ঢাকা ০১:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

বিচার বিলম্বিত হলে নারীরা বেশি ভুক্তভোগী হন

  • আপডেট সময় : ০২:৪০:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মার্চ ২০২৩
  • ১২৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিচারে বিলম্বের কারণে নারীরা বেশি ভুক্তভোগী হন বলে মন্তব্য করেছেন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ড. মো. শাহজাহান। তিনি বলেছে, আইন-আদালতের বাইরে যারা আছেন তারা ভাবেন, জজেরা মামলা শোনেন না। তাহলে কি বিচার বছরের পর বছর চলতে থাকবে? তাই এর সহজ উপায় হলো বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি করা। দেশের এ মুহূর্তে অন্তত পাঁচ হাজার জজ থাকা প্রয়োজন। দেশের সচিব-ডেপুটি-সহকারীসহ বিভিন্ন সচিবদের পদসংখ্যার তুলনায় তাদের নিয়োগ হার বেশি রয়েছে। অথচ বিচারক নিয়োগ করার কথা বলা হলে উত্তর দেওয়া হয় বাজেট স্বল্পতার। এর ফলে বিচার পেতেও দেরি হয়। আর এর কারণে বেশি ভুক্তভোগী হতে হয় নারীদের।
তিনি আরও বলেন, সরকার যে বসে আছে তা কিন্তু বলা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশে লিগ্যাল এইড অফিস রয়েছে। সেখানে ভুক্তভোগীরা আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকলেও বিচার চেয়ে যেতে পারছেন। লিগ্যাল এইড অফিস থেকে মামলা চালাতে পরামর্শ এমনকি বিনামূল্যে আইনজীবীও নিয়োগ করে দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ফাউন্ডেশন ফর ল এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফ্ল্যাড) ও বাংলা ট্রিবিউনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। নারীদের অধিকার ও প্রাসঙ্গিক আইন (স্বাধীনতাউত্তর ৫১ বছরের মূল্যায়ন) শিরোনামে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ড. মো. শাহজাহান বলেন, নারীর অধিকারের সচেতন হতে হলে শিক্ষার বিষয়ে জোর দিতে হবে। তবে সেটি যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হতে হবে তা কিন্তু না। এছাড়াও এক্সেস টু জাস্টিস নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আর্থিক সক্ষমতা থাকলে বিচারিক সিস্টেমে আমরা প্রবেশ করতে পারবো। তবে সবকিছুর মূলে আমাদের সচেতন হতে হবে। পত্র-পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। পারিবারিক আদালতের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পারিবারিক আদালতের মামলা হলে অনেকেই বছরের পর বছর ঘুরতে থাকেন। অনেকেই মনে করেন বিচারকরা কাজ করেন না। অথচ অনেকের জানা নেই এসব আদালতে কতটা মামলার চাপ রয়েছে। তাই কোনও মামলা হলে তা শেষ হতে তো সময় লাগবেই।
বর্তমানে আমাদের আদালতগুলোতে এক তৃতীয়াংশ নারী জজ রয়েছেন। এছাড়াও সারাদেশে বিচারক রয়েছেন প্রায় ১৭শ’ জন। কিন্তু মামলা চলমান রয়েছে ৩৫ লাখের বেশি। তাই একটি মামলাতে তিনমাস পরে তারিখ পড়া অস্বাভাবিক কিছু না। যদি পর্যাপ্ত জজ নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে বিচারও দ্রুত হবে। তাহলে কি আর জজদের দোষ দেওয়া চলে? বলেন তিনি। মো. শাহজাহান মনে করেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এমনিতে করা সম্ভব নয়। এজন্য সংগ্রাম প্রয়োজন। পারিবারিক আদালতের আইনে অনেক নারী অধিকারের কথা বলা হলেও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একসঙ্গে সচেতন হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করলো যুক্তরাষ্ট্র

বিচার বিলম্বিত হলে নারীরা বেশি ভুক্তভোগী হন

আপডেট সময় : ০২:৪০:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিচারে বিলম্বের কারণে নারীরা বেশি ভুক্তভোগী হন বলে মন্তব্য করেছেন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ড. মো. শাহজাহান। তিনি বলেছে, আইন-আদালতের বাইরে যারা আছেন তারা ভাবেন, জজেরা মামলা শোনেন না। তাহলে কি বিচার বছরের পর বছর চলতে থাকবে? তাই এর সহজ উপায় হলো বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি করা। দেশের এ মুহূর্তে অন্তত পাঁচ হাজার জজ থাকা প্রয়োজন। দেশের সচিব-ডেপুটি-সহকারীসহ বিভিন্ন সচিবদের পদসংখ্যার তুলনায় তাদের নিয়োগ হার বেশি রয়েছে। অথচ বিচারক নিয়োগ করার কথা বলা হলে উত্তর দেওয়া হয় বাজেট স্বল্পতার। এর ফলে বিচার পেতেও দেরি হয়। আর এর কারণে বেশি ভুক্তভোগী হতে হয় নারীদের।
তিনি আরও বলেন, সরকার যে বসে আছে তা কিন্তু বলা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশে লিগ্যাল এইড অফিস রয়েছে। সেখানে ভুক্তভোগীরা আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকলেও বিচার চেয়ে যেতে পারছেন। লিগ্যাল এইড অফিস থেকে মামলা চালাতে পরামর্শ এমনকি বিনামূল্যে আইনজীবীও নিয়োগ করে দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ফাউন্ডেশন ফর ল এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফ্ল্যাড) ও বাংলা ট্রিবিউনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। নারীদের অধিকার ও প্রাসঙ্গিক আইন (স্বাধীনতাউত্তর ৫১ বছরের মূল্যায়ন) শিরোনামে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ড. মো. শাহজাহান বলেন, নারীর অধিকারের সচেতন হতে হলে শিক্ষার বিষয়ে জোর দিতে হবে। তবে সেটি যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হতে হবে তা কিন্তু না। এছাড়াও এক্সেস টু জাস্টিস নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আর্থিক সক্ষমতা থাকলে বিচারিক সিস্টেমে আমরা প্রবেশ করতে পারবো। তবে সবকিছুর মূলে আমাদের সচেতন হতে হবে। পত্র-পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। পারিবারিক আদালতের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পারিবারিক আদালতের মামলা হলে অনেকেই বছরের পর বছর ঘুরতে থাকেন। অনেকেই মনে করেন বিচারকরা কাজ করেন না। অথচ অনেকের জানা নেই এসব আদালতে কতটা মামলার চাপ রয়েছে। তাই কোনও মামলা হলে তা শেষ হতে তো সময় লাগবেই।
বর্তমানে আমাদের আদালতগুলোতে এক তৃতীয়াংশ নারী জজ রয়েছেন। এছাড়াও সারাদেশে বিচারক রয়েছেন প্রায় ১৭শ’ জন। কিন্তু মামলা চলমান রয়েছে ৩৫ লাখের বেশি। তাই একটি মামলাতে তিনমাস পরে তারিখ পড়া অস্বাভাবিক কিছু না। যদি পর্যাপ্ত জজ নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে বিচারও দ্রুত হবে। তাহলে কি আর জজদের দোষ দেওয়া চলে? বলেন তিনি। মো. শাহজাহান মনে করেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এমনিতে করা সম্ভব নয়। এজন্য সংগ্রাম প্রয়োজন। পারিবারিক আদালতের আইনে অনেক নারী অধিকারের কথা বলা হলেও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একসঙ্গে সচেতন হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।