নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের কোথাও ভোটের আমেজ নেই দাবি করে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ থেকে বলা হয়েছে, দেশবাসী আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়েছে। আগামীতে বিদেশিরাও এই কার্ড দেখাবে এবং তখন ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা আর থাকবে না।
গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মঞ্চের সমাবেশে জোটের শরিক নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এই হুঁশিয়ারি দেন। সেখানে নেতাকর্মীরা হাতে করে ‘লাল কার্ড’ নিয়ে এসে সরকারের উদ্দেশে তা প্রদর্শন করেন।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে এই সমাবেশে তিনি বলেন, ‘‘৭ জানুয়ারি তো নির্বাচনই না, মানুষ কি ভোট দিতে যাবে? আপনারা যেমন সমস্বরে বলছেন ‘না’। একইভাবে গ্রামের একটা চায়ের দোকানে জিজ্ঞাসা করেন, সেখানেও বলে ‘কই ভোট? আমরা তো কোনো ভোট তো দেখি না।’
“বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ এই সরকারকে, আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। এরপরে বিদেশি লাল কার্ড দেখবে। তখন লাল সুতা বেরিয়ে যাবে। ক্ষমতায় থাকার স্বাদ থাকবে না আপনাদের।”
তখন সব কিছু ‘টক ও তিতা লাগবে’ উল্লেখ করে মান্না বলেন, “মনে করবেন, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।”
এই সরকারের দেশের মানুষের প্রতি কোনো দরদ নাই বলে মন্তব্য করে ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের আহ্বানও জানান নাগরিক ঐক্যের নেতা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে আমি বলি, ভোট দিতে যাবেন না। মনে আত্মবিশ্বাস রাখেন। অনেকগুলো দিন লাগবে না, এই সরকারকে চলে যেতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ রাজনীতি থেকেই নির্বাসিত হবে।”
নির্বাচন অবিলম্বের বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘‘না হলে এই সরকারের পাশাপাশি আপনাদেরকেও একদিন বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে।” তিনি বলেন, ‘‘মানুষ এবার জেগে উঠেছে। এই সরকারকে বিদায় দিয়ে আগামী ৭ তারিখের নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে প্রত্যাখানের মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে রক্ষা করব, জনগণকে রক্ষা করব। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘‘২০১৪ সালের ‘বিনা ভোটের’ নির্বাচন, ২০১৮ সালের ‘ভোট ডাকাতির’ নির্বাচন আর ৭ তারিখে যে ‘ডামি নির্বাচনের’ আয়োজন করেছে, তার জন্য আওয়ামী লীগকে জনগণ বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। “রাজনীতির বিচার, মানুষের আদালতে বিচার ভয়াবহ জিনিস। মানুষের আদালতে যে সমস্ত রাজনৈতিক দল মুখোমুখি হয়েছে তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এই দেশের ইতিহাসে বহু দলের নাম করা যাবে।” ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্ব ও সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজুর সঞ্চালনায় সমাবেশে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সারও বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের হয়। বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণফোরাম-পিপলস পার্টি, এলডিপি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনে ডাকে লিফলেট বিতরণ করে।