ঢাকা ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

হুন্ডির দায়ে বিকাশ, রকেট, নগদের ২৩০ হিসাব জব্দ

  • আপডেট সময় : ০১:১৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২
  • ১২৫ বার পড়া হয়েছে

বাণিজ্য ডেস্ক :বিদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসায় বিকাশ, রকেট ও নগদের ২৩০ গ্রাহকের হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ফলে এসব হিসাবে জমা টাকা এখনই তুলতে পারবেন না গ্রাহকেরা। ভবিষ্যতে বৈধপথে আয় পাঠানোর শর্ত মানলে হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে। তখন জমা টাকাও তুলতে পারবেন সংশ্লিষ্ট গ্রাহকেরা। এ বিষয়ে একাধিক এমএফএস প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিএফআইইউ গতকাল বুধবার এই ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছে। পাশাপাশি কয়েকজন এমএফএস এজেন্টের হিসাবও জব্দ করা হয়েছে। এর আগে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৫ হাজার ৪১৮ এমএফএস এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মধ্যে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের প্রিয়জনদের জানানো যাচ্ছে যে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দ-নীয় অপরাধ। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অবৈধ পথে প্রবাসী আয় প্রেরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। যেসব গ্রাহকের হিসাব জব্দ করা হয়েছে, তাঁদের একজন হলেন ফেনীর শাহাদাত হোসেন। তিনি ডিজিটাল সফটওয়্যার নামে একটি কোম্পানির মালিক। যোগাযোগ করা হলে শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সফটওয়্যার তৈরি ও উন্নয়নের কাজ করে থাকি। আমার গ্রাহক দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রয়েছে। আমার অনেক বিল নগদ হিসাবে আসে। এটা কে কোথা থেকে পরিশোধ করে তা জানি না। কেন আমার হিসাব জব্দ করা হয়েছে এবং আমার কী দোষ তা খুঁজে পাচ্ছি না।’ এদিকে বিএফআইইউর তথ্যের ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি জানায়, এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্তত পাঁচ হাজার এজেন্ট অবৈধভাবে বিদেশ থেকে অর্থ আনা ও বিদেশে অর্থ পাঠানোর কাজের সঙ্গে জড়িত। হুন্ডির এই চক্রের কারণে বাংলাদেশ সরকার বছরে প্রায় ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার (৭৫ হাজার কোটি টাকা) প্রবাসী আয় বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান এবং হুন্ডিতে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবশ্য হুন্ডি তখনই হয়, যখন কেউ দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে বিদেশে অর্থ পাঠাতে চায়, আর বিদেশ থেকে যারা প্রবাসী আয় পাঠাতে চায়। এ ক্ষেত্রে হাতে হাতে বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব অর্থ সংগ্রহ করা হয়। বিদেশ থেকে যারা প্রবাসী আয় পাঠাতে চায়, তা বিদেশেই থেকে যায়। সেই অর্থ বিদেশে পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর দেশ থেকে যারা অর্থ পাচার করে, তারা তা হুন্ডি চক্রের হাতে তুলে দেয়। ফলে কার্যত কোনো ডলার দেশে আসে না।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

হুন্ডির দায়ে বিকাশ, রকেট, নগদের ২৩০ হিসাব জব্দ

আপডেট সময় : ০১:১৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২

বাণিজ্য ডেস্ক :বিদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসায় বিকাশ, রকেট ও নগদের ২৩০ গ্রাহকের হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ফলে এসব হিসাবে জমা টাকা এখনই তুলতে পারবেন না গ্রাহকেরা। ভবিষ্যতে বৈধপথে আয় পাঠানোর শর্ত মানলে হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে। তখন জমা টাকাও তুলতে পারবেন সংশ্লিষ্ট গ্রাহকেরা। এ বিষয়ে একাধিক এমএফএস প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিএফআইইউ গতকাল বুধবার এই ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছে। পাশাপাশি কয়েকজন এমএফএস এজেন্টের হিসাবও জব্দ করা হয়েছে। এর আগে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৫ হাজার ৪১৮ এমএফএস এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মধ্যে কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের প্রিয়জনদের জানানো যাচ্ছে যে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দ-নীয় অপরাধ। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণের অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অবৈধ পথে প্রবাসী আয় প্রেরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। যেসব গ্রাহকের হিসাব জব্দ করা হয়েছে, তাঁদের একজন হলেন ফেনীর শাহাদাত হোসেন। তিনি ডিজিটাল সফটওয়্যার নামে একটি কোম্পানির মালিক। যোগাযোগ করা হলে শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সফটওয়্যার তৈরি ও উন্নয়নের কাজ করে থাকি। আমার গ্রাহক দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রয়েছে। আমার অনেক বিল নগদ হিসাবে আসে। এটা কে কোথা থেকে পরিশোধ করে তা জানি না। কেন আমার হিসাব জব্দ করা হয়েছে এবং আমার কী দোষ তা খুঁজে পাচ্ছি না।’ এদিকে বিএফআইইউর তথ্যের ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি জানায়, এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্তত পাঁচ হাজার এজেন্ট অবৈধভাবে বিদেশ থেকে অর্থ আনা ও বিদেশে অর্থ পাঠানোর কাজের সঙ্গে জড়িত। হুন্ডির এই চক্রের কারণে বাংলাদেশ সরকার বছরে প্রায় ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার (৭৫ হাজার কোটি টাকা) প্রবাসী আয় বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান এবং হুন্ডিতে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবশ্য হুন্ডি তখনই হয়, যখন কেউ দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে বিদেশে অর্থ পাঠাতে চায়, আর বিদেশ থেকে যারা প্রবাসী আয় পাঠাতে চায়। এ ক্ষেত্রে হাতে হাতে বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব অর্থ সংগ্রহ করা হয়। বিদেশ থেকে যারা প্রবাসী আয় পাঠাতে চায়, তা বিদেশেই থেকে যায়। সেই অর্থ বিদেশে পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর দেশ থেকে যারা অর্থ পাচার করে, তারা তা হুন্ডি চক্রের হাতে তুলে দেয়। ফলে কার্যত কোনো ডলার দেশে আসে না।