ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মেট্রোরেলে শুরুর উচ্ছ্বাস কমছে, ঘুচছে লাইনের অপেক্ষা

  • আপডেট সময় : ০৩:০০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সপ্তাহের নির্দিষ্ট একদিন বন্ধ থাকার পর সূচি অনুযায়ী ফের চলতে শুরু করেছে মেট্রোরেল; প্রথম দিকের মত যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় আর না থাকায় লাইনে আর অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না দীর্ঘ সময়।
গতকাল বুধবার সকালে আগারগাঁও স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ফটকে থাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে, যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন আর চাপ না থাকায় তারা যেন বেশ স্বস্তিতে। সপ্তাহের একদিন মঙ্গলবার মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকে। বাকি দিনগুলোতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১০ মিনিট পরপর চলে এ বৈদ্যুতিক ট্রেন। উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৬০ টাকা দিয়ে ভ্রমণ করতে পারছেন যাত্রীরা।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর শঙ্কা মাথায় নিয়েই বুধবার সকাল ৯টায় আগারগাঁও স্টেশনে এসেছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহমেদ আব্দুল্লাহ নাফিস। প্রবেশ পথে যাত্রীদের লাইন আর চাপ না দেখে অবাক হওয়ার কথা জানালেন তিনি। সকালে আগারগাঁও স্টেশনে দেখা মিললো একদল কলেজ শিক্ষার্থীর। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসা এই শিক্ষার্থীরা জানালেন, তারা মেট্রোরেল দেখতেই ঢাকায় বেড়াতে এসেছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর ভাবনা ছিলো তাদের। কিন্তু এত সহজে ট্রেনে ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে যাবেন ভাবতে পারেননি। নিজেরা ভেন্ডিং মেশিনে টিকিট কেটেছেন। পুরো প্লাটফর্ম ঘুরে দেখেছেন। আগারগাঁও স্টেশনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য সুবীর ও প্রভাস জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লাইন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে কাউকেই লাইনে অপেক্ষা করতে হয়নি।
স্টেশনের পাশেই শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। টিকেট কাউন্টারের পাশে ইউনিফর্ম পরা এ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জটলা পাকিয়ে ছিল। তাদের মধ্যে সাফওয়ান আদনান বললো, আপাতত তাদের ট্রেন ভ্রমণের পরিকল্পনা নেই। স্টেশনটা ঘুরে দেখছে। লাইনে দাঁড়ানোর ভোগান্তি না থাকলে বৃহস্পতিবার তারা মেট্রোরেলে চড়বে বন্ধুরা মিলে। ঢাকা শহরের চিরচেনা যানজট এড়াতে সাড়ে ছয় বছর আগে উত্তরায় দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণযজ্ঞ শুরু হয়েছিল। গত ২৮ ডিসেম্বর এই মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মেট্রোরেল। চোখের সামনে ছয় বছর ধরে গড়ে ওঠা স্বপ্নের মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রার সাক্ষী হতে অসংখ্য মানুষ উত্তরা উত্তর স্টেশন ও আঁগারগাও স্টেশনে ভিড় করেন। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের। প্রথমদিনেই টিকেট ভেন্ডিং মেশিন বিকল হলে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। শুরুর কয়েক দিন ছিল যাত্রীদের প্রচ- চাপ। প্রয়োজন না হলেও শুধু মেট্রোরেল দেখতে এবং ট্রেনে চড়ার সাধ নিতেই স্টেশনে উপচে ভিড় তৈরি হয়। শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। নির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনে মেট্রোরেলে সুশৃঙ্খলভাবে চড়ছেন যাত্রীরা। মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটারে জন্য ৫ টাকা এবং সর্বনি¤œ ২০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করেছে সরকার। সেই হিসাবে দিয়াবাড়ির উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রত্যেক যাত্রীকে গুণতে হচ্ছে ৬০ টাকা। সূচি ধরে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকা যানজটের যন্ত্রণা অনেকটাই লাঘব হবে বলে প্রত্যাশা সরকারের।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মেট্রোরেলে শুরুর উচ্ছ্বাস কমছে, ঘুচছে লাইনের অপেক্ষা

আপডেট সময় : ০৩:০০:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : সপ্তাহের নির্দিষ্ট একদিন বন্ধ থাকার পর সূচি অনুযায়ী ফের চলতে শুরু করেছে মেট্রোরেল; প্রথম দিকের মত যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় আর না থাকায় লাইনে আর অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না দীর্ঘ সময়।
গতকাল বুধবার সকালে আগারগাঁও স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ফটকে থাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে, যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন আর চাপ না থাকায় তারা যেন বেশ স্বস্তিতে। সপ্তাহের একদিন মঙ্গলবার মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকে। বাকি দিনগুলোতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১০ মিনিট পরপর চলে এ বৈদ্যুতিক ট্রেন। উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৬০ টাকা দিয়ে ভ্রমণ করতে পারছেন যাত্রীরা।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর শঙ্কা মাথায় নিয়েই বুধবার সকাল ৯টায় আগারগাঁও স্টেশনে এসেছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহমেদ আব্দুল্লাহ নাফিস। প্রবেশ পথে যাত্রীদের লাইন আর চাপ না দেখে অবাক হওয়ার কথা জানালেন তিনি। সকালে আগারগাঁও স্টেশনে দেখা মিললো একদল কলেজ শিক্ষার্থীর। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসা এই শিক্ষার্থীরা জানালেন, তারা মেট্রোরেল দেখতেই ঢাকায় বেড়াতে এসেছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর ভাবনা ছিলো তাদের। কিন্তু এত সহজে ট্রেনে ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে যাবেন ভাবতে পারেননি। নিজেরা ভেন্ডিং মেশিনে টিকিট কেটেছেন। পুরো প্লাটফর্ম ঘুরে দেখেছেন। আগারগাঁও স্টেশনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য সুবীর ও প্রভাস জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লাইন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে কাউকেই লাইনে অপেক্ষা করতে হয়নি।
স্টেশনের পাশেই শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। টিকেট কাউন্টারের পাশে ইউনিফর্ম পরা এ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জটলা পাকিয়ে ছিল। তাদের মধ্যে সাফওয়ান আদনান বললো, আপাতত তাদের ট্রেন ভ্রমণের পরিকল্পনা নেই। স্টেশনটা ঘুরে দেখছে। লাইনে দাঁড়ানোর ভোগান্তি না থাকলে বৃহস্পতিবার তারা মেট্রোরেলে চড়বে বন্ধুরা মিলে। ঢাকা শহরের চিরচেনা যানজট এড়াতে সাড়ে ছয় বছর আগে উত্তরায় দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণযজ্ঞ শুরু হয়েছিল। গত ২৮ ডিসেম্বর এই মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মেট্রোরেল। চোখের সামনে ছয় বছর ধরে গড়ে ওঠা স্বপ্নের মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রার সাক্ষী হতে অসংখ্য মানুষ উত্তরা উত্তর স্টেশন ও আঁগারগাও স্টেশনে ভিড় করেন। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের। প্রথমদিনেই টিকেট ভেন্ডিং মেশিন বিকল হলে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। শুরুর কয়েক দিন ছিল যাত্রীদের প্রচ- চাপ। প্রয়োজন না হলেও শুধু মেট্রোরেল দেখতে এবং ট্রেনে চড়ার সাধ নিতেই স্টেশনে উপচে ভিড় তৈরি হয়। শুরুতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯টি স্টেশন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। নির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনে মেট্রোরেলে সুশৃঙ্খলভাবে চড়ছেন যাত্রীরা। মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটারে জন্য ৫ টাকা এবং সর্বনি¤œ ২০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করেছে সরকার। সেই হিসাবে দিয়াবাড়ির উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রত্যেক যাত্রীকে গুণতে হচ্ছে ৬০ টাকা। সূচি ধরে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকা যানজটের যন্ত্রণা অনেকটাই লাঘব হবে বলে প্রত্যাশা সরকারের।