ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক : অধিকাল ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারীরা
গত বছরের (২০২১ সালের) আগস্ট থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ৬ মাস ধরে অধিকাল ভাতা পাচ্ছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারীরা। বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও তাদের পাওনা ভাতা না পেয়ে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
গতকাল সোমবার দুপুরে প্রধান প্রকৌশলী দপ্তরের সামনে ভুক্তভোগীরা জড়ো হয়ে তাদের পাওনা টাকা আদায়ের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এসময় তারা তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
ঢাবির প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারীরা জানান, টানা ছয় মাস ধরে তারা অধিকাল ভাতা পাচ্ছেন না। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ছুটির দিনেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেকে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে ক্যাম্পাসে এসে দায়িত্ব পালন করেন। এজন্য যাতায়াত বাবদ তাদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়। এরমধ্যে নিয়মিত অধিকাল ভাতা না পেলে তাদের পরিবার নিয়ে চলতে সমস্যা হয়ে যায়।
তারা জানান, অধিকাল ভাতা হিসেবে স্কেল অনুযায়ী একজন কর্মচারী দৈনিক ৪৮৮ টাকা থেকে ৭৮৬ টাকা পেয়ে থাকেন। সে হিসাবে তাদের প্রত্যেকের ৩০ হাজার টাকার বেশি ভাতা আটকে আছে। এ ভাতা তুলতে তাদের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরতে হচ্ছে। তারপরও অধিকাল ভাতা বাবদ কোনো টাকা পাননি তারা।
প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ের অনুপাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন-ভাতা দেওয়া হয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের। যেসব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কর্ম সম্পাদন করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অতিরিক্ত কাজ করানো হয় তাদের জন্য আলাদাভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন-ভাতা রাখতে হয়। যাকে বলা অধিকাল ভাতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগে সার্বক্ষণিক জনবল প্রয়োজন হয়। তাই এ বিভাগের কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করতে হয়। যার জন্য তাদেরকে আলাদা ভাতা দেওয়া হতো। কিন্তু বিগত ছয় মাস ধরে তাদের অতিরিক্ত এ টাকা দেওয়া হচ্ছে না।
ঢাবির প্রকৌশলী দপ্তরের ইলেকট্রনিক কাম প্লাম্বিং কর্মচারী কমল চন্দ্র দেবনাথ জাগো নিউজকে বলেন, করোনাকালীন যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মচারীরা কর্মক্ষেত্রে ছিলেন না তখনও আমরা কাজ করেছি। দূর-দূরান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে গাড়ি ভাড়া বাবদ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। কর্মঘণ্টার অতিরিক্ত সময়ের মজুরি দিয়ে এ বাড়তি খরচ আমরা পুষিয়ে নিতে পারতাম। কিন্তু বিগত ৬ মাস ধরে এ ভাতা দেওয়া হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা যায়, এ বিভাগের কর্মচারীদের টাকা আদায় করে দেওয়ার দায়িত্বে আছেন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম রাসেদুল হাসান মো. আব্দুল খালেক। তবে তার সদিচ্ছার অভাবেই কর্মচারীরা টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম রাসেদুল হাসান মো. আব্দুল খালেক বলেন, তাদের দাবিটা যৌক্তিক কিন্তু আমরা তো কিছু করতে পারছি না। করোনাকালীন কিছু ভাতা বন্ধ করে দেয় সরকার। কিন্তু আমাদের পানি, বিদ্যুতের কাজ তো সবসময়ই করা লাগে। তাই তাদেরকেও সবসময়ই ডিউটি করতে হয়েছে। তাদের দাবি পূরণে আমরা চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার চেষ্টা করছেন। যত দ্রুত সম্ভব তাদের জন্য বাজেটের ব্যবস্থা করা হবে।
৬ মাসের অধিকাল ভাতার দাবিতে ঢাবি কর্মচারীদের বিক্ষোভ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ