ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই ডোজ ভ্যাকসিনে ৯৮ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি কমে

  • আপডেট সময় : ০১:৩৫:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১
  • ৫০ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনসমুহ করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হচ্ছে। ভারতীয় এক গবেষণায় বিষয়টি উঠে এসেছে। চন্ডীগড়ের পোস্ট গ্রাজুয়েট ইন্সটিটিউশন অব মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড রিসার্চ নামক প্রতিস্থান সম্প্রতি পাঞ্জাবের পুলিশ কর্মকর্তাদের উপর এই গবেষণা চালান।
গবেষণায় তারা দেখতে পান, ভ্যাকসিনের এক ডোজ মানুষের ৯২ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যুঝুকি কমায় এবং যারা ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন তাদের সুরক্ষা ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। গবেষণার বরাত দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা টিকা নেন নি, করোনা আক্রান্ত এমন এক হাজার ব্যাক্তির মধ্যে ৩ শতাংশ ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে। অথচ প্রথম ডোজ গ্রহনকারীদের মধ্যে সেই হার ০.২৫ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন কারী ব্যাক্তিদের মৃত্যুহার ০.০৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছে।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর ট্রান্সফরমিং ইন্ডিয়া’র সদস্য ডাঃ ভি কে পাল বলেন, “গবেষণাটি প্রমান করেছে যে ভারতে অব্যাহত ভ্যাকসিন কার্যক্রম মানুষের করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুঝুকি কমাতে সক্ষম হচ্ছে। এটি ক্রমেই ভাইরাসটি নির্মুলে কাজ করে যাচ্ছে। অচিরেই আমরা সামগ্রিকভাবে ও বৃহৎ আকারে এর ফলাফল দেখতে পাবো। টিকাগুলো মানব শরীরের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত এ ব্যপারে কোন সন্দেহ নেই।”
তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন উৎস হতে টিকা সংগ্রহে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে। সরকারের এখন পরিকল্পনা হচ্ছে দেশের প্রতিটি অঞ্চল ও প্রত্যন্ত এলাকায় যত বেশি মানুষকে দ্রুত এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতায় আনা যায় সে বিষয়ে নজর দেয়া।”
ভ্যাকসিন প্রাপ্ত ব্যাক্তিদের নিয়মিত মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দিয়েছেন ডাঃ পাল।
ডেলটার বিরুদ্ধে ৬৫% সুরক্ষা দেয় কোভ্যাক্সিন : ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন। করোনার ভারতীয় ধরন ডেলটার বিরুদ্ধে এ টিকা ৬৫ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম। তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারত বায়োটেক। খবর এনডিটিভির।
বিবৃতিতে ভারত বায়োটেক জানিয়েছে, যাঁদের শরীরে করোনার উপসর্গ নেই, তাঁদের ওপর ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে কোভ্যাক্সিন। আর যাঁদের উপসর্গ বেশ গুরুতর, তাঁদের ওপর এর কার্যকারিতা ৯৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
ভারত বায়োটেকের করোনার টিকার সামগ্রিক কার্যকারিতা ৭৭ দশমিক ৮ শতাংশ বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর করোনার অতিসংক্রামক ডেলটা ধরনের বিরুদ্ধে কোভ্যাক্সিন ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম, তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এমনটাই জানা গেছে।
ভারতের ২৫টি হাসপাতালে ১৩০ জন কোভিড-১৯ রোগীর ওপর কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল করা হয়েছে। ট্রায়ালে অংশ নেওয়াদের বয়স ১৮ থেকে ৯৮ বছরের মধ্যে ছিল। টিকা নেওয়ার পরে তাঁদের ১২ শতাংশের শরীরে মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের কম অংশগ্রহণকারীর গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছে ভারত বায়োটেক।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির সঙ্গে যৌথভাবে কোভ্যাক্সিন উৎপাদন করছে ভারত বায়োটেক। ভারতে করোনার টিকাদান কার্যক্রমে শুরু থেকেই সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের পাশাপাশি ভারত বায়োটেকের এই টিকা ব্যবহার হয়ে আসছে।
ভারত ছাড়াও ব্রাজিল, ইরান, ফিলিপাইন, মেক্সিকোসহ ১৬টি দেশ জরুরি প্রয়োজনে ভারত বায়োটেকের উৎপাদিত করোনার এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখনো এই টিকার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়নি। প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেতে সংস্থাটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত বায়োটেক।
ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষ্ণা ইলা বলেন, ভারতজুড়ে পরিচালিত সবচেয়ে বড় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কোভ্যাক্সিনের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্য দিয়ে টিকা উৎপাদনে ভারতের সক্ষমতার এক ধাপ এগিয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন উৎপাদনের আগে ভারত বায়োটেক ইনফ্লুয়েঞ্জা (এইচ১এন১), রোটাভাইরাস, র‌্যাবিস, চিকুনগুনিয়া, জিকা, কলেরার টিকা তৈরি করেছে। টাইফয়েড প্রতিরোধক টিটেনাস-টক্সিড টিকা উৎপাদনের অভিজ্ঞতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মহান বিজয়ের মাস শুরু

দুই ডোজ ভ্যাকসিনে ৯৮ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি কমে

আপডেট সময় : ০১:৩৫:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনসমুহ করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হচ্ছে। ভারতীয় এক গবেষণায় বিষয়টি উঠে এসেছে। চন্ডীগড়ের পোস্ট গ্রাজুয়েট ইন্সটিটিউশন অব মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড রিসার্চ নামক প্রতিস্থান সম্প্রতি পাঞ্জাবের পুলিশ কর্মকর্তাদের উপর এই গবেষণা চালান।
গবেষণায় তারা দেখতে পান, ভ্যাকসিনের এক ডোজ মানুষের ৯২ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যুঝুকি কমায় এবং যারা ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন তাদের সুরক্ষা ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। গবেষণার বরাত দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা টিকা নেন নি, করোনা আক্রান্ত এমন এক হাজার ব্যাক্তির মধ্যে ৩ শতাংশ ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে। অথচ প্রথম ডোজ গ্রহনকারীদের মধ্যে সেই হার ০.২৫ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহন কারী ব্যাক্তিদের মৃত্যুহার ০.০৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছে।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর ট্রান্সফরমিং ইন্ডিয়া’র সদস্য ডাঃ ভি কে পাল বলেন, “গবেষণাটি প্রমান করেছে যে ভারতে অব্যাহত ভ্যাকসিন কার্যক্রম মানুষের করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুঝুকি কমাতে সক্ষম হচ্ছে। এটি ক্রমেই ভাইরাসটি নির্মুলে কাজ করে যাচ্ছে। অচিরেই আমরা সামগ্রিকভাবে ও বৃহৎ আকারে এর ফলাফল দেখতে পাবো। টিকাগুলো মানব শরীরের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত এ ব্যপারে কোন সন্দেহ নেই।”
তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন উৎস হতে টিকা সংগ্রহে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে। সরকারের এখন পরিকল্পনা হচ্ছে দেশের প্রতিটি অঞ্চল ও প্রত্যন্ত এলাকায় যত বেশি মানুষকে দ্রুত এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতায় আনা যায় সে বিষয়ে নজর দেয়া।”
ভ্যাকসিন প্রাপ্ত ব্যাক্তিদের নিয়মিত মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দিয়েছেন ডাঃ পাল।
ডেলটার বিরুদ্ধে ৬৫% সুরক্ষা দেয় কোভ্যাক্সিন : ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন। করোনার ভারতীয় ধরন ডেলটার বিরুদ্ধে এ টিকা ৬৫ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম। তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারত বায়োটেক। খবর এনডিটিভির।
বিবৃতিতে ভারত বায়োটেক জানিয়েছে, যাঁদের শরীরে করোনার উপসর্গ নেই, তাঁদের ওপর ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে কোভ্যাক্সিন। আর যাঁদের উপসর্গ বেশ গুরুতর, তাঁদের ওপর এর কার্যকারিতা ৯৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
ভারত বায়োটেকের করোনার টিকার সামগ্রিক কার্যকারিতা ৭৭ দশমিক ৮ শতাংশ বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর করোনার অতিসংক্রামক ডেলটা ধরনের বিরুদ্ধে কোভ্যাক্সিন ৬৫ দশমিক ২ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম, তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এমনটাই জানা গেছে।
ভারতের ২৫টি হাসপাতালে ১৩০ জন কোভিড-১৯ রোগীর ওপর কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল করা হয়েছে। ট্রায়ালে অংশ নেওয়াদের বয়স ১৮ থেকে ৯৮ বছরের মধ্যে ছিল। টিকা নেওয়ার পরে তাঁদের ১২ শতাংশের শরীরে মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। শূন্য দশমিক ৫ শতাংশের কম অংশগ্রহণকারীর গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছে ভারত বায়োটেক।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির সঙ্গে যৌথভাবে কোভ্যাক্সিন উৎপাদন করছে ভারত বায়োটেক। ভারতে করোনার টিকাদান কার্যক্রমে শুরু থেকেই সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের পাশাপাশি ভারত বায়োটেকের এই টিকা ব্যবহার হয়ে আসছে।
ভারত ছাড়াও ব্রাজিল, ইরান, ফিলিপাইন, মেক্সিকোসহ ১৬টি দেশ জরুরি প্রয়োজনে ভারত বায়োটেকের উৎপাদিত করোনার এই টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখনো এই টিকার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়নি। প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেতে সংস্থাটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত বায়োটেক।
ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষ্ণা ইলা বলেন, ভারতজুড়ে পরিচালিত সবচেয়ে বড় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কোভ্যাক্সিনের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্য দিয়ে টিকা উৎপাদনে ভারতের সক্ষমতার এক ধাপ এগিয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন উৎপাদনের আগে ভারত বায়োটেক ইনফ্লুয়েঞ্জা (এইচ১এন১), রোটাভাইরাস, র‌্যাবিস, চিকুনগুনিয়া, জিকা, কলেরার টিকা তৈরি করেছে। টাইফয়েড প্রতিরোধক টিটেনাস-টক্সিড টিকা উৎপাদনের অভিজ্ঞতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।