সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের হলুদ সমারোহ। এসব সরিষা ফুলে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছির দল। সংগৃহীত মধু নিয়ে সঞ্চয় করছে ক্ষেতের পাশেই স্থাপিত মৌ বাক্সে। এতে সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন সরিষার উৎপাদন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে মধুর উৎপাদনও। সরিষা ও মধুর সমন্বিত চাষে লাভবান হচ্ছেন সরিষা ও মৌ চাষিরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ৭টি উপজেলায় এ বছর ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এসব সরিষা ক্ষেতের পাশে প্রায় ৯ হাজার মৌ বাক্স স্থাপন করেছেন মৌ চাষিরা।
কৃষিবিভাগের দাবি, কৃষকদের সরকারিভাবে সরিষা বীজ সহায়তা দেওয়ার কারণে এবার সাতক্ষীরায় পতিত জমিতেও সরিষার চাষ করেছেন কৃষকরা। বীজ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি কৃষি ক্ষেতের পাশে মৌচাষিদের মৌ বাক্স স্থাপনের সুযোগ দিতেও তাদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। এতে পরাগায়ন ভালো হওয়ায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে মধুর উৎপাদনও কয়েক গুণ বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী মাঠে সরিষা ক্ষেতের পাশে ১০০ মৌ বাক্স স্থাপন করেছেন মৌচাষি আব্দুর রহমান। যশোরের কেশবপুর থেকে তিনি মধু সংগ্রহের জন্য সেখানে এসেছেন। চলতি মৌসুমে তার ১০০টি বাক্স থেকে পাঁচ থেকে সাত মণ মধু উৎপাদন হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আগে সরিষা চাষিরা ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করতে দিতে চাইতো না। কিন্তু এবার কৃষি বিভাগের সহায়তায় তারা বেশ উৎসাহী। সরিষা চাষিরা জানান, সরিষা ক্ষেত থেকে মধু আহরণের জন্য মৌমাছি ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। এতে পরাগায়ন ভালো হয়। তাই উৎপাদনও বাড়ে। বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের আগে ভুল ধারণা ছিল। কিন্তু এবার কৃষি কর্মকর্তারা সেই ভুল ভেঙে দিয়েছেন। সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. জামাল উদ্দীন জানান, মৌমাছি সরিষার ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে। এতে সরিষা ফুলে সহজে পরাগায়ন ঘটে। তাই সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বাক্স স্থাপন করলে সরিষার ফলন অন্তত ২০ শতাংশ বাড়ে। পাশাপাশি মৌ চাষিরা মধু আহরণ করে লাভবান হন। এজন্য এবার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
সরিষা ও মধুর সমন্বিত চাষে লাভের আশা চাষিদের
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ