ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

দেশে নির্যাতিত নারী-শিশুর ন্যায়বিচার পাওয়ার হার কম :ব্র্যাকের গবেষণা

  • আপডেট সময় : ০১:৩০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৯৩ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু প্রতিবেদন : ‘বিভিন্ন সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধার কারণে দেশে নির্যাতনের শিকার নারী ও কন্যাশিশুদের ন্যায়বিচার পাওয়ার হার আশঙ্কাজনকহারে কম। জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও কন্যাশিশুদের অধিকাংশই তাদের সঙ্গে সংঘটিত অপরাধের বিচার চাইতে পারে না। এমনকি তারা মামলা দায়ের করতে পারলেও তদন্ত বিলম্বিত হয়, বিচার দীর্ঘায়িত হয় এবং শেষ পর্যন্ত খুব কম মামালায়ই দায়ী ব্যক্তিরা দোষী সাব্যস্ত হয়।’
ব্র্যাকের এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়েদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে পাবলিক প্রসিকিউশন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা’ শীর্ষক অ্যাডভোকেসি সংলাপে এই গবেষণার ফল এবং সুপারিশ তুলে ধরা হয়। গবেষণা তুলে ধরে বক্তারা জানান, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা সংক্রন্ত মামলাগুলোর ক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউশন সিস্টেমের বিদ্যমান দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে এবং একটি সারভাইভারকেন্দ্রিক সংস্কার প্রক্রিয়ার সুপারিশ করতে ব্র্যাক একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে।
অনুষ্ঠানে গবেষক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ৩৮৫টি মামলার ৫০৫ জন আসামির মধ্যে মাত্র ৩৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ছিল মাত্র ৩.৬ শতাংশ। তিনি পাবলিক প্রসিকিউটরদের জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের কর্মক্ষমতা ও জবাবদিহিতা নিরীক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার মোছা. মোফেলা খাতুন মেমী নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতার বিচার নিশ্চিত করতে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের আইনি ও বিভাগীয় জবাবদিহিতা ও দায়িত্বের কথা তুলে ধরেন। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান জানান, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ নিশ্চিত করতে বিচার কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য জেন্ডার সংবেদনশীলতা প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। ঢাকা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ মিসেস তানজিনা ইসমাইল বলেন, নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলাগুলোর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রসিকিউটরদের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিনের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ ঢাকা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফরেনসিক পরীক্ষার ব্যবস্থা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অর্গানাইজেশনের (ঘঅখঝঙ) পরিচালক (জেলা জজ) মোহাম্মদ আল মামুন আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইনি সহায়তা পরিষেবা নিয়ে আলোচনা করেন। ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির পরিচালক নবনিতা চৌধুরী আদালতে নারী ও শিশুবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং প্রসিকিউশন সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জেন্ডার সংবেদনশীলতা অনুশীলন নিশ্চিত করতে সহায়তা করে এমন উদ্যোগুলো তুলে ধরেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

দেশে নির্যাতিত নারী-শিশুর ন্যায়বিচার পাওয়ার হার কম :ব্র্যাকের গবেষণা

আপডেট সময় : ০১:৩০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২

নারী ও শিশু প্রতিবেদন : ‘বিভিন্ন সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধার কারণে দেশে নির্যাতনের শিকার নারী ও কন্যাশিশুদের ন্যায়বিচার পাওয়ার হার আশঙ্কাজনকহারে কম। জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও কন্যাশিশুদের অধিকাংশই তাদের সঙ্গে সংঘটিত অপরাধের বিচার চাইতে পারে না। এমনকি তারা মামলা দায়ের করতে পারলেও তদন্ত বিলম্বিত হয়, বিচার দীর্ঘায়িত হয় এবং শেষ পর্যন্ত খুব কম মামালায়ই দায়ী ব্যক্তিরা দোষী সাব্যস্ত হয়।’
ব্র্যাকের এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়েদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে পাবলিক প্রসিকিউশন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা’ শীর্ষক অ্যাডভোকেসি সংলাপে এই গবেষণার ফল এবং সুপারিশ তুলে ধরা হয়। গবেষণা তুলে ধরে বক্তারা জানান, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা সংক্রন্ত মামলাগুলোর ক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউশন সিস্টেমের বিদ্যমান দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে এবং একটি সারভাইভারকেন্দ্রিক সংস্কার প্রক্রিয়ার সুপারিশ করতে ব্র্যাক একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে।
অনুষ্ঠানে গবেষক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ৩৮৫টি মামলার ৫০৫ জন আসামির মধ্যে মাত্র ৩৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ছিল মাত্র ৩.৬ শতাংশ। তিনি পাবলিক প্রসিকিউটরদের জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের কর্মক্ষমতা ও জবাবদিহিতা নিরীক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার মোছা. মোফেলা খাতুন মেমী নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতার বিচার নিশ্চিত করতে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের আইনি ও বিভাগীয় জবাবদিহিতা ও দায়িত্বের কথা তুলে ধরেন। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান জানান, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ নিশ্চিত করতে বিচার কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য জেন্ডার সংবেদনশীলতা প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। ঢাকা জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ মিসেস তানজিনা ইসমাইল বলেন, নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলাগুলোর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রসিকিউটরদের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিনের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ ঢাকা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফরেনসিক পরীক্ষার ব্যবস্থা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অর্গানাইজেশনের (ঘঅখঝঙ) পরিচালক (জেলা জজ) মোহাম্মদ আল মামুন আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইনি সহায়তা পরিষেবা নিয়ে আলোচনা করেন। ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির পরিচালক নবনিতা চৌধুরী আদালতে নারী ও শিশুবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং প্রসিকিউশন সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জেন্ডার সংবেদনশীলতা অনুশীলন নিশ্চিত করতে সহায়তা করে এমন উদ্যোগুলো তুলে ধরেন।