টাঙ্গাইল সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের গজিয়াবাড়ী গ্রামে শিশুসহ শতাধিক নারী-পুরুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।স্থানীয়দের ধারণা, একটি অনুষ্ঠানের খিচুড়ি খাওয়ার পর তারা ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার ভোরে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকা জুড়ে ডায়রিয়ার আতংক ছড়িয়ে পরে। এদিকে আক্রান্তদের মধ্যে রাহেলা বেগম (৯৪) নামে এক নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃতের পরিবারের দাবি, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত রাহেলা বেগম গজিয়াবাড়ী গ্রামের মৃত বিষা চৌধুরীর স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, রোববার (১৩ নভেম্বর) রাতে স্থানীয় আক্কাস মিঞার বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে রান্না করা খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। স্থানীয় বাবুর্চি আব্দুল গণির রান্না করা খিচুড়ি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন গ্রামের শিশুসহ শতাধিক নারী পুরুষ। খবর পেয়ে দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টিম গজিয়াবাড়ি গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এছাড়া স্থানীয় মসজিদে মাইকিং করে আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসকদের জন্য ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মল্লিকের বাড়িতে আসতে বলা হচ্ছে। আলেয়া নামের এক নারী বলেন, ‘খিচুড়ি খেয়ে তিনদিন ধরে গ্রামের শিশু, নারী-পুরুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। ভোরে অবস্থা আরো মারাত্মক আকার ধারণ করে। অনেকেই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।’ একই গ্রামের রানু বেগম বলেন, ‘খিচুড়ি খেয়ে আমার ছেলে জিহাদ (১৫), শ্বাশুড়ি কদভানু (৬০), জা পারুল (২৫), ভাগ্নি লোপা (১৫) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। বাড়িতেই তাদের চিকিৎসা চলছে।’ আটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মল্লিক বলেন, ‘খিচুড়ি খাওয়ার পর অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঘটনাটি স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনকে জানানোর পরে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। এ পর্যন্ত ২৭০ জনের মতো রোগীর চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আছে।’ দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মেহেদী হাসান খান বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা খিচুড়ি খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা দুই দিন আগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। ডায়রিয়া পানি বা অন্য যে কোন মাধ্যমে ছড়াতে পারে। আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ জন গুরুত্বর। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. মিনহাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ায় বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্তীতে অবস্থা দেখে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
জনপ্রিয় সংবাদ
























