ঢাকা ১০:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

চীনে ক্লোনিংয়ে জন্ম নিল ‘সুপার কাউ’

  • আপডেট সময় : ০২:১৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : প্রচুর পরিমাণে দুধ দেয় এমন উন্নত জাতের গরুর তিনটি বাচ্চা ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে জন্ম দিয়েছেন চীনের বিজ্ঞানিরা; বিদেশ থেকে আমদানি করা জাতের ওপর নির্ভরতা কমাতে এ অর্জনকে চীনের ডেইরি শিল্পের জন্য অভাবনীয় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। চীনের নিংজিয়া অঞ্চলে গত বর্ষবরণ উৎসবের আগে বাছুরগুলোর জন্ম হয়েছে। নর্থওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানিরাও ক্লোনিংয়ের এ প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, যে তিনটি বাচ্চার জন্ম হয়েছে, সেগুলো নেদারল্যান্ডসের হলেস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাত থেকে ক্লোন করা হয়েছে। প্রচুর পরিমাণ দুধ উৎপাদনের জন্য এ জাত প্রসিদ্ধ।
উন্নত প্রজাতির এ গাভী বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর বছরে ১৮ টন দুধ অথবা জীবদ্দশায় ১০০ টন দুধ দিতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালে গড়ে একটি গাভীর দুধ উৎপাদনের চেয়ে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি। নিংজিয়ার উলিন শহরের এক কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় টেকনোলজি ডেইলিকে জানান, ক্লোন করা বাছুরগুলোর মধ্যে প্রথমটির জন্ম হয় গত ৩০ ডিসেম্বর। স্বাভাবিক বাছুরের তুলনায় আকারে বড় (৫৬.৭ কেজি) হওয়ায় সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে এই বাছুরটির জন্ম দেওয়া হয়। টেকনোলজি ডেইলি জানিয়েছে, নির্দিষ্ট গরুর কানের কোষ থেকে ১২০টি ক্লোন ভ্রুণ তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা। এরপর সেগুলো প্রতিস্থাপন করেন অন্য গরুর জরায়ুতে। কৃত্রিম এ প্রজনন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন গরুর বাছুরগুলোকে ‘সুপার কাউ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী জিন ইয়াপিং। একে ‘বিশাল অর্জন’ মনে করেন তিনি, যাতে অর্থনৈতিকভাবে সবথেকে ভালো গরু সরক্ষণ করার সুযোগ পাবে চীন।

জিন ইয়াপিং বলেন, চীনে প্রতি ১০ হাজার গরুর মধ্যে মাত্র পাঁচটি গরু গোটা জীবনে ১০০ টন দুধ উৎপাদন করতে পারে, যেগুলো প্রজননের জন্য মূল্যবান সম্পদ। কিন্তু উচ্চ উৎপাদনশীল জাত চিহ্নিত না হলে বংশবৃদ্ধি কঠিন হয়ে পড়ে। চীনে দুধ উৎপাদনকারী গরুগুলোর ৭০ শতাংশের বেশি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। গ্লোবাল টাইমসকে জিন ইয়াপিং বলেন, বিদেশি দুগ্ধজাত গরুর উপর চীনের নির্ভরতা এবং আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইনের ঝামেলা এড়াতে তারা ১ হাজার ‘সুপার কাউ’ এর একটি পাল তৈরির পরিকল্পনা করছেন দুই-তিন বছর ধরে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই স্থানীয় জাতের পশুর সঙ্গে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে পশুর জন্ম দেওয়া হচ্ছে, যাতে বেশি দুধ পাওয়া যায় কিংবা উচ্চ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাত পাওয়া যায়। চীন এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে গত কয়েক বছরে।
গত বছর চীনের একটি ক্লোনিং কোম্পানি বিশ্বের প্রথম ক্লোন করা ‘আর্কটিক নেকড়ে’র জন্ম দিয়েছিল। ২০১৭ সালে চীনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, যক্ষা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে এমন গবাদিপশুর জাত উদ্ভাবন করেছেন তারা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চীনে ক্লোনিংয়ে জন্ম নিল ‘সুপার কাউ’

আপডেট সময় : ০২:১৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : প্রচুর পরিমাণে দুধ দেয় এমন উন্নত জাতের গরুর তিনটি বাচ্চা ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে জন্ম দিয়েছেন চীনের বিজ্ঞানিরা; বিদেশ থেকে আমদানি করা জাতের ওপর নির্ভরতা কমাতে এ অর্জনকে চীনের ডেইরি শিল্পের জন্য অভাবনীয় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। চীনের নিংজিয়া অঞ্চলে গত বর্ষবরণ উৎসবের আগে বাছুরগুলোর জন্ম হয়েছে। নর্থওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানিরাও ক্লোনিংয়ের এ প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, যে তিনটি বাচ্চার জন্ম হয়েছে, সেগুলো নেদারল্যান্ডসের হলেস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাত থেকে ক্লোন করা হয়েছে। প্রচুর পরিমাণ দুধ উৎপাদনের জন্য এ জাত প্রসিদ্ধ।
উন্নত প্রজাতির এ গাভী বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর বছরে ১৮ টন দুধ অথবা জীবদ্দশায় ১০০ টন দুধ দিতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালে গড়ে একটি গাভীর দুধ উৎপাদনের চেয়ে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি। নিংজিয়ার উলিন শহরের এক কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় টেকনোলজি ডেইলিকে জানান, ক্লোন করা বাছুরগুলোর মধ্যে প্রথমটির জন্ম হয় গত ৩০ ডিসেম্বর। স্বাভাবিক বাছুরের তুলনায় আকারে বড় (৫৬.৭ কেজি) হওয়ায় সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে এই বাছুরটির জন্ম দেওয়া হয়। টেকনোলজি ডেইলি জানিয়েছে, নির্দিষ্ট গরুর কানের কোষ থেকে ১২০টি ক্লোন ভ্রুণ তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা। এরপর সেগুলো প্রতিস্থাপন করেন অন্য গরুর জরায়ুতে। কৃত্রিম এ প্রজনন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন গরুর বাছুরগুলোকে ‘সুপার কাউ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী জিন ইয়াপিং। একে ‘বিশাল অর্জন’ মনে করেন তিনি, যাতে অর্থনৈতিকভাবে সবথেকে ভালো গরু সরক্ষণ করার সুযোগ পাবে চীন।

জিন ইয়াপিং বলেন, চীনে প্রতি ১০ হাজার গরুর মধ্যে মাত্র পাঁচটি গরু গোটা জীবনে ১০০ টন দুধ উৎপাদন করতে পারে, যেগুলো প্রজননের জন্য মূল্যবান সম্পদ। কিন্তু উচ্চ উৎপাদনশীল জাত চিহ্নিত না হলে বংশবৃদ্ধি কঠিন হয়ে পড়ে। চীনে দুধ উৎপাদনকারী গরুগুলোর ৭০ শতাংশের বেশি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। গ্লোবাল টাইমসকে জিন ইয়াপিং বলেন, বিদেশি দুগ্ধজাত গরুর উপর চীনের নির্ভরতা এবং আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইনের ঝামেলা এড়াতে তারা ১ হাজার ‘সুপার কাউ’ এর একটি পাল তৈরির পরিকল্পনা করছেন দুই-তিন বছর ধরে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই স্থানীয় জাতের পশুর সঙ্গে ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে পশুর জন্ম দেওয়া হচ্ছে, যাতে বেশি দুধ পাওয়া যায় কিংবা উচ্চ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাত পাওয়া যায়। চীন এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে গত কয়েক বছরে।
গত বছর চীনের একটি ক্লোনিং কোম্পানি বিশ্বের প্রথম ক্লোন করা ‘আর্কটিক নেকড়ে’র জন্ম দিয়েছিল। ২০১৭ সালে চীনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, যক্ষা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে এমন গবাদিপশুর জাত উদ্ভাবন করেছেন তারা।