ঢাকা ১০:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

ওটি বয়কে দিয়ে অপারেশন!

  • আপডেট সময় : ১২:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২
  • ১৮৮ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁ সংবাদদাতা : নওগাঁয় অবৈধভাবে চলছে অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, হাতুড়ে ডাক্তার ও নার্সের পরিবর্তে আয়া দিয়ে চলে প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি জেলার পতœীতলা উপজেলার ইসলামিয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওটি বয় দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পতœীতলা উপজেলার ইসলামিয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওটি বয় আব্দুস সোবহান। এসএসসি পাস না করলেও অপারেশন করেন তিনি। সম্প্রতি তিনি এক নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করেছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, অপারেশনের মাধ্যমে এক গর্ভবর্তী নারীর পেট থেকে নবজাতক বের করে আনা হচ্ছে। ডাক্তার তৌফিক হাসান সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। আর ওটি বয় আব্দুস সোবহান বাচ্চাটিকে সরিয়ে রাখার পর থেকে অপারেশনের পরের বাকি কাজগুলো করছেন। এদিকে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ এসব ক্লিনিকে হরহামেশায় ঘটে এমন ঘটনা। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি তারা। দু-একটি ক্লিনিকে লোক দেখানো পদক্ষেপ নিলেও সপ্তাহ না ঘুরতেই সেসব ক্লিনিক আবারো আগের মতোই কার্যক্রম পরিচালনা করতে শুরু করে। জানতে চাইলে আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আমি কোনো ডাক্তার না। ওটিতে বিভিন্ন ডাক্তারের সহযোগী হিসাবে থাকি। আপনারা যে ভিডিওটি দেখেছেন সেটিও ডাক্তার তৌফিক হাসান অপারেশন করেছেন। আমি সহযোগী হিসাবে ছিলাম মাত্র।’ ভিডিও’র বিষয়টি স্বীকার করে ডাক্তার তৌফিক হাসান বলেন, ‘ সোবহান আমার সহযোগী হিসাবে ওটিতে ছিলেন।’ একজন ওটি বয় সিজারিয়ান অপারেশনে সহযোগীতা করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. তৌফিক বলেন, ‘এখানে যারা অপারেশন করতে আসেন তারা অত্যন্ত কম টাকা দেন। আর এ কারণে অ্যানেসথেসিয়া ও সহযোগী হিসাবে কোনো এমবিবিএস ডাক্তারকে রাখা সম্ভব হয় না। আমি নিজেই অ্যানেসথেসিয়া ও অপারেশন করে থাকি। আর সোবহান থাকেন আমার সহযোগী হিসাবে।’ পতœীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটরে ওটি বয় দিয়ে সহযোগীতা করানোর কাজটি কোনো ভাবেই সম্ভব না। ওটি বয় কোনো ভাবেই রোগীর গায়ে হাত দিতে পারবেন না। তবে অপারেশনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামে এগিয়ে দিয়ে সহযোগীতা করতে পারেন। সোবহান বা ডা. তৌফিক যা করেছেন তা সম্পূর্ণ বেআইনী। তারা এটি কোনো ভাবেই করতে পারেন না।’ নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুহেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার জানান, ওটি বয় দিয়ে অপারেশন করানোর তথ্য রয়েছে তাঁর কাছেও। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ওটি বয়কে দিয়ে অপারেশন!

আপডেট সময় : ১২:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২

নওগাঁ সংবাদদাতা : নওগাঁয় অবৈধভাবে চলছে অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, হাতুড়ে ডাক্তার ও নার্সের পরিবর্তে আয়া দিয়ে চলে প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি জেলার পতœীতলা উপজেলার ইসলামিয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওটি বয় দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পতœীতলা উপজেলার ইসলামিয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওটি বয় আব্দুস সোবহান। এসএসসি পাস না করলেও অপারেশন করেন তিনি। সম্প্রতি তিনি এক নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করেছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, অপারেশনের মাধ্যমে এক গর্ভবর্তী নারীর পেট থেকে নবজাতক বের করে আনা হচ্ছে। ডাক্তার তৌফিক হাসান সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। আর ওটি বয় আব্দুস সোবহান বাচ্চাটিকে সরিয়ে রাখার পর থেকে অপারেশনের পরের বাকি কাজগুলো করছেন। এদিকে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ এসব ক্লিনিকে হরহামেশায় ঘটে এমন ঘটনা। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি তারা। দু-একটি ক্লিনিকে লোক দেখানো পদক্ষেপ নিলেও সপ্তাহ না ঘুরতেই সেসব ক্লিনিক আবারো আগের মতোই কার্যক্রম পরিচালনা করতে শুরু করে। জানতে চাইলে আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আমি কোনো ডাক্তার না। ওটিতে বিভিন্ন ডাক্তারের সহযোগী হিসাবে থাকি। আপনারা যে ভিডিওটি দেখেছেন সেটিও ডাক্তার তৌফিক হাসান অপারেশন করেছেন। আমি সহযোগী হিসাবে ছিলাম মাত্র।’ ভিডিও’র বিষয়টি স্বীকার করে ডাক্তার তৌফিক হাসান বলেন, ‘ সোবহান আমার সহযোগী হিসাবে ওটিতে ছিলেন।’ একজন ওটি বয় সিজারিয়ান অপারেশনে সহযোগীতা করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. তৌফিক বলেন, ‘এখানে যারা অপারেশন করতে আসেন তারা অত্যন্ত কম টাকা দেন। আর এ কারণে অ্যানেসথেসিয়া ও সহযোগী হিসাবে কোনো এমবিবিএস ডাক্তারকে রাখা সম্ভব হয় না। আমি নিজেই অ্যানেসথেসিয়া ও অপারেশন করে থাকি। আর সোবহান থাকেন আমার সহযোগী হিসাবে।’ পতœীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটরে ওটি বয় দিয়ে সহযোগীতা করানোর কাজটি কোনো ভাবেই সম্ভব না। ওটি বয় কোনো ভাবেই রোগীর গায়ে হাত দিতে পারবেন না। তবে অপারেশনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামে এগিয়ে দিয়ে সহযোগীতা করতে পারেন। সোবহান বা ডা. তৌফিক যা করেছেন তা সম্পূর্ণ বেআইনী। তারা এটি কোনো ভাবেই করতে পারেন না।’ নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুহেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার জানান, ওটি বয় দিয়ে অপারেশন করানোর তথ্য রয়েছে তাঁর কাছেও। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।