ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

বাবার ব্যবসার হাল ধরলেন চীনের অন্যতম ধনী নারী

  • আপডেট সময় : ১২:৫৫:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩
  • ১২১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : চীনের অন্যতম ধনী এক নারী ইয়াং হুইইয়ান। দেশটির শীর্ষ আবাসন প্রতিষ্ঠান কান্ট্রি গার্ডেন তাঁর হাতের মুঠোয়। বাবার পদত্যাগের পর কান্ট্রি গার্ডেন সামলানোর ভার পড়ে হুইইয়ানের ওপর। মন্দার সময়েও দাপুটে আবাসন ব্যবসায়ীরা যখন একের পর পদত্যাগ করেছেন, তখন কান্ট্রি গার্ডেনের হাল ধরেছেন তিনি।
হংকং স্টক এক্সচেঞ্জ বলছে গত বুধবার হুইইয়ান তাঁর বাবা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইয়াং জিওকিয়াং এর স্থলাভিষিক্ত হন। ওই দিনই তাঁর নিয়োগও কার্যকর হয়। ৬৮ বছরের ইয়াং জিওকিয়াং বয়সের কারণে চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়।
১৯৯২ সালে ইয়াং জিওকিয়াং কান্ট্রি গার্ডেন প্রতিষ্ঠা করেন। এর আগে তিনি ছিলেন কৃষক। এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে জিওকিয়াং এর আবাসন প্রতিষ্ঠান ফুলেফেঁপে ওঠে। চীনের অন্যতম বড় আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হয়ে ওঠে কান্ট্রি গার্ডেন। গত বছর কান্ট্রি গার্ডেন বিক্রির দিক দিয়ে চীনের ১ নম্বর আবাসন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এর সম্পদের পরিমাণ ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
২০১৮ সাল থেকে হুইইয়ান প্রতিষ্ঠানটির সহচেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাবার সঙ্গেই প্রতিদিন তিনি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক ডেটা সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গের ধনকুবেরদের তালিকা অনুসারে ৪১ বছরের হুইইয়ানের সম্পদ ৯২০ কোটি ডলার। এই তালিকা অনুসারে হুইইয়ান চীনের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী নারী। আর প্রথম স্থানে রয়েছেন লংফোর প্রোপার্টিজের প্রতিষ্ঠাতা ৫৯ বছরের উ ইয়াজুন। তাঁর সম্পদ ৯৭০ কোটি ডলার। হুইইয়ানের সম্পদের মূল আয় এসেছে কান্ট্রি গার্ডেনে তাঁর বেশির ভাগ শেয়ার থেকে। ২০০৫ সালে হুইইয়ানের বাবা তাঁকে এই শেয়ার তাঁকে হস্তান্তর করেন। চীনের আবাসন বাজারের ঐতিহাসিক মন্দার সময় হুইইয়ানের বাবা পদত্যাগ করেন। ২০২০ সাল থেকে আবাসন খাতে একের পর এক সংকটের মুখে পড়ে কান্ট্রি গার্ডেন। সে সময় উচ্চ ঋণের লাগাম টানতে আবাসন ব্যবসায়ীদের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে লাগাম টানে বেইজিং কর্তৃপক্ষ। চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম আবাসন প্রতিষ্ঠান এভারগ্রান্ডে এই সংকটে পড়ে ২০২১ সালের শেষ দিকে ঋণখেলাপি হয়। সে সময় থেকে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান ঋণদাতাদের কাছে সুরক্ষার আবেদন করে। গত বছর কান্ট্রি গার্ডেনের শেয়ারের দাম অর্ধেক পড়ে গেছে। আবাসন ব্যবসায় ক্রেতার আস্থা কমেছে। গত বছর হাজার হাজার বাড়ির ক্রেতা বন্ধকের অর্থ পরিশোধ করতে রাজি হয়নি। বাড়ির জন্য বাকি অর্থও পরিশোধে রাজি হননি তাঁরা। আবাসন ব্যবসার এই সংকট স্থানীয় সরকারের অর্থায়নে প্রভাব ফেলেছে। কারণ, স্থানীয় সরকারের রাজস্ব আয় অনেকাংশে আবাসন খাতের বিক্রির ওপর নির্ভরশীল। চীন সরকার এই শিল্প পুনরুদ্ধারে নীতি বদলেছে। আবাসন ব্যবসায়ীদের ঋণ নেওয়ার বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। ঋণ বরাদ্দ শুরু করেছে। তবে এরপরও উন্নতি হয়েছে ধীরে।এই টানাপোড়েনের কারণে ইয়াং জিওকিয়াং পদত্যাগ করেন।
জিওকিয়াং-ই নন। নভেম্বর মাসে মর্ডান ল্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ঝাং লেই পদত্যাগ করেন। বেইজিংভিত্তিক জ্বালানি-সঞ্চয়কারী আবাসনের অন্যতম মডার্ন ল্যান্ড। এর আগে অক্টোবর মাসে লংফোর প্রোপার্টিজের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান উ ইয়াজুন স্বাস্থ্য ও বয়সের কারণে সরে দাঁড়ান। তার ঠিক আগের মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে প্যান সিয়ি ও তাঁর স্ত্রী ঝাং জিন বেইজিংভিত্তিক আবাসন প্রতিষ্ঠান সোহো চীনের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাবার ব্যবসার হাল ধরলেন চীনের অন্যতম ধনী নারী

আপডেট সময় : ১২:৫৫:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : চীনের অন্যতম ধনী এক নারী ইয়াং হুইইয়ান। দেশটির শীর্ষ আবাসন প্রতিষ্ঠান কান্ট্রি গার্ডেন তাঁর হাতের মুঠোয়। বাবার পদত্যাগের পর কান্ট্রি গার্ডেন সামলানোর ভার পড়ে হুইইয়ানের ওপর। মন্দার সময়েও দাপুটে আবাসন ব্যবসায়ীরা যখন একের পর পদত্যাগ করেছেন, তখন কান্ট্রি গার্ডেনের হাল ধরেছেন তিনি।
হংকং স্টক এক্সচেঞ্জ বলছে গত বুধবার হুইইয়ান তাঁর বাবা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইয়াং জিওকিয়াং এর স্থলাভিষিক্ত হন। ওই দিনই তাঁর নিয়োগও কার্যকর হয়। ৬৮ বছরের ইয়াং জিওকিয়াং বয়সের কারণে চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়।
১৯৯২ সালে ইয়াং জিওকিয়াং কান্ট্রি গার্ডেন প্রতিষ্ঠা করেন। এর আগে তিনি ছিলেন কৃষক। এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে জিওকিয়াং এর আবাসন প্রতিষ্ঠান ফুলেফেঁপে ওঠে। চীনের অন্যতম বড় আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হয়ে ওঠে কান্ট্রি গার্ডেন। গত বছর কান্ট্রি গার্ডেন বিক্রির দিক দিয়ে চীনের ১ নম্বর আবাসন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এর সম্পদের পরিমাণ ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
২০১৮ সাল থেকে হুইইয়ান প্রতিষ্ঠানটির সহচেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাবার সঙ্গেই প্রতিদিন তিনি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক ডেটা সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গের ধনকুবেরদের তালিকা অনুসারে ৪১ বছরের হুইইয়ানের সম্পদ ৯২০ কোটি ডলার। এই তালিকা অনুসারে হুইইয়ান চীনের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী নারী। আর প্রথম স্থানে রয়েছেন লংফোর প্রোপার্টিজের প্রতিষ্ঠাতা ৫৯ বছরের উ ইয়াজুন। তাঁর সম্পদ ৯৭০ কোটি ডলার। হুইইয়ানের সম্পদের মূল আয় এসেছে কান্ট্রি গার্ডেনে তাঁর বেশির ভাগ শেয়ার থেকে। ২০০৫ সালে হুইইয়ানের বাবা তাঁকে এই শেয়ার তাঁকে হস্তান্তর করেন। চীনের আবাসন বাজারের ঐতিহাসিক মন্দার সময় হুইইয়ানের বাবা পদত্যাগ করেন। ২০২০ সাল থেকে আবাসন খাতে একের পর এক সংকটের মুখে পড়ে কান্ট্রি গার্ডেন। সে সময় উচ্চ ঋণের লাগাম টানতে আবাসন ব্যবসায়ীদের ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে লাগাম টানে বেইজিং কর্তৃপক্ষ। চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম আবাসন প্রতিষ্ঠান এভারগ্রান্ডে এই সংকটে পড়ে ২০২১ সালের শেষ দিকে ঋণখেলাপি হয়। সে সময় থেকে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান ঋণদাতাদের কাছে সুরক্ষার আবেদন করে। গত বছর কান্ট্রি গার্ডেনের শেয়ারের দাম অর্ধেক পড়ে গেছে। আবাসন ব্যবসায় ক্রেতার আস্থা কমেছে। গত বছর হাজার হাজার বাড়ির ক্রেতা বন্ধকের অর্থ পরিশোধ করতে রাজি হয়নি। বাড়ির জন্য বাকি অর্থও পরিশোধে রাজি হননি তাঁরা। আবাসন ব্যবসার এই সংকট স্থানীয় সরকারের অর্থায়নে প্রভাব ফেলেছে। কারণ, স্থানীয় সরকারের রাজস্ব আয় অনেকাংশে আবাসন খাতের বিক্রির ওপর নির্ভরশীল। চীন সরকার এই শিল্প পুনরুদ্ধারে নীতি বদলেছে। আবাসন ব্যবসায়ীদের ঋণ নেওয়ার বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। ঋণ বরাদ্দ শুরু করেছে। তবে এরপরও উন্নতি হয়েছে ধীরে।এই টানাপোড়েনের কারণে ইয়াং জিওকিয়াং পদত্যাগ করেন।
জিওকিয়াং-ই নন। নভেম্বর মাসে মর্ডান ল্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ঝাং লেই পদত্যাগ করেন। বেইজিংভিত্তিক জ্বালানি-সঞ্চয়কারী আবাসনের অন্যতম মডার্ন ল্যান্ড। এর আগে অক্টোবর মাসে লংফোর প্রোপার্টিজের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান উ ইয়াজুন স্বাস্থ্য ও বয়সের কারণে সরে দাঁড়ান। তার ঠিক আগের মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে প্যান সিয়ি ও তাঁর স্ত্রী ঝাং জিন বেইজিংভিত্তিক আবাসন প্রতিষ্ঠান সোহো চীনের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদ থেকে পদত্যাগ করেন।