ঢাকা ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

২০২৩ সাল হবে বাংলাদেশের উন্নয়নে তাক লাগানোর বছর

  • আপডেট সময় : ১০:৩৯:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

মো. খসরু চৌধুরী সিআইপি : নতুন বছর শুরু হলো। প্রতিটি মানুষের জীবনে বছরের প্রথম দিনটি বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। নতুন বছরে পা দিয়ে মানুষ শপথ নেয় আগত দিনগুলোকে সুন্দরভাবে সাজানোর; বিদায়ী বছরের যা কিছু ভুলত্রুটি, যা কিছু গ্লানিময় পরিহার করার। শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, জাতীয়ভাবেও নতুন বছরটি ইতিবাচক হয়ে দেখা দেবে এমনটিই আশা করা হয়।
বাংলাদেশের জন্য বিদায়ী বছরটি ছিল নানা ক্ষেত্রে জাতীয় অর্জনের। বিদায়ী বছরে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কৃতিত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ। মেট্রোরেল যুগে ঘটেছে দেশের পদার্পণ। এ সাফল্য সত্ত্বেও বিশ্ববাসীর পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষ ২০২৩ সালকে বরণ করছে পাহাড়সম আশঙ্কা নিয়ে। জাতিসংঘ বলেছে, ২০২৩ সাল হতে পারে খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষের বছর। একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ নেতৃস্থানীয় অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো। করোনার মহাদুর্যোগ কাটিয়ে না উঠতেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে খাদ্যাভাবের বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। অর্থনৈতিক সংকট সব দেশের জন্য নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাসের বিবেচনায় বাঙালি এক প্রাচীন জাতি। গাঙ্গেয় বদ্বীপের অধিবাসীদের রয়েছে ৫ হাজার বছরের ঐতিহ্য। আমাদের আধুনিক ইতিহাসও অহংকার করার মতো। প্রকৃতি উদারভাবে আমাদের দান করেছে উর্বর মাটি। এ মাটিতে বীজ বুনলেই সহজে ভরে যায় ফসলের মাঠ। এ দেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় যতœ পেলে সোনার খনিতে রূপান্তরিত হয়। মানবসম্পদে সমৃদ্ধ এ দেশকে দরিদ্র বলার অবকাশ নেই। বাংলাদেশের মানুষ প্রতিকূল অবস্থা জয় করার সাহসও রাখে। প্রকৃতি আমাদের সেভাবেই সৃষ্টি করেছে। আমাদের রয়েছে পরিশ্রমী মানুষ। ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস চালালে সময়ের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জাতিকে সমৃদ্ধ বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়া কঠিন কিছু নয়। দরকার হীনমন্যতা ঝেড়ে ফেলে শিরদাঁড়া সোজা করা।
বিগত বছরে দেশের ইতিহাসে বিশাল প্রাপ্তি পদ্মা সেতু। ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেতু উদ্বোধন করেন। বছর শেষে ২৮ ডিসেম্বর দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্থাপিত হয় আরেকটি মাইলফলক মেট্রোরেল। এদিন উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের দিন জনসাধারণের চলাচলের জন্য এটি খুলে দেওয়া হয়। এর আগে ৭ নভেম্বর দেশের ২৫ জেলায় নবনির্মিত ১০০ সেতু এবং ২১ ডিসেম্বর দেশের ৫০টি জেলায় ২০২১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার সম্মিলিত দৈর্ঘ্যরে ১০০টি সড়ক ও মহাসড়ক উদ্বোধন দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করে। বিদায়ি বছরে আরেকটি মাইলফলক ছিল পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী ২১ মার্চ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন।
বিদায়ি বছরে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির ঢেউ লাগে দেশেও। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বাড়তে শুরু করে। এতে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির হারও বাড়তে থাকে। আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে এবং ডলারের সংকট মোকাবিলায় এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে এলসি মার্জিন আরোপ করে। এসব পদক্ষেপের ফলে সেপ্টেম্বর থেকে মূল্যস্ফীতির হার কমতে থাকে। বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশ কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এতে লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত ছিল দেশ। যদিও বছর শেষে চাহিদা কমায় লোডশেডিং তেমন ছিল না।
২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৬২ হাজার ৩২১ জন। মৃত্যু হয় ২৮১ জনের। একই সময় পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ৪ লাখ ৬০ হাজার ৮০৬ জনের। মারা যায় ১ হাজার ৪৫৮ জন। বিদায়ি বছরে চট্টগ্রামের বিএম কনটেইনার ডিপোর অগ্নিকা-ে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। ২৪-২৫ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশে ১৬ জেলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ৬০ জনের বেশি যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বছরের অন্যান্য আলোচিত ঘটনার মধ্যে রয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে জাতীয় মহিলা ফুটবল দল নেপালকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে প্রথম শিরোপা অর্জন করা। বিদায়ি বছরে দেশ-বিদেশে আমরা অনেক গুণীজনকে হারিয়েছি। এদের মধ্যে সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী; বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী; খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, লেখক ও ভাষাসৈনিক আবুল মাল আবদুল মুহিত; লেখক, অনুবাদক, প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেন; বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক খেলোয়াড় মোশারফ হোসেন রুবেল; গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার; সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলম খান; অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ; অভিনেতা, নাট্যকার মাসুম আজিজ; গীতিকার ও সাংবাদিক কে জি মুস্তাফা; চলচ্চিত্র নির্মাতা আজিজুর রহমান; কণ্ঠশিল্পী আকবর; তরুণ গীতিকার ও সাংবাদিক ওমর ফারুক বিশাল; ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বিশ্ব ফুটবলের রাজা পেলে; ভারতরতœ লতা মঙ্গেশকর, সংগীতশিল্পী নির্মলা মিশ্র, বাপ্পী লাহিড়ী; কিংবদন্তি ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তাদের সবার প্রতি রইল আমাদের অশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। বাংলাদেশ আজ ‘উন্নয়নের বিস্ময়’। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিলের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশসহ ‘নেক্সট ইলেভেন’ভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি ইউরোপের ২৭ দেশের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ সংস্থা জেপি মর্গান বাংলাদেশকে ‘ফ্রন্টিয়ার ফাইভ’ বা অগ্রগামী পাঁচ দেশের অন্তর্ভুক্ত করেছে। দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কথা বলে যে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে গিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংকও এখন বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এ সবই বাংলাদেশের অর্জন। একজন বাঙালি হিসেবে আমরা এ নিয়ে গর্ব অনুভব করি। আমরা আশা করি ২০২৩ সাল হবে বাংলাদেশের উন্নয়নে তাক লাগানো একটি বছর। নতুন বছরে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে, সাফল্যের পথে ২০২৩ সাল হোক একটি মাইলফলক।
লেখক: রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা। পরিচালক, বিজিএমইএ; শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ; চেয়ারম্যান, নিপা গ্রুপ ও কেসি ফাউন্ডেশন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনবহুল এলাকায় যুদ্ধবিমানের প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন

২০২৩ সাল হবে বাংলাদেশের উন্নয়নে তাক লাগানোর বছর

আপডেট সময় : ১০:৩৯:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩

মো. খসরু চৌধুরী সিআইপি : নতুন বছর শুরু হলো। প্রতিটি মানুষের জীবনে বছরের প্রথম দিনটি বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। নতুন বছরে পা দিয়ে মানুষ শপথ নেয় আগত দিনগুলোকে সুন্দরভাবে সাজানোর; বিদায়ী বছরের যা কিছু ভুলত্রুটি, যা কিছু গ্লানিময় পরিহার করার। শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, জাতীয়ভাবেও নতুন বছরটি ইতিবাচক হয়ে দেখা দেবে এমনটিই আশা করা হয়।
বাংলাদেশের জন্য বিদায়ী বছরটি ছিল নানা ক্ষেত্রে জাতীয় অর্জনের। বিদায়ী বছরে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কৃতিত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ। মেট্রোরেল যুগে ঘটেছে দেশের পদার্পণ। এ সাফল্য সত্ত্বেও বিশ্ববাসীর পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষ ২০২৩ সালকে বরণ করছে পাহাড়সম আশঙ্কা নিয়ে। জাতিসংঘ বলেছে, ২০২৩ সাল হতে পারে খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষের বছর। একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ নেতৃস্থানীয় অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো। করোনার মহাদুর্যোগ কাটিয়ে না উঠতেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে খাদ্যাভাবের বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। অর্থনৈতিক সংকট সব দেশের জন্য নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাসের বিবেচনায় বাঙালি এক প্রাচীন জাতি। গাঙ্গেয় বদ্বীপের অধিবাসীদের রয়েছে ৫ হাজার বছরের ঐতিহ্য। আমাদের আধুনিক ইতিহাসও অহংকার করার মতো। প্রকৃতি উদারভাবে আমাদের দান করেছে উর্বর মাটি। এ মাটিতে বীজ বুনলেই সহজে ভরে যায় ফসলের মাঠ। এ দেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় যতœ পেলে সোনার খনিতে রূপান্তরিত হয়। মানবসম্পদে সমৃদ্ধ এ দেশকে দরিদ্র বলার অবকাশ নেই। বাংলাদেশের মানুষ প্রতিকূল অবস্থা জয় করার সাহসও রাখে। প্রকৃতি আমাদের সেভাবেই সৃষ্টি করেছে। আমাদের রয়েছে পরিশ্রমী মানুষ। ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস চালালে সময়ের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জাতিকে সমৃদ্ধ বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়া কঠিন কিছু নয়। দরকার হীনমন্যতা ঝেড়ে ফেলে শিরদাঁড়া সোজা করা।
বিগত বছরে দেশের ইতিহাসে বিশাল প্রাপ্তি পদ্মা সেতু। ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেতু উদ্বোধন করেন। বছর শেষে ২৮ ডিসেম্বর দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্থাপিত হয় আরেকটি মাইলফলক মেট্রোরেল। এদিন উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের দিন জনসাধারণের চলাচলের জন্য এটি খুলে দেওয়া হয়। এর আগে ৭ নভেম্বর দেশের ২৫ জেলায় নবনির্মিত ১০০ সেতু এবং ২১ ডিসেম্বর দেশের ৫০টি জেলায় ২০২১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার সম্মিলিত দৈর্ঘ্যরে ১০০টি সড়ক ও মহাসড়ক উদ্বোধন দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করে। বিদায়ি বছরে আরেকটি মাইলফলক ছিল পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী ২১ মার্চ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন।
বিদায়ি বছরে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির ঢেউ লাগে দেশেও। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বাড়তে শুরু করে। এতে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির হারও বাড়তে থাকে। আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে এবং ডলারের সংকট মোকাবিলায় এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে এলসি মার্জিন আরোপ করে। এসব পদক্ষেপের ফলে সেপ্টেম্বর থেকে মূল্যস্ফীতির হার কমতে থাকে। বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বেশ কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এতে লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত ছিল দেশ। যদিও বছর শেষে চাহিদা কমায় লোডশেডিং তেমন ছিল না।
২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৬২ হাজার ৩২১ জন। মৃত্যু হয় ২৮১ জনের। একই সময় পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ৪ লাখ ৬০ হাজার ৮০৬ জনের। মারা যায় ১ হাজার ৪৫৮ জন। বিদায়ি বছরে চট্টগ্রামের বিএম কনটেইনার ডিপোর অগ্নিকা-ে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। ২৪-২৫ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশে ১৬ জেলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ৬০ জনের বেশি যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বছরের অন্যান্য আলোচিত ঘটনার মধ্যে রয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে জাতীয় মহিলা ফুটবল দল নেপালকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে প্রথম শিরোপা অর্জন করা। বিদায়ি বছরে দেশ-বিদেশে আমরা অনেক গুণীজনকে হারিয়েছি। এদের মধ্যে সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী; বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী; খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, লেখক ও ভাষাসৈনিক আবুল মাল আবদুল মুহিত; লেখক, অনুবাদক, প্রকাশক কাজী আনোয়ার হোসেন; বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক খেলোয়াড় মোশারফ হোসেন রুবেল; গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার; সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলম খান; অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ; অভিনেতা, নাট্যকার মাসুম আজিজ; গীতিকার ও সাংবাদিক কে জি মুস্তাফা; চলচ্চিত্র নির্মাতা আজিজুর রহমান; কণ্ঠশিল্পী আকবর; তরুণ গীতিকার ও সাংবাদিক ওমর ফারুক বিশাল; ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বিশ্ব ফুটবলের রাজা পেলে; ভারতরতœ লতা মঙ্গেশকর, সংগীতশিল্পী নির্মলা মিশ্র, বাপ্পী লাহিড়ী; কিংবদন্তি ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তাদের সবার প্রতি রইল আমাদের অশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। বাংলাদেশ আজ ‘উন্নয়নের বিস্ময়’। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিলের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশসহ ‘নেক্সট ইলেভেন’ভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি ইউরোপের ২৭ দেশের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ সংস্থা জেপি মর্গান বাংলাদেশকে ‘ফ্রন্টিয়ার ফাইভ’ বা অগ্রগামী পাঁচ দেশের অন্তর্ভুক্ত করেছে। দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কথা বলে যে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে গিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংকও এখন বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এ সবই বাংলাদেশের অর্জন। একজন বাঙালি হিসেবে আমরা এ নিয়ে গর্ব অনুভব করি। আমরা আশা করি ২০২৩ সাল হবে বাংলাদেশের উন্নয়নে তাক লাগানো একটি বছর। নতুন বছরে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে, সাফল্যের পথে ২০২৩ সাল হোক একটি মাইলফলক।
লেখক: রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা। পরিচালক, বিজিএমইএ; শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ; চেয়ারম্যান, নিপা গ্রুপ ও কেসি ফাউন্ডেশন।