নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরে মায়ের জানাজায় অংশ নিতে যাওয়া এক বিএনপি নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখার ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এটা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? দেশি-বিদেশি সবাই দেখেছেন। মরার ওপর ডান্ডাবেরি পরান। আপনাদেরতো মরা মানুষের ওপর নৃত্য করার অভ্যাস আছে। পৈশাচিক মনোবৃত্তির পরিণতি ভয়াবহ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর আরও বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবকে বলে খেলা খেলা বন্ধ করেন। উনি ততো ভালো খেলোয়াড় নন। ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তার পরিবারের সদস্যদের কলঙ্ক আছে। আপনি পদত্যাগ করে তাকে খেলতে দেন। প্রকাশ্যে যদি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে পারে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলব, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে ঘোষণা দেন, সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটাধিকারের স্বার্থে আমি পদত্যাগ করলাম, রাষ্ট্রপতিকে বলেন সংসদ বিলুপ্ত করতে। বাংলাদেশের মানুষ পাথরের মতো শক্ত আবার কাদার মতো নরম। তারা আপনাকে ক্ষমা করলেও করতে পারে।’ ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, এ-দিন পুলিশের কারা ডিউটি করছেন আমরা দুই চারজন চিনলেও তাদের তালিকা পুলিশের কাছে আছে।
বাধার পরও দশ বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল হয়েছে জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গোয়েন্দাসংস্থা সরকারকে সঠিক তথ্য দেয় না। যে তথ্য দিলে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) খুশি হবেন, সেই তথ্য দেয়। গোয়েন্দা সংস্থা সঠিক তথ্য দেবে আপনার পদত্যাগের পর যে সরকার আসবে সেই সরকারের কাছে। কাকে দিয়ে গুম করিয়েছেন, খুন করিয়েছেন তারা তখন হবে রাজস্বাক্ষী। স্বৈরাচার এরশাদ এই সরকারের কাছে শিশু উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সরকারকে কী বলবেন স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, লুটতরাজ, কোনটা বলবেন? তিনি বলেন, ব্যাংকে টাকা নেই, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ শূন্য। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন টাকা আছে। টাকা আছে আপনার ও আপনার আত্মীয় স্বজনের কাছে। এই টাকা ফেরত দিলে এক বছর নয়, পাঁচ বছরের বাজেট হবে। বিদেশ থেকে ঋণ আনতে হবে না। আন্দোলন করি বা না করি এই সরকারকে যেতে হবে উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, এখন আপনারা আমাদের প্রতিদিন আমাদের কোর্টে নেন। কিন্তু ক্ষমতা থেকে সরলে আপনাদের ২৪ ঘণ্টা কোর্টে থাকতে হবে। আমরা মামলা না করলেও দেশের ১৮ কোটি মানুষ মামলার প্রস্তুতি নেবে।
‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম,সহ কারাবন্দী নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জিয়া মঞ্চের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়। এতে আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়জ উল্যাহ ইকবালের সভাপতিত্বে ও সদস্য আবু তালেবের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।