ঢাকা ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

৭ কলেজের অচলাবস্থা কাটবে কী করে, মাথায় আসছে না শিক্ষা উপদেষ্টার

  • আপডেট সময় : ০৬:২৮:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ-ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধীন মুক্ত হওয়ার প্রশ্নে সাত কলেজ নিয়ে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা সমাধানের পথ ভেবে পাচ্ছেন না শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

তিনি এও বলেছেন, নিজেদের অধীনে সাত কলেজের ভর্তি এ বছরই বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তার জন্য সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে ঘোষণা দিয়েছে, এটা আমার সাথে আলোচনা করে তো দেয়নি। তাদেরকে (সাত কলেজে) এ বছর থেকেই ভর্তি করা হবে না, এটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ন্যাশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ইনোভেশন ডায়লগ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

গত রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সাত কলেজকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন।

এর অংশ হিসেবে ২০২৪-২৫ সেশন, অর্থাৎ চলতি বছর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম বন্ধের কথা বলা হয়।

চলতি শিক্ষাবর্ষে এসব কলেজে ভর্তি আহ্বান করা হবে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, আমার একার মাথায় তো এই বুদ্ধি এখন আসবে না। এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণার মধ্যে ইউজিসির মাধ্যমে সাত কলেজে ভর্তি নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

ইউজিসি তো বিশ্ববিদ্যালয় না, ইউজিসির ভর্তি করার কোনো ক্ষমতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় হতে গেলে সনদপ্রাপ্ত হতে হয়, এর আগে ভর্তি করানো সম্পূর্ণ বেআইনি।

গত অগাস্টে ক্ষমতায় পালাবদলের পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।

আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা বলে আসছিলেন, অধিভুক্তির কারণে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়হীনতায় ভুগতে হয় তাদের। নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে তারা নানা সমস্যায় পড়েন।

সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোতে আনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, তিন মাস আগেই তিনি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করে- বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমপর্যায় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো তৈরি করার কথা বলেছিলেন।

৭ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করতে গেলে তো অনেক বিচার বিশ্লেষণ করতে হয়, এগুলোতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা আছে। সাধারণ বিশ্বিবদ্যালয়ে এইচএসসি শিক্ষার্থীরা থাকে না। এগুলোর শিক্ষকরা বিসিএস ক্যাডারের। কাজেই অনেকগুলো মডেল বিবেচনায় আছে। এ নিয়ে বড় কমিটি হয়েছে, যেটা ইউজিসির নেতৃত্বে হয়েছে। ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।

তিনি বলেন, এই কলেজগুলোকে সমন্বিত করে একটা নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করলে গেলে, এটা তো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নকল করে হবে না। নতুন মডেল তৈরি করতে হবে, সেটার কাজ চলছে। আইনগত বিষয় আছে, বিধিবিধান আছে- সেগুলো তৈরি করতে হয়। তারপর সনদ নিতে হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল বলেও জানান শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই সমস্যা আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, এখন যে অচলাবস্থা- এটার নিরসন কী করে হবে, এটা একলা আমার মাথায় ঢুকবে না। আবার আলোচনা করব সব পক্ষের সাথে। শিক্ষার্থীদের তো অবহেলা করতে পারি না।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

৭ কলেজের অচলাবস্থা কাটবে কী করে, মাথায় আসছে না শিক্ষা উপদেষ্টার

আপডেট সময় : ০৬:২৮:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধীন মুক্ত হওয়ার প্রশ্নে সাত কলেজ নিয়ে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা সমাধানের পথ ভেবে পাচ্ছেন না শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

তিনি এও বলেছেন, নিজেদের অধীনে সাত কলেজের ভর্তি এ বছরই বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তার জন্য সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে ঘোষণা দিয়েছে, এটা আমার সাথে আলোচনা করে তো দেয়নি। তাদেরকে (সাত কলেজে) এ বছর থেকেই ভর্তি করা হবে না, এটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ন্যাশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ইনোভেশন ডায়লগ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

গত রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সাত কলেজকে মুক্ত করার ঘোষণা দেন।

এর অংশ হিসেবে ২০২৪-২৫ সেশন, অর্থাৎ চলতি বছর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম বন্ধের কথা বলা হয়।

চলতি শিক্ষাবর্ষে এসব কলেজে ভর্তি আহ্বান করা হবে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, আমার একার মাথায় তো এই বুদ্ধি এখন আসবে না। এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণার মধ্যে ইউজিসির মাধ্যমে সাত কলেজে ভর্তি নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

ইউজিসি তো বিশ্ববিদ্যালয় না, ইউজিসির ভর্তি করার কোনো ক্ষমতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় হতে গেলে সনদপ্রাপ্ত হতে হয়, এর আগে ভর্তি করানো সম্পূর্ণ বেআইনি।

গত অগাস্টে ক্ষমতায় পালাবদলের পর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।

আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা বলে আসছিলেন, অধিভুক্তির কারণে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়হীনতায় ভুগতে হয় তাদের। নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে তারা নানা সমস্যায় পড়েন।

সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোতে আনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, তিন মাস আগেই তিনি সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করে- বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমপর্যায় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো তৈরি করার কথা বলেছিলেন।

৭ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করতে গেলে তো অনেক বিচার বিশ্লেষণ করতে হয়, এগুলোতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা আছে। সাধারণ বিশ্বিবদ্যালয়ে এইচএসসি শিক্ষার্থীরা থাকে না। এগুলোর শিক্ষকরা বিসিএস ক্যাডারের। কাজেই অনেকগুলো মডেল বিবেচনায় আছে। এ নিয়ে বড় কমিটি হয়েছে, যেটা ইউজিসির নেতৃত্বে হয়েছে। ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।

তিনি বলেন, এই কলেজগুলোকে সমন্বিত করে একটা নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করলে গেলে, এটা তো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নকল করে হবে না। নতুন মডেল তৈরি করতে হবে, সেটার কাজ চলছে। আইনগত বিষয় আছে, বিধিবিধান আছে- সেগুলো তৈরি করতে হয়। তারপর সনদ নিতে হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল বলেও জানান শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এই সমস্যা আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, এখন যে অচলাবস্থা- এটার নিরসন কী করে হবে, এটা একলা আমার মাথায় ঢুকবে না। আবার আলোচনা করব সব পক্ষের সাথে। শিক্ষার্থীদের তো অবহেলা করতে পারি না।