ঢাকা ১০:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

নারীরা মানসিক অবসাদে ভোগেন বেশি

  • আপডেট সময় : ১০:৫৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১২৮ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক : শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে যে গভীর যোগসূত্র রয়েছে, বিভিন্ন গবেষণায় তা প্রমাণিত হয়েছে আগেই। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, পুরুষদের চেয়ে নারীরা মানসিক অবসাদে ভোগেন বেশি।
এর কারণ কী? ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়া, সম্পর্কের জটিলতা, বাসা আর অফিস দুই-ই সামলাতে গিয়ে শারীরিক ভাবে একটা ক্লান্তি চলে আসে। সেই ক্লান্তি কখনো কখনো হানা দেয় মনেও। তবে নারীদের ক্ষেত্রে মানসিক অবসাদের কারণ যে শুধুই ব্যক্তিগত জীবনের ঝড়ঝাপটা, তা নয়। শরীরের অন্দরেও এমন অনেক সমস্যা ঘটে, যেগুলোর কারণে মানসিক অবসাদ হানা দেয়। সেগুলো নিয়ে খানিক সচেতন থাকা জরুরি। কী কী কারণে মানসিক অবসাদ গ্রাস করে নারীদের?
ঋতুবন্ধ: একটি বয়সের পরে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায় নারীদের। ঋতুবন্ধের সঙ্গে সঙ্গে নারীশরীরে ক্ষরিত হওয়া ভালো হরমোনগুলোর সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ঋতুবন্ধের পর প্রায় ২০ শতাংশ নারী মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এই সময়ে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। উপকারী হরমোন নামে পরিচিত সেরাটোনিন ক্ষরণও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শারীরিক ভাবে ক্লান্তি আসার পাশাপাশি মানসিক ভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েন নারীরা। এই সময়ে মনের যতœ নিতে চিকিৎসকরা ‘হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি’র পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যা শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
শীতকালীন অবসাদ: শীতকালীন মনখারাপকে অনেকেই ‘উইন্টার ব্লুজ’ নামে চেনেন। সমীক্ষা বলছে, প্রতি ১০০ জনে ছয়জন নারী এই শীতকাল এলেই গভীর অবসাদে ডুব দেন। মূলত শীতকালে সূর্যালোকের অভাবেই এই সমস্যা হয়ে থাকে। তাই মনোবিদরা সূর্যের আলোর সংস্পর্শে বেশি করে থাকার কথা বলেন নারীদের। এতে শরীরে ভিটামিন ডি প্রবেশ করে। অবসাদ কিছুটা হলেও দূরে থাকে।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব: সাম্প্রতিক কয়েকটি সমীক্ষা বলছে, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ নারী অনিদ্রা রোগে ভুগছেন। অফিস, কাজের চাপ, সংসারের দায়িত্ব সব কিছু সামলাতে গিয়ে নিজের যতœ নেওয়া হয় না তাদের। শরীরের প্রতি অবহেলার সবচেয়ে বড় নমুনা হলো অপর্যাপ্ত ঘুম। গবেষণা বলছে, অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্কের মানসিক অবসাদের অন্যতম কারণ ঘুমের অভাব। ব্যস্ততা থাকবে। সেই সঙ্গে কাজের চাপও বাড়বে। কিন্তু সময় বের করেই শরীরের যতœ নিতে হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারা দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। শরীরের ওইটুকু যতœ প্রাপ্য।
ওজন কমানোর ব্যর্থতা: রোগা হওয়া সহজ নয়। এর চটজলদি কোনো উপায়ও নেই। নিয়ম মেনে পরিশ্রম না করলে রোগা হওয়ার বাসনা অধরাই থেকে যায়। অনেক নারীই মেদ ঝরাতে পরিশ্রম করেন। কিন্তু সব সময় তা সফল হয় না। পরিশ্রম করেও ব্যর্থতা মানসিক অবসাদ ডেকে আনে। তাছাড়া ডায়েটের প্রভাব পড়ে মনেও। বিশেষ করে নিজের সিদ্ধাম্তে রোগা হওয়ার পরিশ্রম শুরু করলে এমন হয়। তাই ডায়েট করার আগে অতি অবশ্যই পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
শারীরিক কিছু ক্রনিক সমস্যা: আর্থরাইটিস, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগেন অনেক নারীই। মানসিক অবসাদও জন্ম নেয় এই শারীরিক সমস্যার হাত ধরে। খাবার মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু রোগ বাসা বাঁধলে পছন্দের অনেক কিছুই খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মনেও এর প্রভাব পড়ে। মনখারাপ হয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। সে কারণে ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরল যা-ই হোক, এর মাত্রা বাড়তে দেওয়া যাবে না। তবে যে কারণেই নারী অবসাদে ভুগুক, পুরুষের উচিত তার পাশে থাকা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নারীরা মানসিক অবসাদে ভোগেন বেশি

আপডেট সময় : ১০:৫৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩

লাইফস্টাইল ডেস্ক : শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে যে গভীর যোগসূত্র রয়েছে, বিভিন্ন গবেষণায় তা প্রমাণিত হয়েছে আগেই। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, পুরুষদের চেয়ে নারীরা মানসিক অবসাদে ভোগেন বেশি।
এর কারণ কী? ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়া, সম্পর্কের জটিলতা, বাসা আর অফিস দুই-ই সামলাতে গিয়ে শারীরিক ভাবে একটা ক্লান্তি চলে আসে। সেই ক্লান্তি কখনো কখনো হানা দেয় মনেও। তবে নারীদের ক্ষেত্রে মানসিক অবসাদের কারণ যে শুধুই ব্যক্তিগত জীবনের ঝড়ঝাপটা, তা নয়। শরীরের অন্দরেও এমন অনেক সমস্যা ঘটে, যেগুলোর কারণে মানসিক অবসাদ হানা দেয়। সেগুলো নিয়ে খানিক সচেতন থাকা জরুরি। কী কী কারণে মানসিক অবসাদ গ্রাস করে নারীদের?
ঋতুবন্ধ: একটি বয়সের পরে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায় নারীদের। ঋতুবন্ধের সঙ্গে সঙ্গে নারীশরীরে ক্ষরিত হওয়া ভালো হরমোনগুলোর সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ঋতুবন্ধের পর প্রায় ২০ শতাংশ নারী মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এই সময়ে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। উপকারী হরমোন নামে পরিচিত সেরাটোনিন ক্ষরণও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শারীরিক ভাবে ক্লান্তি আসার পাশাপাশি মানসিক ভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েন নারীরা। এই সময়ে মনের যতœ নিতে চিকিৎসকরা ‘হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি’র পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যা শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
শীতকালীন অবসাদ: শীতকালীন মনখারাপকে অনেকেই ‘উইন্টার ব্লুজ’ নামে চেনেন। সমীক্ষা বলছে, প্রতি ১০০ জনে ছয়জন নারী এই শীতকাল এলেই গভীর অবসাদে ডুব দেন। মূলত শীতকালে সূর্যালোকের অভাবেই এই সমস্যা হয়ে থাকে। তাই মনোবিদরা সূর্যের আলোর সংস্পর্শে বেশি করে থাকার কথা বলেন নারীদের। এতে শরীরে ভিটামিন ডি প্রবেশ করে। অবসাদ কিছুটা হলেও দূরে থাকে।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব: সাম্প্রতিক কয়েকটি সমীক্ষা বলছে, বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ নারী অনিদ্রা রোগে ভুগছেন। অফিস, কাজের চাপ, সংসারের দায়িত্ব সব কিছু সামলাতে গিয়ে নিজের যতœ নেওয়া হয় না তাদের। শরীরের প্রতি অবহেলার সবচেয়ে বড় নমুনা হলো অপর্যাপ্ত ঘুম। গবেষণা বলছে, অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্কের মানসিক অবসাদের অন্যতম কারণ ঘুমের অভাব। ব্যস্ততা থাকবে। সেই সঙ্গে কাজের চাপও বাড়বে। কিন্তু সময় বের করেই শরীরের যতœ নিতে হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারা দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। শরীরের ওইটুকু যতœ প্রাপ্য।
ওজন কমানোর ব্যর্থতা: রোগা হওয়া সহজ নয়। এর চটজলদি কোনো উপায়ও নেই। নিয়ম মেনে পরিশ্রম না করলে রোগা হওয়ার বাসনা অধরাই থেকে যায়। অনেক নারীই মেদ ঝরাতে পরিশ্রম করেন। কিন্তু সব সময় তা সফল হয় না। পরিশ্রম করেও ব্যর্থতা মানসিক অবসাদ ডেকে আনে। তাছাড়া ডায়েটের প্রভাব পড়ে মনেও। বিশেষ করে নিজের সিদ্ধাম্তে রোগা হওয়ার পরিশ্রম শুরু করলে এমন হয়। তাই ডায়েট করার আগে অতি অবশ্যই পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
শারীরিক কিছু ক্রনিক সমস্যা: আর্থরাইটিস, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগেন অনেক নারীই। মানসিক অবসাদও জন্ম নেয় এই শারীরিক সমস্যার হাত ধরে। খাবার মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু রোগ বাসা বাঁধলে পছন্দের অনেক কিছুই খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মনেও এর প্রভাব পড়ে। মনখারাপ হয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। সে কারণে ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরল যা-ই হোক, এর মাত্রা বাড়তে দেওয়া যাবে না। তবে যে কারণেই নারী অবসাদে ভুগুক, পুরুষের উচিত তার পাশে থাকা।