ঢাকা ০৪:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

পুলিশ হোক জনগণের প্রকৃত বন্ধু

  • আপডেট সময় : ১০:৩৮:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩
  • ৫৬ বার পড়া হয়েছে

মো. জে আর খান রবিন : রাষ্ট্র ও নাগরিকের মধ্যে সম্পর্কটা খুবই নিবিড়। রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি যেমন আত্মপরিচয়হীন তেমনি নাগরিক ছাড়া রাষ্ট্রও অকার্যকর। রাষ্ট্র যেমন নাগরিক জীবনকে অর্থবহ সুন্দর ও গতিশীল করে তোলে, ঠিক তেমনি সুনাগরিকও রাষ্ট্রকে সফল করে তোলার ক্ষেত্রে অপরিহার্য। রাষ্ট্রকে হতে হবে কল্যাণমুখী, তেমনিভাবে নাগরিকরাও হবেন রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যশীল। সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুযায়ী নাগরিকের সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার সুনিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাছাড়া মানুষের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে মানুষের জানমালের নিরাপত্তাসহ সব অধিকার নিশ্চিত করে থাকে। কিন্তু কখনও কখনও দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাউকে গ্রেফতার করতে গিয়ে অথবা কাউকে তাদের হেফাজতে নিয়ে অন্যায়ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। নির্যাতনে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ মৃত্যুর ঘটনাও রয়েছে অনেক। পুলিশও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
পুলিশ (চড়ষরপব) মানে চড়ষরঃব, ড়নবফরবহঃ, ষড়ুধষ, রহঃবষষরমবহঃ, ঈড়ঁৎধমবড়ঁং, বহবৎমবঃরপ। এ বৈশিষ্ট্য থাকলেই একজন মানুষ পুলিশ সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করে। পুলিশ একটি সরকারি বাহিনী হিসেবে এর মূল কাজ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং সবার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। অপরাধ ও অপরাধীদের শনাক্তকরণের কাজটি পুলিশ সদস্যদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হয়। অন্যদিকে আইন বাস্তবায়নে পুলিশের ভূমিকাও অপরিসীম।
আইন হচ্ছে সামাজিক গাঁথন। সামাজিক বিধিবিধানের সমষ্টিই হচ্ছে আইন। কিন্তু যখন অবৈধ হস্তক্ষেপ ও লঙ্ঘনের কারণে বে-আইনি কার্যকলাপই আইন হিসেবে মানতে বাধ্য করা হয়, তখন তাকে সুশাসন না বলে দুঃশাসন বলাই শ্রেয়। বর্তমানে গায়েবি মামলায় গ্রেফতার, রিমান্ড ও গৃহ তল্লাশি বাংলাদেশের আলোচিত বিষয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৯ ধারা অনুযায়ী পুলিশ আমলযোগ্য অপরাধ নিবারণ করবে। সে হিসেবে আইন অমান্যকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া সন্দেহভাজন যেকোনও ব্যক্তিকে কার্যবিধির ৫৪ ধারা মোতাবেক গ্রেফতার করতে পারে। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের একাধিক দিকনির্দেশনা রয়েছে।
অন্যদিকে আদালত হতে ইস্যুকৃত তল্লাশি পরোয়ানা মূলে অথবা অথবা কোনও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট মামলার আসামি গ্রেফতারের লক্ষ্যে পুলিশ কোনও নাগরিকের গৃহ তল্লাশি করতে পারে। এ ব্যাপারে ফৌজদারি কার্যবিধির ৯৬, ৯৮, ৯৯ক, ১০০ ও ১৫৬ ধারায় উল্লেখ রয়েছে। অন্যদিকে তল্লাশির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৩ ধারায় বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যায়, কোনও কোনও ক্ষেত্রে পুলিশ নির্দোষ ব্যক্তিকে অসত্য বর্ণনায় মামলায় সম্পৃক্ত করে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
কোনও ব্যক্তি মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে গ্রেফতার হওয়ার পর কখনও জামিন মেলে, কখনও মেলে না। বিচারে নির্দোষ প্রমাণে আদালত বেকসুর খালাস দেন। কিন্তু ততক্ষণে নির্দোষ ব্যক্তির সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে যায়। বিনা অপরাধে গ্রেফতার হওয়া আসামির সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত বয়ে বেড়াতে হয় অপরাধের গ্লানি।
বেকসুর খালাসের পরও কারাভোগ এবং অনেক ক্ষেত্রে ‘অপরাধী’ তকমা নিয়ে বাঁচতে হয় সারা জীবন। অপরাধ না করেও কারাবাস। বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় দিনগুলো জীবন থেকে হারিয়ে যায়। সন্তান, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা। উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কারাজীবনে উপার্জনহীন হয়ে পড়ে। এসব মামলা পরিচালনার অর্থ জোগাড় করতে অনেকে সহায়-সম্বলহীন হওয়াসহ অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হন।
বিচারে ‘নির্দোষ’ প্রমাণিত হলেও এর দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কাউকেই নিতে হয় না। অথচ যে বাদী নিরপরাধ ব্যক্তিটিকে ‘আসামি’ করলো, যিনি মামলা রেকর্ড করলেন, যিনি মামলা তদন্ত করলেন, তাদের কোনও দায় বা জবাবদিহি নেই। যদিও সংবিধানের ১৯(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক সমান।
সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থায় পুলিশের ভূমিকা অপরিসীম, পুলিশবিহীন দেশের জনগণের জান ও মাল কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। এ কারণে পুলিশকে জনগণের বন্ধুও বলা হয়। বাস্তবে কোনও কোনও পুলিশের নেতিবাচক ভূমিকার কারণে পুলিশ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসহায় নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করার দায় পুলিশের জন্য তুলনামূলকভাবে অন্য অপরাধের চেয়ে অনেক বেশি। পৃথিবীর অনেক সভ্য দেশের আইনে এ ধরনের নজির রয়েছে। এক্ষেত্রে দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দ.বি. ১৬৬, ৪২৭, ৩৯২/৩৯৫ ধারা মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ ‘হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩’ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। যদিও অনেক দিক বিবেচনা করে কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।
পরিশেষে বলতে চাই, পুলিশ রাষ্ট্রের অপরিহার্য একটি অঙ্গ। তাই সবার প্রত্যাশা দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনকে মূলনীতি হিসেবে পুলিশ অনুসরণ করবে। অন্যদিক পুলিশ আছে বলেই আমাদের জান ও মাল নিরাপদ। তাই পুলিশ হোক প্রকৃতপক্ষেই জনগণের বন্ধু।
লেখক: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পুলিশ হোক জনগণের প্রকৃত বন্ধু

আপডেট সময় : ১০:৩৮:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩

মো. জে আর খান রবিন : রাষ্ট্র ও নাগরিকের মধ্যে সম্পর্কটা খুবই নিবিড়। রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি যেমন আত্মপরিচয়হীন তেমনি নাগরিক ছাড়া রাষ্ট্রও অকার্যকর। রাষ্ট্র যেমন নাগরিক জীবনকে অর্থবহ সুন্দর ও গতিশীল করে তোলে, ঠিক তেমনি সুনাগরিকও রাষ্ট্রকে সফল করে তোলার ক্ষেত্রে অপরিহার্য। রাষ্ট্রকে হতে হবে কল্যাণমুখী, তেমনিভাবে নাগরিকরাও হবেন রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যশীল। সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুযায়ী নাগরিকের সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার সুনিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাছাড়া মানুষের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে মানুষের জানমালের নিরাপত্তাসহ সব অধিকার নিশ্চিত করে থাকে। কিন্তু কখনও কখনও দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাউকে গ্রেফতার করতে গিয়ে অথবা কাউকে তাদের হেফাজতে নিয়ে অন্যায়ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। নির্যাতনে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ মৃত্যুর ঘটনাও রয়েছে অনেক। পুলিশও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
পুলিশ (চড়ষরপব) মানে চড়ষরঃব, ড়নবফরবহঃ, ষড়ুধষ, রহঃবষষরমবহঃ, ঈড়ঁৎধমবড়ঁং, বহবৎমবঃরপ। এ বৈশিষ্ট্য থাকলেই একজন মানুষ পুলিশ সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করে। পুলিশ একটি সরকারি বাহিনী হিসেবে এর মূল কাজ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং সবার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। অপরাধ ও অপরাধীদের শনাক্তকরণের কাজটি পুলিশ সদস্যদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হয়। অন্যদিকে আইন বাস্তবায়নে পুলিশের ভূমিকাও অপরিসীম।
আইন হচ্ছে সামাজিক গাঁথন। সামাজিক বিধিবিধানের সমষ্টিই হচ্ছে আইন। কিন্তু যখন অবৈধ হস্তক্ষেপ ও লঙ্ঘনের কারণে বে-আইনি কার্যকলাপই আইন হিসেবে মানতে বাধ্য করা হয়, তখন তাকে সুশাসন না বলে দুঃশাসন বলাই শ্রেয়। বর্তমানে গায়েবি মামলায় গ্রেফতার, রিমান্ড ও গৃহ তল্লাশি বাংলাদেশের আলোচিত বিষয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৯ ধারা অনুযায়ী পুলিশ আমলযোগ্য অপরাধ নিবারণ করবে। সে হিসেবে আইন অমান্যকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া সন্দেহভাজন যেকোনও ব্যক্তিকে কার্যবিধির ৫৪ ধারা মোতাবেক গ্রেফতার করতে পারে। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের একাধিক দিকনির্দেশনা রয়েছে।
অন্যদিকে আদালত হতে ইস্যুকৃত তল্লাশি পরোয়ানা মূলে অথবা অথবা কোনও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট মামলার আসামি গ্রেফতারের লক্ষ্যে পুলিশ কোনও নাগরিকের গৃহ তল্লাশি করতে পারে। এ ব্যাপারে ফৌজদারি কার্যবিধির ৯৬, ৯৮, ৯৯ক, ১০০ ও ১৫৬ ধারায় উল্লেখ রয়েছে। অন্যদিকে তল্লাশির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৩ ধারায় বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যায়, কোনও কোনও ক্ষেত্রে পুলিশ নির্দোষ ব্যক্তিকে অসত্য বর্ণনায় মামলায় সম্পৃক্ত করে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
কোনও ব্যক্তি মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে গ্রেফতার হওয়ার পর কখনও জামিন মেলে, কখনও মেলে না। বিচারে নির্দোষ প্রমাণে আদালত বেকসুর খালাস দেন। কিন্তু ততক্ষণে নির্দোষ ব্যক্তির সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে যায়। বিনা অপরাধে গ্রেফতার হওয়া আসামির সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত বয়ে বেড়াতে হয় অপরাধের গ্লানি।
বেকসুর খালাসের পরও কারাভোগ এবং অনেক ক্ষেত্রে ‘অপরাধী’ তকমা নিয়ে বাঁচতে হয় সারা জীবন। অপরাধ না করেও কারাবাস। বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় দিনগুলো জীবন থেকে হারিয়ে যায়। সন্তান, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা। উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কারাজীবনে উপার্জনহীন হয়ে পড়ে। এসব মামলা পরিচালনার অর্থ জোগাড় করতে অনেকে সহায়-সম্বলহীন হওয়াসহ অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হন।
বিচারে ‘নির্দোষ’ প্রমাণিত হলেও এর দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কাউকেই নিতে হয় না। অথচ যে বাদী নিরপরাধ ব্যক্তিটিকে ‘আসামি’ করলো, যিনি মামলা রেকর্ড করলেন, যিনি মামলা তদন্ত করলেন, তাদের কোনও দায় বা জবাবদিহি নেই। যদিও সংবিধানের ১৯(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক সমান।
সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থায় পুলিশের ভূমিকা অপরিসীম, পুলিশবিহীন দেশের জনগণের জান ও মাল কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। এ কারণে পুলিশকে জনগণের বন্ধুও বলা হয়। বাস্তবে কোনও কোনও পুলিশের নেতিবাচক ভূমিকার কারণে পুলিশ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসহায় নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করার দায় পুলিশের জন্য তুলনামূলকভাবে অন্য অপরাধের চেয়ে অনেক বেশি। পৃথিবীর অনেক সভ্য দেশের আইনে এ ধরনের নজির রয়েছে। এক্ষেত্রে দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দ.বি. ১৬৬, ৪২৭, ৩৯২/৩৯৫ ধারা মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ ‘হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩’ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। যদিও অনেক দিক বিবেচনা করে কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।
পরিশেষে বলতে চাই, পুলিশ রাষ্ট্রের অপরিহার্য একটি অঙ্গ। তাই সবার প্রত্যাশা দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনকে মূলনীতি হিসেবে পুলিশ অনুসরণ করবে। অন্যদিক পুলিশ আছে বলেই আমাদের জান ও মাল নিরাপদ। তাই পুলিশ হোক প্রকৃতপক্ষেই জনগণের বন্ধু।
লেখক: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট