ঢাকা ০২:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বধ্যভূমি সংরক্ষণে উদাসীনতা

  • আপডেট সময় : ১২:৪৯:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা : স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও চুনারুঘাট পৌর শহরে অবস্থিত স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত চুনারুঘাটে বধ্যভূমি সংরক্ষণে জাতীয় সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতারা উদাসিনতা দেখিয়ে চলেছেন। এ কারণে স্মৃতির পাতা থেকে হারাতে বসেছে একটি ইতিহাস।
স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় চুনারুঘাট পৌর শহরে অবস্থিত পাক হানাদারের ইউসুফ খান বাহিনীর একটি ক্যাম্প ছিল। এ বাহিনীর সদস্যরা উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনতাকামী সাধারণ মানুষকে হত্যা করে বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। অনেক মানুষকে হত্যা করে খোয়াই নদীতে ভাসিয়ে দেয় এবং অনেককে পৌর শহরের বর্তমান পুরাতন খোয়াই নদীর তীরে পুঁতে রাখে। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর চুনারুঘাট উপজেলা পাকবাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। স্বাধীনতার পর চুনারুঘাট-মাধবপুর সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করে আসছেন। আওয়ামী লীগের টিকিটে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এনামুল হক মোস্তফা শহীদ (প্রয়াত)। তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন। গত দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি এখন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী। প্রতিবারই চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পৌরসভার বর্তমান মেয়রও আওয়ামী লীগের। এতোসবের পরও চুনারুঘাট বধ্যভূমি সংরক্ষণ বা এর উন্নয়নে নেয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। ২০১৮ সালে তৎক্ষালীন নির্বাহী কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবি চুনারুঘাট বধ্যভূমি চিহ্নিত ও দখলমুক্ত করে এখানে একটি নামফলক স্থাপন করেন এবং বধ্যভূমির চারপাশে তারেরবেড়া নির্মাণ করেন। রাতের আঁধারে জমি দখলকারীরা সেই নাম ফলক ঘঁষা মাজা করে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, এরশাদ সরকারের আমলে খোয়াই নদীটি গতি পরিবর্তন করে পাকুরিয়া এলাকায় নেয়া হলে পৌরশহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খোয়াই নদীটি পরিত্যক্ত হয়। এরপরই পুরাতন খোয়াই নদী অবৈধ দখলদারের দখলে চলে যায়। একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বধ্যভূমিটিও পুরাতন খোয়াই নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় সেটাও দখলের পাঁয়তারা চলছে। তারা অনতিবিলম্বে বধ্যভূমির উন্নয়ন চান।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ বিশ্বাস বলেন, বধ্যভূমির উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে; কিন্তু বধ্যভূমিটি নদী তীরের আওয়াধীন থাকায় নানান জটিলতা দেখা দিয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বধ্যভূমি সংরক্ষণে উদাসীনতা

আপডেট সময় : ১২:৪৯:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা : স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও চুনারুঘাট পৌর শহরে অবস্থিত স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত চুনারুঘাটে বধ্যভূমি সংরক্ষণে জাতীয় সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতারা উদাসিনতা দেখিয়ে চলেছেন। এ কারণে স্মৃতির পাতা থেকে হারাতে বসেছে একটি ইতিহাস।
স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় চুনারুঘাট পৌর শহরে অবস্থিত পাক হানাদারের ইউসুফ খান বাহিনীর একটি ক্যাম্প ছিল। এ বাহিনীর সদস্যরা উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনতাকামী সাধারণ মানুষকে হত্যা করে বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। অনেক মানুষকে হত্যা করে খোয়াই নদীতে ভাসিয়ে দেয় এবং অনেককে পৌর শহরের বর্তমান পুরাতন খোয়াই নদীর তীরে পুঁতে রাখে। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর চুনারুঘাট উপজেলা পাকবাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। স্বাধীনতার পর চুনারুঘাট-মাধবপুর সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করে আসছেন। আওয়ামী লীগের টিকিটে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এনামুল হক মোস্তফা শহীদ (প্রয়াত)। তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন। গত দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি এখন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী। প্রতিবারই চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। পৌরসভার বর্তমান মেয়রও আওয়ামী লীগের। এতোসবের পরও চুনারুঘাট বধ্যভূমি সংরক্ষণ বা এর উন্নয়নে নেয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। ২০১৮ সালে তৎক্ষালীন নির্বাহী কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবি চুনারুঘাট বধ্যভূমি চিহ্নিত ও দখলমুক্ত করে এখানে একটি নামফলক স্থাপন করেন এবং বধ্যভূমির চারপাশে তারেরবেড়া নির্মাণ করেন। রাতের আঁধারে জমি দখলকারীরা সেই নাম ফলক ঘঁষা মাজা করে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, এরশাদ সরকারের আমলে খোয়াই নদীটি গতি পরিবর্তন করে পাকুরিয়া এলাকায় নেয়া হলে পৌরশহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খোয়াই নদীটি পরিত্যক্ত হয়। এরপরই পুরাতন খোয়াই নদী অবৈধ দখলদারের দখলে চলে যায়। একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বধ্যভূমিটিও পুরাতন খোয়াই নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় সেটাও দখলের পাঁয়তারা চলছে। তারা অনতিবিলম্বে বধ্যভূমির উন্নয়ন চান।
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ বিশ্বাস বলেন, বধ্যভূমির উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে; কিন্তু বধ্যভূমিটি নদী তীরের আওয়াধীন থাকায় নানান জটিলতা দেখা দিয়েছে।