ঢাকা ১১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

বাংলাদেশি নারীর সমুদ্রের তলদেশে যাত্রা

  • আপডেট সময় : ১১:৪০:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক : নীল সমুদ্রের গভীরে ডুব দিয়ে নতুন এক নীল রাজ্য দেখার সাহস কজনের থাকে। অনেকের দৃষ্টিতে এটি সহজ কাজ মনে হলেও এটি মোটেও সহজ নয়। বিশেষত একজন নারীর জন্য। এক্ষেত্রে অধিক সাহসিকতার পরিচয় দিতে হয় একজন নারীকে । আর বাংলাদেশি নারীর ক্ষেত্রে বিষয়টা আরও একটু বেশিই কঠিন।
স্কুবা ডাইভিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি নারীদের বরং অতিমাত্রায় নিরুৎসাহিত করা হয়। তবে কিছু মেয়ে আছে যারা নিজের অর্থপূর্ণ সফলতা অর্জন আর স্বপ্ন পূরণে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তারা সমস্ত প্রতিকূলতাকে আঙুল দেখিয়ে বলতে পারে, ‘এই যে আমরাও পারি প্রতিকূলতাকে জয় করতে।’
ডা. তাসমিয়া কবির দোলা সেইরকম একজন সাহসী বাঙালী নারী। যিনি নিজেকে বিস্ময়করভাবে প্রমাণ করেছেন যে, চাইলে সব কিছুই সম্ভব । ডা. তাসমিয়া কবির বাংলাদেশের প্রথম নারী যিনি আন্তর্জাতিক প্রফেশনাল ওপেন-ওয়াটার ডাইভিং কোর্সে অংশগ্রহণ করেছেন। এই কোর্সটি ছিল থাইল্যান্ডের ফুকেটে নীল আন্দামান সাগরে। ১৪ দিনের এই বিশেষ কোর্সে ডা. তাসমিয়া সমুদ্রের নিচে ৫৫ ফুট পর্যন্ত ডাইভিং করেন । প্রথমবারের মতো, একজন বাংলাদেশি নারী হিসেবে তিনি গভীর নীল সমুদ্র এবং এর তলদেশে ৭ (সাত) টি ডাইভে অংশ নেন এবং সর্বমোট ৭ ঘণ্টার অধিক সময় অবস্থান করেন। ওপেন ওয়াটার ডাইভিংয়ের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনি যদি মনে করেন, যেই জায়গাটিতে আপনি আছেন তা আপনাকে সম্পূর্ণরূপে ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট নয়, তখন আপনি সমুদ্রের নীচে যেতে পারেন, দেখতে পারেন যে অন্য একটি বিশাল রহস্যময় পৃথিবী আপনাকে স্বাগতম জানাবার জন্য অপেক্ষা করছে। সমুদ্রের তলদেশ একটি প্রশান্তির জায়গা, অন্তিম প্রশান্তির জায়গা!
তিনি বলেন, এটি আমার জন্য সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জিং মুহূর্ত ছিল। নির্দেশনা শুরু হওয়ার ঠিক আগে আমি পুরোপুরি অস্বস্তি বোধ করছিলাম । আমার হাত-পা কাঁপছিল। কারণ শৈশব থেকেই আমার সবসময় পানির প্রতি ভয় ছিল । তবে আমার প্রশিক্ষক ফ্যাবিয়েন মুলারের উৎসাহে পানির ভয় কাটিয়ে উঠতে পারি। ফ্যাবিয়েন মুলার, ফুকেট সার্ফিং স্কুল অ্যান্ড নটিলাস ডাইভ সেন্টার, কাটা বিচ এর একজন আন্তর্জাতিক ক্ষ্যাতিসম্পন্ন প্রশিক্ষক। আপনি থাইল্যান্ডের ফুকেটে গেলে এই স্কুলের কথা শুনে থাকবেন ।
ডা. তাসমিয়া বিশেষ মেডিক্যাল প্রশিক্ষণের জন্য থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন। সে সময় তার হঠাৎ করেই ওপেন ওয়াটার ডাইভিং এর বিষয়টি মাথায় আসে। থাইল্যান্ডে বসে ডাইভিং কোর্সের খোঁজ নেন। বেশ কিছু কোর্স ছিল। তার মধ্যে ফ্যাবিয়েন মুলারের কোর্সটি তার কাছে ভালো মনে হয়। ডা. তাসমিয়া বলেন, আপনাকে আপনার স্বপ্ন পূরণে কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না যদি আপনি আপনার নিজের ওপর আস্থা রাখেন এবং নিজেকে বিশ্বাস করেন! আত্মবিশ্বাস হচ্ছে সফলতার মূলমন্ত্র!

ফ্যাবিয়ান মুলারের অনুপ্রেরণায় তিনি প্রফেশনাল কোর্সে অন্তর্ভুক্ত হোন এবং তার কোর্সের প্রথম অংশটি সফলভাবে সম্পূর্ণ করেন। তত্ত্বীয় এবং ব্যবহারিক অনুশীলনসহ, এটি মানসিক এবং শারীরিক উভয়ভাবেই কষ্টকর ছিল । কঠিন প্রশিক্ষণ শেষে সর্বোচ্চ মার্কস পেয়ে আন্তর্জাতিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্কুবা ডাইভার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। যা কিনা বাংলাদেশি নারী হিসেবে প্রথম। ডা. তাসমিয়া কবির দোলা ঢাকার গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম বি বি এস ডিগ্রি সম্পন্ন করেন । তিনি বেশ কয়েকটি দেশে ইয়ুথ ভলেন্টিয়ার ও লিডারশিপের স্কলারশিপ প্রোগ্রামে অংশ নেন । তিনি ২০১০ সালে সুইজারল্যান্ডের ই.আই.পি জেনেভাতে তার ইন্টার্নশিপ করেন। এছাড়া, তিনি ২০১৩ সালে হাম্বানটোটা, শ্রীলঙ্কা কমনওয়েলথ ইয়ুথ ফোরাম এবং ২০১৪ সালে কাতারে বিশ্ব মানবিক শীর্ষ সম্মেলনেও অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি এম ওয়ার্ল্ডে টেলি হেলথ এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করছেন। তার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে যঃঃঢ়ং://ফৎঃধংযসরধশধনরৎ.পড়স/। স্কুবা ডাইভিংয় বিষয়ে জানা যাবে ঃধংযসরধ.ফড়ষধ@মসধরষ.পড়স এই ই-মেইলে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

বাংলাদেশি নারীর সমুদ্রের তলদেশে যাত্রা

আপডেট সময় : ১১:৪০:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

নারী ও শিশু ডেস্ক : নীল সমুদ্রের গভীরে ডুব দিয়ে নতুন এক নীল রাজ্য দেখার সাহস কজনের থাকে। অনেকের দৃষ্টিতে এটি সহজ কাজ মনে হলেও এটি মোটেও সহজ নয়। বিশেষত একজন নারীর জন্য। এক্ষেত্রে অধিক সাহসিকতার পরিচয় দিতে হয় একজন নারীকে । আর বাংলাদেশি নারীর ক্ষেত্রে বিষয়টা আরও একটু বেশিই কঠিন।
স্কুবা ডাইভিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি নারীদের বরং অতিমাত্রায় নিরুৎসাহিত করা হয়। তবে কিছু মেয়ে আছে যারা নিজের অর্থপূর্ণ সফলতা অর্জন আর স্বপ্ন পূরণে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তারা সমস্ত প্রতিকূলতাকে আঙুল দেখিয়ে বলতে পারে, ‘এই যে আমরাও পারি প্রতিকূলতাকে জয় করতে।’
ডা. তাসমিয়া কবির দোলা সেইরকম একজন সাহসী বাঙালী নারী। যিনি নিজেকে বিস্ময়করভাবে প্রমাণ করেছেন যে, চাইলে সব কিছুই সম্ভব । ডা. তাসমিয়া কবির বাংলাদেশের প্রথম নারী যিনি আন্তর্জাতিক প্রফেশনাল ওপেন-ওয়াটার ডাইভিং কোর্সে অংশগ্রহণ করেছেন। এই কোর্সটি ছিল থাইল্যান্ডের ফুকেটে নীল আন্দামান সাগরে। ১৪ দিনের এই বিশেষ কোর্সে ডা. তাসমিয়া সমুদ্রের নিচে ৫৫ ফুট পর্যন্ত ডাইভিং করেন । প্রথমবারের মতো, একজন বাংলাদেশি নারী হিসেবে তিনি গভীর নীল সমুদ্র এবং এর তলদেশে ৭ (সাত) টি ডাইভে অংশ নেন এবং সর্বমোট ৭ ঘণ্টার অধিক সময় অবস্থান করেন। ওপেন ওয়াটার ডাইভিংয়ের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনি যদি মনে করেন, যেই জায়গাটিতে আপনি আছেন তা আপনাকে সম্পূর্ণরূপে ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট নয়, তখন আপনি সমুদ্রের নীচে যেতে পারেন, দেখতে পারেন যে অন্য একটি বিশাল রহস্যময় পৃথিবী আপনাকে স্বাগতম জানাবার জন্য অপেক্ষা করছে। সমুদ্রের তলদেশ একটি প্রশান্তির জায়গা, অন্তিম প্রশান্তির জায়গা!
তিনি বলেন, এটি আমার জন্য সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জিং মুহূর্ত ছিল। নির্দেশনা শুরু হওয়ার ঠিক আগে আমি পুরোপুরি অস্বস্তি বোধ করছিলাম । আমার হাত-পা কাঁপছিল। কারণ শৈশব থেকেই আমার সবসময় পানির প্রতি ভয় ছিল । তবে আমার প্রশিক্ষক ফ্যাবিয়েন মুলারের উৎসাহে পানির ভয় কাটিয়ে উঠতে পারি। ফ্যাবিয়েন মুলার, ফুকেট সার্ফিং স্কুল অ্যান্ড নটিলাস ডাইভ সেন্টার, কাটা বিচ এর একজন আন্তর্জাতিক ক্ষ্যাতিসম্পন্ন প্রশিক্ষক। আপনি থাইল্যান্ডের ফুকেটে গেলে এই স্কুলের কথা শুনে থাকবেন ।
ডা. তাসমিয়া বিশেষ মেডিক্যাল প্রশিক্ষণের জন্য থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন। সে সময় তার হঠাৎ করেই ওপেন ওয়াটার ডাইভিং এর বিষয়টি মাথায় আসে। থাইল্যান্ডে বসে ডাইভিং কোর্সের খোঁজ নেন। বেশ কিছু কোর্স ছিল। তার মধ্যে ফ্যাবিয়েন মুলারের কোর্সটি তার কাছে ভালো মনে হয়। ডা. তাসমিয়া বলেন, আপনাকে আপনার স্বপ্ন পূরণে কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না যদি আপনি আপনার নিজের ওপর আস্থা রাখেন এবং নিজেকে বিশ্বাস করেন! আত্মবিশ্বাস হচ্ছে সফলতার মূলমন্ত্র!

ফ্যাবিয়ান মুলারের অনুপ্রেরণায় তিনি প্রফেশনাল কোর্সে অন্তর্ভুক্ত হোন এবং তার কোর্সের প্রথম অংশটি সফলভাবে সম্পূর্ণ করেন। তত্ত্বীয় এবং ব্যবহারিক অনুশীলনসহ, এটি মানসিক এবং শারীরিক উভয়ভাবেই কষ্টকর ছিল । কঠিন প্রশিক্ষণ শেষে সর্বোচ্চ মার্কস পেয়ে আন্তর্জাতিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্কুবা ডাইভার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। যা কিনা বাংলাদেশি নারী হিসেবে প্রথম। ডা. তাসমিয়া কবির দোলা ঢাকার গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম বি বি এস ডিগ্রি সম্পন্ন করেন । তিনি বেশ কয়েকটি দেশে ইয়ুথ ভলেন্টিয়ার ও লিডারশিপের স্কলারশিপ প্রোগ্রামে অংশ নেন । তিনি ২০১০ সালে সুইজারল্যান্ডের ই.আই.পি জেনেভাতে তার ইন্টার্নশিপ করেন। এছাড়া, তিনি ২০১৩ সালে হাম্বানটোটা, শ্রীলঙ্কা কমনওয়েলথ ইয়ুথ ফোরাম এবং ২০১৪ সালে কাতারে বিশ্ব মানবিক শীর্ষ সম্মেলনেও অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি এম ওয়ার্ল্ডে টেলি হেলথ এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করছেন। তার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে যঃঃঢ়ং://ফৎঃধংযসরধশধনরৎ.পড়স/। স্কুবা ডাইভিংয় বিষয়ে জানা যাবে ঃধংযসরধ.ফড়ষধ@মসধরষ.পড়স এই ই-মেইলে।