাকার অর্ডার

আপডেট সময় : ১০:৫৭:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : সম্প্রতি সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ইভ্যালির বিরুদ্ধে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। এসব কিছুকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল। তার দাবি, ইভ্যালিকে একটি লাভজনক ও টেকসই প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন তিনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্টাটাসও দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে টি১০ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তাদের লয়্যাল কাস্টমার বেইজ রয়েছে। ক্যাম্পেইনের মাত্র ৩ ঘণ্টার কম সময়ে ৬০ হাজারের বেশি অর্ডার প্লেস করেছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি। শুক্রবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির এমডি নিজেই এ খবর জানিয়েছেন। জানতে চাইলে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটা ধারণা ছিল যে, সবাই ইভ্যালিতে উচ্চ মূল্যছাড়ের জন্য কেনাকাটা করে। কিন্তু আসল প্রেক্ষাপট যে ভিন্ন, সেটি এখন স্পষ্ট।’
তিনি বলেন, ‘টি১০ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের বড় একটি লয়্যাল কাস্টমার বেইজ রয়েছে। তারা মূল্যছাড় খুব কম হলেও ক্যাম্পেইনের মাত্র তিন ঘণ্টারও কম সময়ে ৬০ হাজারের বেশি অর্ডার প্লেস করেছে। যার আর্থিক মূল্যমান প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি। অবশ্য পরিশোধিত অর্ডারের মূল্যমানের থেকে কম হবে। তবুও এই পরিসংখ্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ইভ্যালির এমডি বলেন, ‘আমরা আরও আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছিলাম যে, একটি লাভজনক ও টেকসই ই-কমার্স ইকো-সিস্টেমের প্রতিষ্ঠান হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইভ্যালি। ক্রেতারা আস্থা রাখছেন, কারণ আমরা শুরু থেকেই গ্রাহকদের তাদের সাধ্যের মধ্যে সঠিক ও গুণগত পণ্য দিয়ে আসছি। গ্রাহকদের ভালোবাসা এবং পছন্দের শীর্ষের জায়গা ইভ্যালি।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময়ই বলে আসছি যে, ইভ্যালি কিন্তু ডিসকাউন্টের ওপর ব্যবসা করবে না। ধীরে ধীরে ডিসকাউন্টের পরিমাণ কমিয়ে আনবে। আমাদের শুরুর দিকে যতো ডিসকাউন্ট দেয়া হতো, সেটি কিন্তু এর কিছু পরে কমিয়ে আনা হয়েছে।’ ‘আবার বর্তমানে এসেও কিন্তু সেরকম ডিসকাউন্ট নেই। আমরা একটি লাভজনক ও টেকসই প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করব। ই-কমার্স দেশীয় অর্থনীতির উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে। আমরা সেই কাজে অবদান রাখতে চাই’ যোগ করেন মোহাম্মদ রাসেল।
অন্যদিকে ইভ্যালির ওপর করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠায় চার প্রতিষ্ঠানে। ওই চার প্রতিষ্ঠান হলো—দুদক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইভ্যালির চলতি সম্পদ দিয়ে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে বা অর্থ ফেরত দিতে পারবে। বাকি গ্রাহক এবং মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধ করা ওই কোম্পানির পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া গ্রাহক এবং মার্চেন্টদের কাছ থেকে নেয়া ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যা আত্মসাৎ কিংবা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, ইভ্যালির মোট দেনার পরিমাণ ৪০৭ কোটি টাকা। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা। মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। তবে তাদের সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।