ঢাকা ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

দাম বেড়েছে চাল-ডাল-তেলের

  • আপডেট সময় : ১১:৪৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কয়েক মাস ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দাম ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কিছুতেই যেন নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। গত এক সপ্তাহে এ ধারার খুব বেশি একটা পরিবর্তন হয়নি। এ সময়ে ডিম, পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও নতুন করে বেড়েছে চাল, ভোজ্যতেল ও ডালের দাম। ফলে পেঁয়াজ, ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও তা নি¤œ আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিচ্ছে না। বরং চাল-তেলের মূল্যবৃদ্ধি তাদের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চাল, তেল, ডাল, আটা, ময়দা, মসুর ডাল, শুকনো মরিচ, জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ ও এলাচের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগি, ডিম, আলু, আদা, হলুদ, রসুন, পেঁয়াজ ও ছোলার। রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী, সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, কচুক্ষেত, মৌলভীবাজার, মহাখালী, উত্তরা আজমপুর, রহমতগঞ্জ, রামপুরা এবং মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে টিসিবি।
খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম এখন কিছুটা কম। কিন্তু চাল, আটা, তেল, ডালের অনেক দাম। সবজির দামও বেশি। চাল, তেল, ডাল কিনতেই টাকা শেষ হয়ে যায়। মাংস খুব একটা খাওয়া হয় না। ব্রয়লার মুরগির বদলে চাল, ডাল, তেলের দাম কমলে আমরা একটু শান্তি পাই। চাল, ডাল, তেল কিনতে না পারলে মুরগি দিয়ে কী করবো! রামপুরার বাসিন্দা রিকশাচালক মো. ফয়েজ বলেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে টিনশেডের একটি বাসায় ভাড়া থাকি। সারাদিন রিকশা চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে কোনো রকমে চারজনের সংসার চলে। জিনিসপত্রের যে দাম তাতে মাছ-মাংস খুব একটা খাওয়া হয় না। কোনো রকমে ডাল-ভাত খেতে পারলেই আমরা খুশি। তিনি বলেন, চাল-ডালের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ৫০ টাকার নিচে এক কেজি চাল পাওয়া যায় না। অনেক সময় আমি দুপুরে না খেয়ে অথবা কলা-রুটি খেয়ে কাটিয়ে দেই। এরপরও খরচ কমাতে পারছি না। যদি চাল, ডাল, তেলের দাম কমতো তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতাম। কিন্তু এগুলোর দাম তো কমে না, বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সরকারের বিপণন সংস্থা-টিসিবি’র তথ্যমতে, চিকন চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৬৮ টাকা, মাঝারি বা পাইজাম চাল ২ টাকা বেড়ে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা এবং মোটা চালের কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছে, টিসিবির তথ্যের চেয়ে কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে প্যাকেট আটা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা, আর খোলা আটা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ময়দা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ৭২ টাকার ময়দা এ সপ্তাহে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৮০ টাকা কেজি দরের প্যাকেট ময়দা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা করে। বেড়েছে গুঁড়ো দুধের দামও। ৭৫০ টাকা কেজি দরের ডানো গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে ৮২০ টাকা দরে। ৭৫০ টাকা কেজি দরের ডিপ্লোমা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। একইভাবে অন্যান্য গুঁড়ো দুধের দামও বেড়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর থেকে সয়াবিন তেল ও চিনির দাম আরও বেড়েছে। এখন সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। আগের চেয়ে কেজিতে বেড়েছে প্রায় ১২ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনি কেজিতে ১২ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ১০৭ টাকায়। যদিও বাজারে নির্ধারিত দামের তেল পাওয়া গেলেও চিনি কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। সরবরাহ সংকটের কারণে বাজারভেদে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানেই নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দাম বেড়েছে চাল-ডাল-তেলের

আপডেট সময় : ১১:৪৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : কয়েক মাস ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দাম ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কিছুতেই যেন নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। গত এক সপ্তাহে এ ধারার খুব বেশি একটা পরিবর্তন হয়নি। এ সময়ে ডিম, পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও নতুন করে বেড়েছে চাল, ভোজ্যতেল ও ডালের দাম। ফলে পেঁয়াজ, ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও তা নি¤œ আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিচ্ছে না। বরং চাল-তেলের মূল্যবৃদ্ধি তাদের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চাল, তেল, ডাল, আটা, ময়দা, মসুর ডাল, শুকনো মরিচ, জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ ও এলাচের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগি, ডিম, আলু, আদা, হলুদ, রসুন, পেঁয়াজ ও ছোলার। রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী, সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, কচুক্ষেত, মৌলভীবাজার, মহাখালী, উত্তরা আজমপুর, রহমতগঞ্জ, রামপুরা এবং মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে টিসিবি।
খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম এখন কিছুটা কম। কিন্তু চাল, আটা, তেল, ডালের অনেক দাম। সবজির দামও বেশি। চাল, তেল, ডাল কিনতেই টাকা শেষ হয়ে যায়। মাংস খুব একটা খাওয়া হয় না। ব্রয়লার মুরগির বদলে চাল, ডাল, তেলের দাম কমলে আমরা একটু শান্তি পাই। চাল, ডাল, তেল কিনতে না পারলে মুরগি দিয়ে কী করবো! রামপুরার বাসিন্দা রিকশাচালক মো. ফয়েজ বলেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে টিনশেডের একটি বাসায় ভাড়া থাকি। সারাদিন রিকশা চালিয়ে যে আয় হয়, তা দিয়ে কোনো রকমে চারজনের সংসার চলে। জিনিসপত্রের যে দাম তাতে মাছ-মাংস খুব একটা খাওয়া হয় না। কোনো রকমে ডাল-ভাত খেতে পারলেই আমরা খুশি। তিনি বলেন, চাল-ডালের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ৫০ টাকার নিচে এক কেজি চাল পাওয়া যায় না। অনেক সময় আমি দুপুরে না খেয়ে অথবা কলা-রুটি খেয়ে কাটিয়ে দেই। এরপরও খরচ কমাতে পারছি না। যদি চাল, ডাল, তেলের দাম কমতো তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতাম। কিন্তু এগুলোর দাম তো কমে না, বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সরকারের বিপণন সংস্থা-টিসিবি’র তথ্যমতে, চিকন চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৬৮ টাকা, মাঝারি বা পাইজাম চাল ২ টাকা বেড়ে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা এবং মোটা চালের কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছে, টিসিবির তথ্যের চেয়ে কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে প্যাকেট আটা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা, আর খোলা আটা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট ময়দা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ৭২ টাকার ময়দা এ সপ্তাহে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৮০ টাকা কেজি দরের প্যাকেট ময়দা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা করে। বেড়েছে গুঁড়ো দুধের দামও। ৭৫০ টাকা কেজি দরের ডানো গুঁড়ো দুধ বিক্রি হচ্ছে ৮২০ টাকা দরে। ৭৫০ টাকা কেজি দরের ডিপ্লোমা বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। একইভাবে অন্যান্য গুঁড়ো দুধের দামও বেড়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর থেকে সয়াবিন তেল ও চিনির দাম আরও বেড়েছে। এখন সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। আগের চেয়ে কেজিতে বেড়েছে প্রায় ১২ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনি কেজিতে ১২ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ১০৭ টাকায়। যদিও বাজারে নির্ধারিত দামের তেল পাওয়া গেলেও চিনি কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। সরবরাহ সংকটের কারণে বাজারভেদে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানেই নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে