ঢাকা ০৪:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

জানুয়ারিতে সড়কে নিহতের ৩৫ শতাংশই বাইক আরোহী

  • আপডেট সময় : ০১:৪৫:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে গড়ে প্রতি দিন সড়কে দুর্ঘটনায় প্রায় ২০ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে তারা জানিয়েছে, এই এক মাসে দেশে ৫৯৩টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৮৫ জনের। দুর্ঘটনার সবচেয়ে বেশি হয়েছে আঞ্চলিক মহাসড়কে। আর গত কয়েক বছর ধরেই মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তা থেকে বের হওয়া যায়নি এবারও। এই মাসে দুর্ঘটনার ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশই মোটর সাইকেল সংশ্লিষ্ট। আর মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশের বেশি ছিল বাইক আরোহী।
গতকাল শনিবার এক প্রতিবেদনে এ চিত্র তুলে ধরেছে বেসরকারি এ সংস্থাটির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল। এতে জানানো হয়, গত মাসে সড়কে ৫৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ দিনে মৃত্যু গড়ে ১৯ দশমিক ৫ জনের। এর মধ্যে ২০৫ জন মারা গেছেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। অর্থাৎ যত মানুষ মারা গেছে, তাদের ৩৫ শতাংশ বাইক আরোহী। এই এক মাসে সড়কে আহত হয়েছেন ৮৯৯ জন। এদের মধ্যে ১১৪ জন ছিলেন বাইকআরোহী। অর্থাৎ বাইক দুর্ঘটনায় পতিতদের হার অন্য দুর্ঘটনার তুলনায় অনেক বেশি। জানুয়ারিতে রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু ও ৭৮ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৩ দুর্ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু ও একজন আহত এবং ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। অর্থাৎ- সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৬৫০টি দুর্ঘটনায় ৬৪২ জনের মৃত্যু ও ৯৭৮ জন আহত হয়েছেন।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ১৫৩ জন চালক, ৮৪ জন পথচারী, ৮০ জন নারী, ৪৬টি শিশু, ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ২৬ পরিবহন শ্রমিক।
নয় জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সমান সংখ্যক শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী আটজন, দুই জন করে প্রকৌশলী ও আইনজীবী এবং একজন সাংবাদিক মারা গেছেন এই মাসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় এ বছরের জানুয়ারিতে সড়কে দুর্ঘটনার পরিমাণ ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়লেও প্রাণহানি কমেছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই এক মাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় গত ১১ জানুয়ারি; সেদিন মারা যায় ৩০ জন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা হয় ১৭ জানুয়ারি, ৩৫টি। সেদিন মৃত্যু হয় ২০ জনের।
বাইকের পর পণ্যবাহী গাড়ি: মোটর সাইকেলের পর সবচেয়ে বেশি ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ট্রাক-পিকাপ-কভার্ডভ্যান ও লরির মতো পণ্যবাহী বাহন। দুর্ঘটনাগুলোর ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ক্ষেত্রে রিকশা-ইজিবাইক, ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বাস, ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ অটোরিকশা এবং ৫ দশমিক ০২ শতাংশ প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাস সংশ্লিষ্ট। দুর্ঘটনাগুলো কোথায় হয়েছে, সেই তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ ক্ষেত্রে সবার আগে আঞ্চলিক মহাসড়ক, মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশই হয়েছে এসব সড়কে। দুর্ঘটনার ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে এবং ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ হয়েছে ফিডার রোডে। ঢাকা মহানগরেও দুর্ঘটনার হার কম নয়। মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ২২ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে রাজধানীতে। চট্টগ্রাম মহানগরে সেটি ১ দশমিক ১৮ শতাংশ আর ১ দশমিক ০১ শতাংশ দুর্ঘটনা হয়েছে রেলক্রসিংয়ে। যাত্রীকল্যাণ সমিতি বলছে, জানুয়ারিতে ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে পথচারী গাড়ি চাপা পড়েছেন। ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ বিবিধ কারণে, ১ দশমিক ০১ শতাংশ ক্ষেত্রে ট্রেনের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কা এবং শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে যাওয়া। যাত্রীকল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, ফিটনেসহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, ছোট যানবাহনের পরিমাণ বৃদ্ধি, রাস্তার পাশে হাট-বাজার ইত্যাদি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
হানিফ ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনায় রাকিব হাসান (২২) নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই ওই মোটরসাইকেল চালক নিহত হন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর আলম। তিনি বলেন, দুপুর দুইটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা তার নাম জানতে পেরেছি রাকিব হাসান। তিনি ঠিকাদার ছিলেন। কি গাড়ি তাকে ধাক্কা দিয়েছে বা চাপা দিয়েছে সে বিষয়টি এখনো জানতে পারিনি। আমরা মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়েছি।
ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ২ ভাই নিহত : রাজবাড়ী জেলার মিজানপুর ইউনিয়নে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে দয়াল নগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-চন্দনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রব শেখের ছেলে সাকিব শেখ (১৩) ও লোকমান শেখের ছেলে সিফাত শেখ (১৮)। তারা আপন চাচাতো ভাই। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রাজবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, দুপুরে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে সিফাত ও সাকিব ধাওয়াপাড়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী যাচ্ছিল। এসময় তারা দয়াল নগর এলাকায় আসলে পেছন থেকে একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা দুজন মারা যান। তিনি জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ট্রাকের চালককে আটক করেছে। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জে মোটরসাইকেল আরোহী তরুণের মৃত্যু: মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সালওয়া টেক্সটাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ঘিওর থানার ওসি আমিনুর রহমান। নিহত ২৩ বছরের তরুণ হৃদয় খান মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার তালুকনগর এলাকার মজলিস খানের ছেলে। ওসি জানান, সকাল সাড়ে দশটার দিকে পাটুরিয়াগামী দিগন্ত পরিবহনের সঙ্গে মানিকগঞ্জগামী মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলটি বাসের ইঞ্জিনের ভেতর ঢুকে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান হৃদয় খান। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাসটি আটক করা হলেও চালক পালিয়েছে বলেও জানান ওসি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জানুয়ারিতে সড়কে নিহতের ৩৫ শতাংশই বাইক আরোহী

আপডেট সময় : ০১:৪৫:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে গড়ে প্রতি দিন সড়কে দুর্ঘটনায় প্রায় ২০ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে তারা জানিয়েছে, এই এক মাসে দেশে ৫৯৩টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৫৮৫ জনের। দুর্ঘটনার সবচেয়ে বেশি হয়েছে আঞ্চলিক মহাসড়কে। আর গত কয়েক বছর ধরেই মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তা থেকে বের হওয়া যায়নি এবারও। এই মাসে দুর্ঘটনার ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশই মোটর সাইকেল সংশ্লিষ্ট। আর মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশের বেশি ছিল বাইক আরোহী।
গতকাল শনিবার এক প্রতিবেদনে এ চিত্র তুলে ধরেছে বেসরকারি এ সংস্থাটির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল। এতে জানানো হয়, গত মাসে সড়কে ৫৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ দিনে মৃত্যু গড়ে ১৯ দশমিক ৫ জনের। এর মধ্যে ২০৫ জন মারা গেছেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। অর্থাৎ যত মানুষ মারা গেছে, তাদের ৩৫ শতাংশ বাইক আরোহী। এই এক মাসে সড়কে আহত হয়েছেন ৮৯৯ জন। এদের মধ্যে ১১৪ জন ছিলেন বাইকআরোহী। অর্থাৎ বাইক দুর্ঘটনায় পতিতদের হার অন্য দুর্ঘটনার তুলনায় অনেক বেশি। জানুয়ারিতে রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু ও ৭৮ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৩ দুর্ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু ও একজন আহত এবং ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। অর্থাৎ- সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৬৫০টি দুর্ঘটনায় ৬৪২ জনের মৃত্যু ও ৯৭৮ জন আহত হয়েছেন।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ১৫৩ জন চালক, ৮৪ জন পথচারী, ৮০ জন নারী, ৪৬টি শিশু, ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ২৬ পরিবহন শ্রমিক।
নয় জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সমান সংখ্যক শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী আটজন, দুই জন করে প্রকৌশলী ও আইনজীবী এবং একজন সাংবাদিক মারা গেছেন এই মাসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় এ বছরের জানুয়ারিতে সড়কে দুর্ঘটনার পরিমাণ ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়লেও প্রাণহানি কমেছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই এক মাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় গত ১১ জানুয়ারি; সেদিন মারা যায় ৩০ জন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা হয় ১৭ জানুয়ারি, ৩৫টি। সেদিন মৃত্যু হয় ২০ জনের।
বাইকের পর পণ্যবাহী গাড়ি: মোটর সাইকেলের পর সবচেয়ে বেশি ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ট্রাক-পিকাপ-কভার্ডভ্যান ও লরির মতো পণ্যবাহী বাহন। দুর্ঘটনাগুলোর ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ক্ষেত্রে রিকশা-ইজিবাইক, ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বাস, ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ অটোরিকশা এবং ৫ দশমিক ০২ শতাংশ প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাস সংশ্লিষ্ট। দুর্ঘটনাগুলো কোথায় হয়েছে, সেই তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ ক্ষেত্রে সবার আগে আঞ্চলিক মহাসড়ক, মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশই হয়েছে এসব সড়কে। দুর্ঘটনার ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে এবং ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ হয়েছে ফিডার রোডে। ঢাকা মহানগরেও দুর্ঘটনার হার কম নয়। মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ২২ শতাংশ সংঘটিত হয়েছে রাজধানীতে। চট্টগ্রাম মহানগরে সেটি ১ দশমিক ১৮ শতাংশ আর ১ দশমিক ০১ শতাংশ দুর্ঘটনা হয়েছে রেলক্রসিংয়ে। যাত্রীকল্যাণ সমিতি বলছে, জানুয়ারিতে ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে পথচারী গাড়ি চাপা পড়েছেন। ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ বিবিধ কারণে, ১ দশমিক ০১ শতাংশ ক্ষেত্রে ট্রেনের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কা এবং শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে যাওয়া। যাত্রীকল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, ফিটনেসহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, ছোট যানবাহনের পরিমাণ বৃদ্ধি, রাস্তার পাশে হাট-বাজার ইত্যাদি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
হানিফ ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর হানিফ ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনায় রাকিব হাসান (২২) নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই ওই মোটরসাইকেল চালক নিহত হন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর আলম। তিনি বলেন, দুপুর দুইটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা তার নাম জানতে পেরেছি রাকিব হাসান। তিনি ঠিকাদার ছিলেন। কি গাড়ি তাকে ধাক্কা দিয়েছে বা চাপা দিয়েছে সে বিষয়টি এখনো জানতে পারিনি। আমরা মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়েছি।
ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ২ ভাই নিহত : রাজবাড়ী জেলার মিজানপুর ইউনিয়নে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে দয়াল নগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-চন্দনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রব শেখের ছেলে সাকিব শেখ (১৩) ও লোকমান শেখের ছেলে সিফাত শেখ (১৮)। তারা আপন চাচাতো ভাই। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রাজবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, দুপুরে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে সিফাত ও সাকিব ধাওয়াপাড়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী যাচ্ছিল। এসময় তারা দয়াল নগর এলাকায় আসলে পেছন থেকে একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা দুজন মারা যান। তিনি জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ট্রাকের চালককে আটক করেছে। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জে মোটরসাইকেল আরোহী তরুণের মৃত্যু: মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সালওয়া টেক্সটাইল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ঘিওর থানার ওসি আমিনুর রহমান। নিহত ২৩ বছরের তরুণ হৃদয় খান মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার তালুকনগর এলাকার মজলিস খানের ছেলে। ওসি জানান, সকাল সাড়ে দশটার দিকে পাটুরিয়াগামী দিগন্ত পরিবহনের সঙ্গে মানিকগঞ্জগামী মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলটি বাসের ইঞ্জিনের ভেতর ঢুকে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান হৃদয় খান। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাসটি আটক করা হলেও চালক পালিয়েছে বলেও জানান ওসি।