ঢাকা ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৮ ডিসেম্বর মুক্ত হয় কুমিল্লা

  • আপডেট সময় : ১২:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১১৬ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লা সংবাদদাতা : ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর পাক হানাদার মুক্ত হয় কুমিল্লা। বাংলার বীর সন্তানদের দাপটে পিছু হটে পালায় পাকিস্তান বাহিনী। ভোর হতেই কুমিল্লার আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে উঠে মুক্তিকামী মানুষের মিছিলে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনীর চূড়ান্ত অভিযান শুরু হয়। বিবির বাজার, কটক বাজার, নিশ্চিন্তপুর, চৌদ্দগ্রাম, বেলুনিয়া, ইটাল্লা ও মাঝিগাছা, সদর দক্ষিণের বিশ্বরোড এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। হানাদার বাহিনী মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে পিছু হটে। ২৮ নভেম্বর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদিঘী এলাকা প্রথম মুক্ত হলে কুমিল্লা বিমানবন্দরের ঘাঁটি থেকে শহরসহ পার্শ্ববর্তী সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন চালায়। পরে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে পাক সেনাদের বিমানবন্দরের ঘাঁটির পতনের পর ৮ ডিসেম্বর প্রত্যুষে কুমিল্লা শহরকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়।
কুমিল্লা জেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, ৮ ডিসেম্বর ভোর রাতে গেরিলা দল কুমিল্লায় প্রবেশ করে বিভিন্ন অপারেশন পরিচালনা জন্য কুমিল্লার বালুতুপায় এসে অপেক্ষা করতে থাকে। বালুতুপা থেকে ৮ মাইল দূরে পাকসেনারা বাংকার ডিফেন্স নিয়েছিলো। নবম বেঙ্গলের সেনা অল্প সংখ্যক হওয়ায় তারা পাকিস্তানিদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়নি, পাকিস্তানি সেনাদের পিছনের দিক দিয়ে ৬ ডিসেম্বর কুমিল্লা শহরে প্রবেশ করে। শিখজাট ব্যাটালিয়ন বিমানবন্দর আক্রমণ করে ৬ ডিসেম্বর রাতে। রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধ হয় সেখানে। এই আক্রমণে শিখজাট ও মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজন আহত ও নিহত হয়। পাকসেনারা বিমান বন্দর ছেড়ে চলে যায়। মূলত এর মধ্য দিয়ে মুক্ত হয় কুমিল্লা শহর। ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা শহরে জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে প্রবেশ করে শহরের সকল স্তরের মানুষ স্বাধীন বাংলার পতাকা নিয়ে আনন্দে উল্লাসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বরণ করে নেয়। স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজ পতাকা উড়ে কুমিল্লার সার্কিট হাউজ, কালেক্টরেট ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। বিজয় মিছিল এবং শ্লোগানে সমস্ত শহর মুখরিত হয়ে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। সে এক অপূর্ব দৃশ্য! বিজয়ের কি যে আনন্দ! প্রতি বছরের ন্যায়ে এবারও নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পালিত হয় কুমিল্লা মুক্ত দিবস।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

৮ ডিসেম্বর মুক্ত হয় কুমিল্লা

আপডেট সময় : ১২:২৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২২

কুমিল্লা সংবাদদাতা : ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর পাক হানাদার মুক্ত হয় কুমিল্লা। বাংলার বীর সন্তানদের দাপটে পিছু হটে পালায় পাকিস্তান বাহিনী। ভোর হতেই কুমিল্লার আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে উঠে মুক্তিকামী মানুষের মিছিলে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনীর চূড়ান্ত অভিযান শুরু হয়। বিবির বাজার, কটক বাজার, নিশ্চিন্তপুর, চৌদ্দগ্রাম, বেলুনিয়া, ইটাল্লা ও মাঝিগাছা, সদর দক্ষিণের বিশ্বরোড এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। হানাদার বাহিনী মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে পিছু হটে। ২৮ নভেম্বর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদিঘী এলাকা প্রথম মুক্ত হলে কুমিল্লা বিমানবন্দরের ঘাঁটি থেকে শহরসহ পার্শ্ববর্তী সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন চালায়। পরে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে পাক সেনাদের বিমানবন্দরের ঘাঁটির পতনের পর ৮ ডিসেম্বর প্রত্যুষে কুমিল্লা শহরকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়।
কুমিল্লা জেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, ৮ ডিসেম্বর ভোর রাতে গেরিলা দল কুমিল্লায় প্রবেশ করে বিভিন্ন অপারেশন পরিচালনা জন্য কুমিল্লার বালুতুপায় এসে অপেক্ষা করতে থাকে। বালুতুপা থেকে ৮ মাইল দূরে পাকসেনারা বাংকার ডিফেন্স নিয়েছিলো। নবম বেঙ্গলের সেনা অল্প সংখ্যক হওয়ায় তারা পাকিস্তানিদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়নি, পাকিস্তানি সেনাদের পিছনের দিক দিয়ে ৬ ডিসেম্বর কুমিল্লা শহরে প্রবেশ করে। শিখজাট ব্যাটালিয়ন বিমানবন্দর আক্রমণ করে ৬ ডিসেম্বর রাতে। রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধ হয় সেখানে। এই আক্রমণে শিখজাট ও মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজন আহত ও নিহত হয়। পাকসেনারা বিমান বন্দর ছেড়ে চলে যায়। মূলত এর মধ্য দিয়ে মুক্ত হয় কুমিল্লা শহর। ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা শহরে জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে প্রবেশ করে শহরের সকল স্তরের মানুষ স্বাধীন বাংলার পতাকা নিয়ে আনন্দে উল্লাসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বরণ করে নেয়। স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজ পতাকা উড়ে কুমিল্লার সার্কিট হাউজ, কালেক্টরেট ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। বিজয় মিছিল এবং শ্লোগানে সমস্ত শহর মুখরিত হয়ে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়। সে এক অপূর্ব দৃশ্য! বিজয়ের কি যে আনন্দ! প্রতি বছরের ন্যায়ে এবারও নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পালিত হয় কুমিল্লা মুক্ত দিবস।