নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে বর্তমানে (২০২২) একটি পরিবারের মাসে গড় খরচ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা, ২০১৬ সালে যা ছিল ১৫ হাজার ৭১৫ টাকা। ফলে ৬ বছরের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের নেওয়া নানা কর্মসূচির কারণে দেশে দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষের হার কমেছে। দেশে এখন দরিদ্র জনগোষ্ঠী ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া হতদরিদ্রের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যানে দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ওই বছর হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। ফলে সাত বছরের ব্যবধানে দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী কমেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। একই সময়ে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী কমেছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। পল্লী শহরে দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। দারিদ্র্যের হার নির্ধারণে কাজ করা সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) থেকে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে। গতকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) বিবিএস মিলনায়তনে এ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। ২০১৬ সালের পর এ সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি বিবিএস। সংস্থাটির সর্বশেষ ‘হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (এইচআইইএস) ২০১৬’ প্রকাশ করেছিল।
সারাদেশের ৭২০টি নমুনা এলাকায় এ জরিপ পরিচালিত হয়। প্রতিটি নমুনা এলাকা থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২০টি করে মোট ১৪ হাজার ৪০০ খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। জরিপের প্রশ্নপত্রে মোট ১০টি সেকশন রয়েছে। এ ১০টি সেকশনের তথ্য সংগ্রহের জন্য একজন তথ্য সংগ্রহকারী প্রতিটি খানায় ১০ বার ভিজিট করেন।
জরিপ পরিচালনার সময়কাল: হেইজ ২০২২ জরিপে ১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ সময়ে অর্থাৎ এক বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০১০ সালে প্রতি পরিবারের খরচ ছিল মাত্র ১১ হাজার ২০০ টাকা।
খাদ্যপণ্য কিনতেই যায় আয়ের ৪৫.৮ শতাংশ: একটি পরিবারে যে আয় হয়, তার প্রায় অর্ধেকই চলে যায় খাদ্যপণ্য কিনতে। অর্থাৎ খাদ্যপণ্য কেনায় একটি পরিবারে ব্যয় হয় ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে এই ব্যয় খাদ্যদ্রব্য বহির্ভূত ভোগ্যপণ্য সম্পর্কিত ব্যয়ের থেকে কম। অর্থাৎ খাদ্যদ্রব্য বহির্ভূত ভোগ্যপণ্যের পেছনে খরচ বেড়েছে। এ তথ্য প্রকাশ করেছে দারিদ্র্যের হার নির্ধারণে কাজ করা সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বুধবার (১২ এপ্রিল) বিবিএস মিলনায়তনে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। হাউজহোল্ড ইনকাম এক্সপেন্ডিচার সার্ভের (হেইজ) তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যায়, খানায় খাদ্যদ্রব্য ও খাদ্যদ্রব্য বহির্ভূত ব্যয়ে লক্ষণীয় পরিবর্তন হয়েছে। খানার খাদ্যপণ্য ক্রয় সংক্রান্ত ব্যয়ের তুলনায় খাদ্যদ্রব্য বহির্ভূত ভোগ্যপণ্য সম্পর্কিত ব্যয় বেড়েছে। হেইজের তথ্য-উপাত্তের ধারা বিশ্লেষণে দেখা যায়, খানার খাদ্যপণ্য কেনা সংক্রান্ত ব্যয় ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং খাদ্যদ্রব্য বহির্ভূত ভোগ্যপণ্য সম্পর্কিত ব্যয় ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৬ সালে যা ছিল যথাক্রমে খাদ্যপণ্যে ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ। বর্তমান জরিপের তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, জনপ্রতি দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ ইতিবাচকভাবে বেড়েছে। বর্তমানে জনপ্রতি ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ দৈনিক দুই হাজার ৩৯৩ কিলো ক্যালরি, যা ২০১৬ সালে ছিল দুই হাজার ২১০ কিলো ক্যালরি, আর ২০১০ সালে ছিল দুই হাজার ৩১৮ দশমিক ৩ কিলো ক্যালরি।
৬ বছরে প্রতি পরিবারে খরচ বেড়ে দ্বিগুণ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ