ঢাকা ০১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

সমস্যা যখন শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য

  • আপডেট সময় : ১২:৫৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগে অনেক শিশুই। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনসহ বেশ কিছু বিষয়ে সচেতন হতে হবে। বিস্তারিত পরামর্শ দিচ্ছেন বাংলাদেশ মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল ও ইবনেসিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের ক্লিনিক্যাল ডায়াটিশিয়ান ও নিউট্রিশন কনসালটেন্ট ফাতেমা সিদ্দিকী ছন্দা।
জন্মের পর থেকে যেকোনো সময় শিশুরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় পড়তে পারে। তবে জন্মের ৬ মাস পর এ সমস্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। কারণ এ সময়টাতে অনেক শিশু পর্যাপ্ত বুকের দুধ পায় না। ফলে ফর্মুলা দুধ পান করার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হয় ও দিন দিন এই সমস্যা বাড়তে থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে কীভাবে বোঝা যাবে?
সপ্তাহে ৩ বারের বেশি পায়খানা না হওয়া বা পায়খানা করার সময় শিশু যদি ব্যথা পায় ও কষ্ট অনুভব করে তাহলে শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছে বলে ধরে নেওয়া হয়।অনেক সময় শিশুরা মলত্যাগের সময় কান্নাকাটি করে ও ভয় পায়। কারণ এ সময় মল শক্ত ও কালো হয়, এমনকি রক্তও পড়তে পারে। যেহেতু পেট পরিষ্কার হচ্ছে না, তাই গ্যাসে বাচ্চার পেট ফুলে যায় ও ব্যথার সৃষ্টি হয়। ফলে শিশু কিছু খেতে চায় না। শিশু তার সমস্যার কথা বলতে পারে না। তাই বাবা মা হিসেবে খেয়াল রাখতে হবে শিশু প্রতিদিন মলত্যাগ করছে কিনা। এছাড়া পায়খানার রঙ কালো কিনা, মল শক্ত কিনা, সপ্তাহে ৩ বারের কম মলত্যাগ করছে কিনা- এসব বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা জরুরি। এ লক্ষণগুলো মিলে গেলে অবশ্যই সচেতন হয়ে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধানে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া বাচ্চা ঠিকমতো শৌচাগার ব্যবহার করতে পারছে কিনা বা পায়খানার বেগ আসলে চেপে রাখে কিনা সেটাও খেয়াল রাখা দরকার।
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে করণীয়

  • জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মায়ের বুকের দুধ যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে সেজন্য একজন দক্ষ পুষ্টিবিদের পরামর্শে মায়ের খাদ্যতালিকা ঠিক করে নেওয়া উচিত। কোনোভাবেই ফর্মুলা দুধের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়।
  • ৬ মাস পর বুকের দুধের পাশাপাশি বাচ্চার পরিপূরক খাবারে পর্যাপ্ত সলিউবল ফাইবার ও পানি যেন থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রেও একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরি।
  • ১ বছর বয়সের পর থেকে শিশুকে সকালে খালি পেটে পানি দিতে হবে ও নাস্তার আগে অবশ্যই পটি ট্রেনিং করাতে হবে।
  • শিশুকে খাবার সময় মতো ও পরিমাণ মতো দিতে হবে। কোনোভাবেই বাইরের চিপস, চকলেট, জুস ইত্যাদি খাবার দেওয়া যাবে না।
  • শিশুর প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পানি আছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • শিশুদের লো কমোড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। আর হাই কমোড হলে পায়ের নিচে টুল দেবেন।
  • শিশুর মানসিক অবস্থা ঠিক আছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখাও জরুরি। কারণ হতাশ শিশুদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেড়ে যায়।
  • শিশুদের অবশ্যই প্রতিদিন ১ ঘণ্টা খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।পাশাপাশি ঘরোয়া ব্যায়াম ও নিজের কাজ গুছানোর মতো বিষয়গুলোতেও অভ্যাস করানো জরুরি। এতে কায়িক পরিশ্রম হবে, হজমশক্তি বাড়বে এবং পেট পরিষ্কার থাকবে। নবজাতকদের প্রতিদিন তেল মালিশ করে ব্যায়াম করালেও উপকার পাওয়া যায়। সর্বোপরি, অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে চলে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং এ সমস্যা ভবিষ্যতে এড়াতে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শে শিশুর খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তন করে নিতে হবে।
    শিশুর খাদ্য তালিকায় কোন কোন খাবার রাখবেন?
    বুকের দুধ, সাগু, লাল বা বাদামি চালের ভাত, লাল চিড়া, ওটস, ছাতু, পেঁপে, লাউ, চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, লাল শাক, পালং শাক, কলা, খেজুর ইত্যাদি খাবার রাখবেন শিশুর খাদ্য তালিকায়। যেসব শিশুরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছে, তাদের জন্য বাদ দেওয়া জরুরি রুটি ও শক্ত ভাত, পোলাও চালের ভাত, গরুর মাংস, ফর্মুলা দুধ এবং দুধ চা।
ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

সমস্যা যখন শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য

আপডেট সময় : ১২:৫৯:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২২

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগে অনেক শিশুই। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনসহ বেশ কিছু বিষয়ে সচেতন হতে হবে। বিস্তারিত পরামর্শ দিচ্ছেন বাংলাদেশ মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল ও ইবনেসিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের ক্লিনিক্যাল ডায়াটিশিয়ান ও নিউট্রিশন কনসালটেন্ট ফাতেমা সিদ্দিকী ছন্দা।
জন্মের পর থেকে যেকোনো সময় শিশুরা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় পড়তে পারে। তবে জন্মের ৬ মাস পর এ সমস্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। কারণ এ সময়টাতে অনেক শিশু পর্যাপ্ত বুকের দুধ পায় না। ফলে ফর্মুলা দুধ পান করার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হয় ও দিন দিন এই সমস্যা বাড়তে থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে কীভাবে বোঝা যাবে?
সপ্তাহে ৩ বারের বেশি পায়খানা না হওয়া বা পায়খানা করার সময় শিশু যদি ব্যথা পায় ও কষ্ট অনুভব করে তাহলে শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছে বলে ধরে নেওয়া হয়।অনেক সময় শিশুরা মলত্যাগের সময় কান্নাকাটি করে ও ভয় পায়। কারণ এ সময় মল শক্ত ও কালো হয়, এমনকি রক্তও পড়তে পারে। যেহেতু পেট পরিষ্কার হচ্ছে না, তাই গ্যাসে বাচ্চার পেট ফুলে যায় ও ব্যথার সৃষ্টি হয়। ফলে শিশু কিছু খেতে চায় না। শিশু তার সমস্যার কথা বলতে পারে না। তাই বাবা মা হিসেবে খেয়াল রাখতে হবে শিশু প্রতিদিন মলত্যাগ করছে কিনা। এছাড়া পায়খানার রঙ কালো কিনা, মল শক্ত কিনা, সপ্তাহে ৩ বারের কম মলত্যাগ করছে কিনা- এসব বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা জরুরি। এ লক্ষণগুলো মিলে গেলে অবশ্যই সচেতন হয়ে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধানে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া বাচ্চা ঠিকমতো শৌচাগার ব্যবহার করতে পারছে কিনা বা পায়খানার বেগ আসলে চেপে রাখে কিনা সেটাও খেয়াল রাখা দরকার।
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে করণীয়

  • জন্মের পর পূর্ণ ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মায়ের বুকের দুধ যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে সেজন্য একজন দক্ষ পুষ্টিবিদের পরামর্শে মায়ের খাদ্যতালিকা ঠিক করে নেওয়া উচিত। কোনোভাবেই ফর্মুলা দুধের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়।
  • ৬ মাস পর বুকের দুধের পাশাপাশি বাচ্চার পরিপূরক খাবারে পর্যাপ্ত সলিউবল ফাইবার ও পানি যেন থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রেও একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরি।
  • ১ বছর বয়সের পর থেকে শিশুকে সকালে খালি পেটে পানি দিতে হবে ও নাস্তার আগে অবশ্যই পটি ট্রেনিং করাতে হবে।
  • শিশুকে খাবার সময় মতো ও পরিমাণ মতো দিতে হবে। কোনোভাবেই বাইরের চিপস, চকলেট, জুস ইত্যাদি খাবার দেওয়া যাবে না।
  • শিশুর প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পানি আছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • শিশুদের লো কমোড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। আর হাই কমোড হলে পায়ের নিচে টুল দেবেন।
  • শিশুর মানসিক অবস্থা ঠিক আছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখাও জরুরি। কারণ হতাশ শিশুদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেড়ে যায়।
  • শিশুদের অবশ্যই প্রতিদিন ১ ঘণ্টা খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।পাশাপাশি ঘরোয়া ব্যায়াম ও নিজের কাজ গুছানোর মতো বিষয়গুলোতেও অভ্যাস করানো জরুরি। এতে কায়িক পরিশ্রম হবে, হজমশক্তি বাড়বে এবং পেট পরিষ্কার থাকবে। নবজাতকদের প্রতিদিন তেল মালিশ করে ব্যায়াম করালেও উপকার পাওয়া যায়। সর্বোপরি, অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে চলে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং এ সমস্যা ভবিষ্যতে এড়াতে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শে শিশুর খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তন করে নিতে হবে।
    শিশুর খাদ্য তালিকায় কোন কোন খাবার রাখবেন?
    বুকের দুধ, সাগু, লাল বা বাদামি চালের ভাত, লাল চিড়া, ওটস, ছাতু, পেঁপে, লাউ, চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, লাল শাক, পালং শাক, কলা, খেজুর ইত্যাদি খাবার রাখবেন শিশুর খাদ্য তালিকায়। যেসব শিশুরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছে, তাদের জন্য বাদ দেওয়া জরুরি রুটি ও শক্ত ভাত, পোলাও চালের ভাত, গরুর মাংস, ফর্মুলা দুধ এবং দুধ চা।