ঢাকা ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

বিশৃঙ্খল বাজারে যেভাবে শৃঙ্খলা ফেরালেন ইউএনও

  • আপডেট সময় : ০৭:৫০:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের হার ক্রমেই ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ফলে করোনার লাগাম টানতে দেশজুড়ে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। কিন্তু অতিপ্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে বারণ করা হলেও অনেকেই তা মানছেন না৷ বিশেষ করে বাজারগুলোতে কেউ যেন নিয়মই মানতে রাজি নন। শরীয়তপুর সদরের ব্যস্ততম পালং বাজারে এমন একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে খুব অল্প সময়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে স্বস্তিতে কেনাকাটা করার সুযোগ পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
বিষয়টি জানিয়ে এর নেপথ্যের কারিগর শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদ্বীপ ঘরাই একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘পালং বাজারটিতে মাছের কেনাকাটা হয় বেশি। সবসময় মানুষের চাপ থাকে। ফলে এখানে শৃঙ্খলা ফেরানোটা চ্যালেঞ্জ হবে মনে করেছিলাম। কিন্তু সহকর্মী ও বাজার কমিটির সহযোগিতায় আধা ঘণ্টার মধ্যে নিয়ম মেনে লাইন ধরে ক্রেতারা কেনাকাটা করার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষ বাজার করে বের হওয়ার পর আবার নির্দিষ্টসংখ্যক লোক বাজার করার সুযোগ পাচ্ছেন।’

যাতে করে নিয়মের ব্যত্যয় না হয় সেজন্য সবসময় তদারকি করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। পালং বাজারে শৃঙ্খলা ফেরানোর পুরো ঘটনা তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লম্বা পোস্টও দিয়েছেন মনদ্বীপ ঘরাই।
গতকাল শুক্রবার বিকালে দেয়া পোস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখেন, গতকালের মতো আজও লকডাউন বাস্তবায়নে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মাঠে নেমেছি সকাল আটটায়। শরীয়তপুর শহরের প্রধান বাজার হলো পালং বাজার। এখানে বেশ বড় একটি মাছ বাজারও আছে। সেখানে ঢুকে বেশ অবাকই হতে হলো। এত প্রচার, এত অভিযানের খবর এই মানষগুলোর কাছে পৌঁছায়নি বলেই মনে হলো। দু’শর বেশি মানুষ উৎসবের আমেজে মাছ কিনছে। একটু চ্যালেঞ্জই অনুভব করলাম। এদেরকে শৃঙ্খলায় আনা কঠিনই বটে।
তবে, কঠিন কাজটা আধা ঘন্টার মধ্যেই করেছি। চারপাশ খোলা মাছ বাজারের চারিদিক দড়ি দিয়ে বেধে আটকে দিয়েছি সব প্রবেশপথ। এরপর ক্রেতাদের এই সীমানার বাইরে দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড় করিয়েছি। আর বাজার কমিটি থেকে দুজনকে বসিয়েছি প্রবেশ দ্বারে। এরপর বিশজনকে ঢুকতে দিলাম মাছ কিনতে। যে কয়জন কেনা শেষ করে বের হবে, সেই সংখ্যক মানুষ ঢুকবে লাইন থেকে। অর্থাৎ দুইশ জনের ভিড়ভাট্টার বাজার বদলে গেল বিশজনের সুশৃঙ্খল বাজারে। লোকমুখে শুনতে পাই, ম্যাজিস্ট্রেট চলে গেলেই নাকি আবার আগের মতো করে ফেলতে চায় সবাই। তিন ঘণ্টার ব্যবধানে তিনবার গিয়ে দেখলাম। সব ঠিকঠাক রেখেই আজকের বাজার শেষ হয়েছে। সঙ্গে থাকা দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং র‌্যাব-বিজিবির সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাজারটিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারাটা অন্যরকমের প্রশান্তি। আপনাদের জন্য মাঠে আছি। আপনারা ঘরে থাকুন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিশৃঙ্খল বাজারে যেভাবে শৃঙ্খলা ফেরালেন ইউএনও

আপডেট সময় : ০৭:৫০:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের হার ক্রমেই ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ফলে করোনার লাগাম টানতে দেশজুড়ে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। কিন্তু অতিপ্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে বারণ করা হলেও অনেকেই তা মানছেন না৷ বিশেষ করে বাজারগুলোতে কেউ যেন নিয়মই মানতে রাজি নন। শরীয়তপুর সদরের ব্যস্ততম পালং বাজারে এমন একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে খুব অল্প সময়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে স্বস্তিতে কেনাকাটা করার সুযোগ পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
বিষয়টি জানিয়ে এর নেপথ্যের কারিগর শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদ্বীপ ঘরাই একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘পালং বাজারটিতে মাছের কেনাকাটা হয় বেশি। সবসময় মানুষের চাপ থাকে। ফলে এখানে শৃঙ্খলা ফেরানোটা চ্যালেঞ্জ হবে মনে করেছিলাম। কিন্তু সহকর্মী ও বাজার কমিটির সহযোগিতায় আধা ঘণ্টার মধ্যে নিয়ম মেনে লাইন ধরে ক্রেতারা কেনাকাটা করার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষ বাজার করে বের হওয়ার পর আবার নির্দিষ্টসংখ্যক লোক বাজার করার সুযোগ পাচ্ছেন।’

যাতে করে নিয়মের ব্যত্যয় না হয় সেজন্য সবসময় তদারকি করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। পালং বাজারে শৃঙ্খলা ফেরানোর পুরো ঘটনা তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লম্বা পোস্টও দিয়েছেন মনদ্বীপ ঘরাই।
গতকাল শুক্রবার বিকালে দেয়া পোস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখেন, গতকালের মতো আজও লকডাউন বাস্তবায়নে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মাঠে নেমেছি সকাল আটটায়। শরীয়তপুর শহরের প্রধান বাজার হলো পালং বাজার। এখানে বেশ বড় একটি মাছ বাজারও আছে। সেখানে ঢুকে বেশ অবাকই হতে হলো। এত প্রচার, এত অভিযানের খবর এই মানষগুলোর কাছে পৌঁছায়নি বলেই মনে হলো। দু’শর বেশি মানুষ উৎসবের আমেজে মাছ কিনছে। একটু চ্যালেঞ্জই অনুভব করলাম। এদেরকে শৃঙ্খলায় আনা কঠিনই বটে।
তবে, কঠিন কাজটা আধা ঘন্টার মধ্যেই করেছি। চারপাশ খোলা মাছ বাজারের চারিদিক দড়ি দিয়ে বেধে আটকে দিয়েছি সব প্রবেশপথ। এরপর ক্রেতাদের এই সীমানার বাইরে দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড় করিয়েছি। আর বাজার কমিটি থেকে দুজনকে বসিয়েছি প্রবেশ দ্বারে। এরপর বিশজনকে ঢুকতে দিলাম মাছ কিনতে। যে কয়জন কেনা শেষ করে বের হবে, সেই সংখ্যক মানুষ ঢুকবে লাইন থেকে। অর্থাৎ দুইশ জনের ভিড়ভাট্টার বাজার বদলে গেল বিশজনের সুশৃঙ্খল বাজারে। লোকমুখে শুনতে পাই, ম্যাজিস্ট্রেট চলে গেলেই নাকি আবার আগের মতো করে ফেলতে চায় সবাই। তিন ঘণ্টার ব্যবধানে তিনবার গিয়ে দেখলাম। সব ঠিকঠাক রেখেই আজকের বাজার শেষ হয়েছে। সঙ্গে থাকা দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং র‌্যাব-বিজিবির সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাজারটিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারাটা অন্যরকমের প্রশান্তি। আপনাদের জন্য মাঠে আছি। আপনারা ঘরে থাকুন।