ঢাকা ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

আপনি দল থেকে দাঁড়াবেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হবো দেখি, খেলা হয় কি না: হিরো আলম

  • আপডেট সময় : ০২:৩৩:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে পুনর্র্নিবাচন দিয়ে সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ করেছেন মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। গতকাল রোববার দুপুরে হিরো আলম বগুড়া-৪ আসনের ৪৫টি কেন্দ্রের ভোট পুনর্গণনার জন্য বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের কাছে আবেদন জমা দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ওই মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে হিরো আলম বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের স্যার কথায়–কথায় বলেন, “খেলা হবে। শক্তিশালী দল হলে খেলা হবে।” খেলা হওয়ার মতো নাকি তিনি শক্তিশালী খেলোয়াড় খুঁজে পান না। তাঁকে জোর গলায় বলতে চাই, শক্তিশালী দলের সঙ্গে আপনাকে খেলতে হবে না। যেখানে মিথ্যা কথা বলে আমার ফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে, সেই বগুড়া-৪ আসনের ভোটে আসুন, আমার সঙ্গে ভোট করে দেখুন। আপনি দল থেকে দাঁড়াবেন, আমি স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হব। কেন্দ্রে কেন্দ্রে সিসিটিভি থাকবে। ভোটারদের ভয় দেখানো হবে না। সুষ্ঠু ভোট দিয়ে দেখুন তো দেখি, খেলা হয় কি না?’
গত শনিবার ঢাকায় আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশে’ দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে।’ ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে হিরো আলম বলেন, হিরোকে কেউ কখনো জিরো করতে পারে না। যারা হিরোকে জিরো বানাতে চায়, তারাই জিরো হয়ে গেছে।
একই সমাবেশে ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, জাতীয় সংসদকে খাটো করতে বিএনপি মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছিল। এ বক্তব্য প্রসঙ্গে হিরো আলম আরও বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের স্যার বলেছেন, হিরো আলম পার্লামেন্টে (সংসদ) গেলে নাকি পার্লামেন্ট ছোট হবে। আমি যদি পার্লামেন্টে গেলে পার্লামেন্টকে ছোট করা হয়, তাহলে যখন মনোনয়ন কিনেছি, তখন তো তাঁরা বলেননি, যোগ্যতা না থাকলে মনোনয়ন কিনতে পারবেন না। যখন আইন করা হয়, তখন তো তাঁরা এসব বলেননি।’
হিরো আলম এখন বিএনপির কাঁধে ভর দিয়ে চলছে—ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হিরো আলম কারও কান্দের ওপর ভর দিয়ে চলে না। আজ এত দূর এসেছি, কেউ সহযোগিতা করেনি। নিজের পরিশ্রম, সংগ্রাম করেই আমি হিরো আলম হয়েছি। কারও ওপর ভর করিনি।’
এদিকে গত শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলামও হিরো আলমকে নিয়ে মন্তব্য করেন। বিএনপি হিরো আলমের পক্ষে কাজ করছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘আমার সঙ্গে বিএনপি থাকলে ভোটে বিএনপির কেউ আমার সঙ্গে কাজ করত। বিএনপির কাউকে কি আপনারা আমার সঙ্গে দেখেছেন? কেউ কি বলতে পারবে, বিএনপি আমার সঙ্গে ছিল?’
বিএনপির মহাসচিব কেন হিরো আলমের পক্ষে মন্তব্য করলেন, জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্যারের কথা কেন বলছেন? সত্যের কথা সবাই বলে। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে, ফল পাল্টে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ জন্যই সারা বিশ্ব আমাকে নিয়ে কথা বলছে।’ আগামী নির্বাচনে বিএনপি হিরো আলমকে মনোনয়ন দিলে তিনি কী করবেন, এই প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোনো দলে যোগ দেব না। যদি কখনো দলে যোগ দিই, জানাব।’
এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের বিষয়ে পরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হিরো আলম।
হিরো আলম বগুড়া-৬ আসনে জামানত হারালেও বগুড়া-৪-এ তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিলেন। ১৪-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি। এরপর হিরো আলম অভিযোগ করেন, ভোটের ফলাফলে কারচুপি করে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়া-৪ আসনের উপনির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ইভিএমের ভোটের প্রিন্ট কপি ও ৪৫টি কেন্দ্রের ভোট পুনর্গণনা চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন হিরো আলম। আবেদনে হিরো আলম উল্লেখ করেছেন, বগুড়া-৪ আসনের উপনির্বাচনের যে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার ৪৫টি কেন্দ্রের ফলাফল তাঁর কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে। এ জন্য এসব কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনাপূর্বক ফলাফল প্রকাশ করা প্রয়োজন।
আবেদন জমার পর হিরো আলম বলেন, ‘কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলের প্রিন্টকপিসহ ৪৫ কেন্দ্রের ফল পুনর্গণনা চেয়েছি। আমি বিজয়ী হলে সংসদ ছোট হবে, সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীর বক্তব্যের পর নিশ্চিত হয়েছি, নির্বাচন কমিশন চাপে পড়ে পরিকল্পিতভাবে ফল পাল্টে দিয়েছে। তবু ন্যায়বিচার পেতে ফল পুনর্গণনার আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশনে ন্যায়বিচার না পেলে হাইকোর্টে যাব। ফল বাতিল চেয়ে রিট করব।’

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক হত্যার দায় এড়াতে পারি না, আমাদের ব্যর্থতা আছে

আপনি দল থেকে দাঁড়াবেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হবো দেখি, খেলা হয় কি না: হিরো আলম

আপডেট সময় : ০২:৩৩:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে পুনর্র্নিবাচন দিয়ে সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ করেছেন মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। গতকাল রোববার দুপুরে হিরো আলম বগুড়া-৪ আসনের ৪৫টি কেন্দ্রের ভোট পুনর্গণনার জন্য বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের কাছে আবেদন জমা দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ওই মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে হিরো আলম বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের স্যার কথায়–কথায় বলেন, “খেলা হবে। শক্তিশালী দল হলে খেলা হবে।” খেলা হওয়ার মতো নাকি তিনি শক্তিশালী খেলোয়াড় খুঁজে পান না। তাঁকে জোর গলায় বলতে চাই, শক্তিশালী দলের সঙ্গে আপনাকে খেলতে হবে না। যেখানে মিথ্যা কথা বলে আমার ফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে, সেই বগুড়া-৪ আসনের ভোটে আসুন, আমার সঙ্গে ভোট করে দেখুন। আপনি দল থেকে দাঁড়াবেন, আমি স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হব। কেন্দ্রে কেন্দ্রে সিসিটিভি থাকবে। ভোটারদের ভয় দেখানো হবে না। সুষ্ঠু ভোট দিয়ে দেখুন তো দেখি, খেলা হয় কি না?’
গত শনিবার ঢাকায় আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশে’ দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে।’ ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে হিরো আলম বলেন, হিরোকে কেউ কখনো জিরো করতে পারে না। যারা হিরোকে জিরো বানাতে চায়, তারাই জিরো হয়ে গেছে।
একই সমাবেশে ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, জাতীয় সংসদকে খাটো করতে বিএনপি মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছিল। এ বক্তব্য প্রসঙ্গে হিরো আলম আরও বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের স্যার বলেছেন, হিরো আলম পার্লামেন্টে (সংসদ) গেলে নাকি পার্লামেন্ট ছোট হবে। আমি যদি পার্লামেন্টে গেলে পার্লামেন্টকে ছোট করা হয়, তাহলে যখন মনোনয়ন কিনেছি, তখন তো তাঁরা বলেননি, যোগ্যতা না থাকলে মনোনয়ন কিনতে পারবেন না। যখন আইন করা হয়, তখন তো তাঁরা এসব বলেননি।’
হিরো আলম এখন বিএনপির কাঁধে ভর দিয়ে চলছে—ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হিরো আলম কারও কান্দের ওপর ভর দিয়ে চলে না। আজ এত দূর এসেছি, কেউ সহযোগিতা করেনি। নিজের পরিশ্রম, সংগ্রাম করেই আমি হিরো আলম হয়েছি। কারও ওপর ভর করিনি।’
এদিকে গত শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলামও হিরো আলমকে নিয়ে মন্তব্য করেন। বিএনপি হিরো আলমের পক্ষে কাজ করছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘আমার সঙ্গে বিএনপি থাকলে ভোটে বিএনপির কেউ আমার সঙ্গে কাজ করত। বিএনপির কাউকে কি আপনারা আমার সঙ্গে দেখেছেন? কেউ কি বলতে পারবে, বিএনপি আমার সঙ্গে ছিল?’
বিএনপির মহাসচিব কেন হিরো আলমের পক্ষে মন্তব্য করলেন, জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্যারের কথা কেন বলছেন? সত্যের কথা সবাই বলে। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে, ফল পাল্টে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ জন্যই সারা বিশ্ব আমাকে নিয়ে কথা বলছে।’ আগামী নির্বাচনে বিএনপি হিরো আলমকে মনোনয়ন দিলে তিনি কী করবেন, এই প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোনো দলে যোগ দেব না। যদি কখনো দলে যোগ দিই, জানাব।’
এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের বিষয়ে পরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হিরো আলম।
হিরো আলম বগুড়া-৬ আসনে জামানত হারালেও বগুড়া-৪-এ তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিলেন। ১৪-দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি। এরপর হিরো আলম অভিযোগ করেন, ভোটের ফলাফলে কারচুপি করে তাঁকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়া-৪ আসনের উপনির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ইভিএমের ভোটের প্রিন্ট কপি ও ৪৫টি কেন্দ্রের ভোট পুনর্গণনা চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন হিরো আলম। আবেদনে হিরো আলম উল্লেখ করেছেন, বগুড়া-৪ আসনের উপনির্বাচনের যে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার ৪৫টি কেন্দ্রের ফলাফল তাঁর কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে। এ জন্য এসব কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনাপূর্বক ফলাফল প্রকাশ করা প্রয়োজন।
আবেদন জমার পর হিরো আলম বলেন, ‘কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলের প্রিন্টকপিসহ ৪৫ কেন্দ্রের ফল পুনর্গণনা চেয়েছি। আমি বিজয়ী হলে সংসদ ছোট হবে, সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীর বক্তব্যের পর নিশ্চিত হয়েছি, নির্বাচন কমিশন চাপে পড়ে পরিকল্পিতভাবে ফল পাল্টে দিয়েছে। তবু ন্যায়বিচার পেতে ফল পুনর্গণনার আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশনে ন্যায়বিচার না পেলে হাইকোর্টে যাব। ফল বাতিল চেয়ে রিট করব।’